শিক্ষাঙ্গন

দায়িত্ব পালনে সাংবাদিককে বাধা দেয়ার অভিযোগ ইবির একাধিক সহ-সমন্বয়কের বিরুদ্ধে

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি:

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দৈনিক বাংলার বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি ও ইবি রিপোর্টার্স ইউনিটির দপ্তর সম্পাদক সাকিব আসলামকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় হেনস্তা ও বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ইবি শাখার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একাধিক সহ-সমন্বয়কের।

বুধবার দিবাগত রাতে ‘জুলাই আন্দোলনের’ প্রেক্ষাপটে ছাত্রলীগের কার্যালয় ভাঙচুরের ঘটনায় আন্দোলনকারীদের ‘দুর্বৃত্ত’ আখ্যা দিয়ে হলে অবস্থান করা সাংবাদিক ওয়াসিফ আল আবরারকে শাহ আজিজুর রহমান হলে মারধরের অভিযোগ ওঠে। আবরার বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিউনিকেশন অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া জার্নালিজম বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।

মারধরের পর আহত সাংবাদিককে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া হলে, সেখানে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাকিব আসলাম হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ করেছেন তিনি।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইবি শাখার সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, ইসমাইল হোসেন রাহাত, তৌহিদ ইসলাম, সায়েম আহমেদ ও শিক্ষার্থী নূর আলমসহ আরও অনেকে।

সাকিব আসলাম বলেন, “আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য মেডিকেলে গিয়েছিলাম। সেখানে উপস্থিত কয়েকজন আমার দিকে তেড়ে আসে, গায়ে হাত তোলে, অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আমাকে হুমকি দেয়। এমনকি মেডিকেল অফিসারের বক্তব্য নিতে বাধা দেয়। তারা বলে, ‘কীভাবে চলবি দেখে নেব।’ এতে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”

তিনি আরও বলেন, “ক্যাম্পাসে প্রক্টর না থাকায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া সম্ভব হয়নি, তবে প্রক্টরের সঙ্গে মৌখিকভাবে কথা বলেছি। তিনি আগামীকাল অভিযোগ গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।”

ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিক সাকিব আসলামকে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক তৌহিদুল ইসলাম বলেন, “তোর নেতৃত্বে এই মারামারি হয়েছে। তোর নেতৃত্বেই হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা হয়েছে। তুই ছাত্রলীগের দোসর।”

মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তারের বক্তব্য নিতে গেলে সহ-সমন্বয়ক ইসমাইল হোসেন রাহাত বলেন, “আপনি ভিতরে ঢুকতে পারবেন না। আমি রাহাত বলছি, আপনি ঢুকতে পারবেন না। ও এখানে আইছে কে?”

এ সময় জার্নালিজম বিভাগের শিক্ষার্থী নূর আলম বলেন, “বের হ তুই, ও লিড দিয়ে মারছে। ওর নেতৃত্বে আবরারকে রুম থেকে বের করা হয়েছে।”

সহ-সমন্বয়ক সায়েম আহমেদ বলেন, “কতো বড় সাহস তুই এখানে আসছিস!”

নাহিদ হাসান সাংবাদিককে উদ্দেশ করে বলেন, “রিপোর্টার্স ইউনিটি কিভাবে থাকে, আমি দেখে নেব। তুই মারার পর ক্যামেরা দেখাস, ওর ক্যামেরা ভেঙে ফেল।”

এ সময় সাংবাদিক সাকিব আসলামকে হেনস্তা ও গায়ে হাত তোলার ভিডিও ফুটেজ প্রতিনিধির কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহ-সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, “জুলাই আন্দোলনে সাকিব আসলামের ভূমিকা খুবই ইতিবাচক ও সন্তোষজনক ছিল। তবে গতকালের ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তিনি শাহ আজিজ হলে উপস্থিত ছিলেন এবং আংশিক নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাই অনেকেই মনে করেছে তিনি মেডিকেলে উপস্থিত হয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা রাখতে পারবেন না। তবে তার ওপর গায়ে হাত তোলার অভিযোগ ভিত্তিহীন।”

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

Uncategorized শিক্ষাঙ্গন

নাজিরপুরে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

পিরোজপুর প্রতিনিধি :বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটি অন্যতম সদস্য, বাংলাদেশ শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের বরিশাল বিভাগীয় সমন্বয়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ
Uncategorized শিক্ষাঙ্গন সারাদেশ

পিরোজপুর ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মতবিনিময়

পিরোজপুর প্রতিনিধি: ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যায়ের উপাচার্যের পিরোজপুরে আগমন উপলক্ষে সংবর্ধনা, আলোচনা ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে পিরোজপুর