সারাদেশ

বশেমুরবিপ্রবি শিক্ষকের হেনস্তা থেকে মুক্তির জন্য আত্মহত্যা চেষ্টার অভিযোগ বিভাগীয় শিক্ষার্থীর 

বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধি :-
গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের সভাপতি ড. মোহাম্মদ আসলামের হেনস্তা থেকে মুক্তির জন্য আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন জানিয়ে প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন তার বিভাগের ১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মোঃ রিমোন হোসাইন ইমন।
ইতিপূর্বে ঐ শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের বাবা-মা ধরে গালিগালাজ ও শিক্ষার্থীর সাথে খারাপ আচরণের অভিযোগ রয়েছে ।
আজ বুধবার (১১ ডিসেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, প্রক্টর ও ছাত্র উপদেষ্টা বরাবর লিখিত অভিযোগপত্র জমা দেন।
অভিযোগ পত্রে মো: রিমন হোসাইন ইমন বলেন, “খুব দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, আমি আমাদের বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ আসলাম স্যারের দ্বারা নিয়মিত হেনস্তার শিকার হয়ে আসছি। যেমন: মানসিক ভাবে হেনস্তা করা, অপমান করা, ক্লাসে উপেক্ষা করা, সবার সামনে অপমান করা, অযৌক্তিক কথা বলা, বাবা-মা তুলে গালিগালাজ করা, পরীক্ষায় পাস করতে দিবেনা বলে হুমকি দেওয়া, পাশ করে বের হতে দিবে না ও সার্টিফিকেট আটকায় দেওয়া থেকে শুরু করে এমন কোন বিষয় নাই যা দ্বারা উনি আমাকে হেনস্তা করে নাই।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “আমি উনার হেনস্তা সহ্য করতে না পেরে গত ০৮/১২/২০২৪ইং তারিখ আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলাম। আল্লাহর রহমতে এক সিনিয়রের পরামর্শে বেঁচে ফিরেছি। এই হেনস্তার কারনে আমি মানসিক ভাবে খুবই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি এবং আমার পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে।”
সর্বশেষ অভিযোগ পত্রে তিনি উল্লেখ করেন, “আমি বিশ্বাস করি একজন শিক্ষকের দায়িত্ব হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের নৈতিক শিক্ষা দেওয়া এবং উন্নয়নে সহায়তা করা কিন্তু ড. মো: আসলাম স্যার আমার সাথে যে আচারন করছে তা একজন শিক্ষকের জন্য গ্রহন যোগ্য নয়। শুধু আমার সাথেই নয় বিগত দিনে যাদের সাথে খারাপ আচরন করছে তাদের রেকর্ড আমার কাছে আছে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না শুধু পরীক্ষায় ফেল করাবে এই জন্য। আমি আপনার নিকট বিনীত ভাবে অনুরোদ করছি, এই বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে আমকে এই হেনস্তা থেকে মুক্তি দিবেন।”
ইতিপূর্বে তার দ্বারা হেনস্তার শিকার হয়ে তার বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান আত্মহত্যার করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী বলেন, “সে হলো একজন সাইকো ও মানসিক  বিকারগস্ত একজন শিক্ষক। শিক্ষার্থী দূরে থাক, একজন মানুষের সাথে কিভাবে আচরণ করতে হয় তা সে জানে না। একজন শিক্ষক কিভাবে গালিগালাজ করতে পারে? তার আচরণ শুধু আজ এমন না। তার হেনস্থার শিকার হয়ে আমাদের এক বন্ধু আত্মহত্যা করেছেন। একজন শিক্ষার্থী কি পরিমাণ হেনস্তার শিকার হলে আত্মহত্যা করে একবার ভাবেন।”
তিনি আরও বলেন, “তার ভয়ে কোনো শিক্ষার্থী কথা বলতে সাহস পায় না। কথা বললেই ফেল অথবা সার্টিফিকেট আটকিয়ে দেন তিনি। তার অতিবিলম্বে বিচারের মুখোমুখির দাবি জানায়।”
সহকারী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসলাম তার বিরুদ্ধে করা শিক্ষার্থীদের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “তারা যেভাবে বলেছে আমি গালিগালাজ করেছি তা সঠিক নয়। তবে বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা বার বার অপরাধ করার ফলে আমি কিছু কথা বলেছি। তারা অনেক সময় আমার সাথে খারাপ আচরণ করেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তেজিত হয়ে আমি হয়তো কিছু বলেছি।
একজন শিক্ষাকের সাথে তাদের বার বার ফল্ট করলে আমি কিছু বলবো না? একজন যদি বার বার পরীক্ষায় অসৎ অবলম্বন করে তাহলে তাকে এক্স ফেল কেন করা হবে না??”
শিক্ষার্থীদের অপরাধ শাসন করার জন্য হয়তো কিছু কথা বলেছি উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ”আপনি আমার বিষয়ে বিভাগের সব শিক্ষার্থীর কাছে খোঁজ নেন আমি কেমন। শিক্ষার্থীরা বার বার বলার পরো একই ফল্ট করলে আমি কিছু বলতে পারবো না? আমি শিক্ষার্থীদের শাসন করেছি এর বেশী কিছু নয়।”
অভিযোগের বিষয়ে রেজিস্ট্রার মোঃ এনামউজ্জামান বলেন, ” আমি এখনো অভিযোগ পত্রটি দেখিনি। আর এটা আমার কাছে না এসে প্রক্টর বরাবর যাওয়া উচিত। প্রক্টর দপ্তর থেকে শৃঙ্খলা বোর্ডের মাধ্যমে তদন্ত করে সিদ্ধান্তের অনুলিপি আমার কাছে আসবে। আমি সেটা উপাচার্যের কাছে দেওয়ার পর তিনি সিদ্ধান্ত নিবেন এই বিষয়ে।”
এই বিষয়ে প্রক্টর ড. আরিফুজ্জামান রাজীবের বক্তব্যের জন্য কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

Do You Like Your Playing Style? Try New Kill La Kill

There are many variations of passages of Lorem Ipsum available but the majority have suffered alteration in that some injected