বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী তাঁত শিল্প

বোরহান উদ্দিন, কালুখালী, রাজবাড়ী :
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় এক সময়ের প্রাণবন্ত তাঁতশিল্প আজ বিলুপ্তির পথে । তাঁতের খট খট শব্দে মুখরিত থাকতো বোয়ালিয়া ও মৃগী ইউনিয়নের তাঁতপল্লীগুলো । এখন তা নেমে এসেছে হাতে গোনা কয়েক ঘরে। পূর্বপুরুষদের এই ঐতিহ্যবাহী পেশাকে টিকিয়ে রাখতে তাঁতি পরিবারগুলো রীতিমতো সংগ্রাম করছে।
একটা সময় শত শত পরিবারের জীবিকা ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল এই শিল্প। কিন্তু আধুনিক যন্ত্রের দাপট আর নানা প্রতিকূলতার মুখে ঐতিহ্যবাহী এই হস্তশিল্প তার অস্তিত্ব হারাতে বসেছে।
ব্যয়বহুল হাতে তৈরি তাঁতের শাড়ি আজ প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। তাঁতিরা পাচ্ছেন না ন্যায্য মূল্য, নেই সঠিক বিপণন ব্যবস্থা।যন্ত্রের দাপটে হারিয়ে যাচ্ছে এ শিল্প।
লুঙ্গি-গামছা তৈরির সুতা ও কাঁচামালের ক্রমবর্ধমান দাম এবং সরকারি পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এই শিল্পের টিকে থাকাকে আরও কঠিন করে তুলেছে। ফলস্বরূপ, অনেক তাঁতি তাদের পৈতৃক পেশা ছেড়ে বিদেশে পাড়ি জমাচ্ছেন বা অন্য পেশায় নিযুক্ত হচ্ছেন। নতুন প্রজন্মও এই পেশায় কোনো ভবিষ্যৎ বা নিশ্চয়তা না দেখে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে।
কালুখালীর বোয়ালিয়া ইউনিয়নের চরচিলোকা গ্রামের তাঁত শ্রমিক রফিকুল বিশ্বাস বলেন, ” আমার জন্মের পর থেকেই এই কাজ দেখে আসছি,এই কাজ আমার দাদা করতো,আমার বাবা করতো এখন আমিও করি, এই পেশাটা ৩০/৩৫ বছর আগে খুব ভালো চলতো, এখন আর সেরকম চলে না, আগে চারটা গামছা বানালে ১৫০ টাকা ইনকাম হতো, এখন ১০০ টাকা হয়”
এ বিষয়ে কালুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহুয়া আফরোজ কালবেলাকে বলেন,”তাঁত শিল্প বাংলাদেশের সংস্কৃতি ও ইতিহাসের অংশ। কালুখালী উপজেলার মৃগী ও বোয়ালিয়া ইউনিয়নে কিছু লোক এখনও এই পেশার সাথে জড়িত। তাদের সাথে আমরা কথা বলেছি, তাদের কে স্বল্পসুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে কাজ করছি। ঐতিহ্যবাহী এই পেশাকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কালুখালী উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে যা কিছু করা সম্ভব আমরা সেগুলোই করার চেষ্টা করছি। “