টানা বর্ষণে জলাবদ্ধ বেনাপোল কাস্টম হাউস ও স্থলবন্দর, কোটি টাকার পণ্য পানিতে

বেনাপোল প্রতিনিধি
টানা কয়েক দিনের ভারী বর্ষণে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোল কাস্টম হাউস এলাকা ভয়াবহ জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে। এতে কাস্টমস ও বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রমে দেখা দিয়েছে চরম স্থবিরতা। জলাবদ্ধতার কারণে কোটি কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি পণ্য পানিতে ডুবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, কাস্টম হাউসের সামনে, মসজিদ সংলগ্ন এলাকা, খেলার মাঠ এবং বন্দরের ১৬ ও ১৭ নম্বর শেডসহ বহু স্থান হাঁটুসমান পানিতে তলিয়ে গেছে। কাস্টমসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্য হয়ে পানি মাড়িয়ে অফিস করতে হচ্ছে। বন্দরের খোলা আকাশের নিচে রাখা পণ্যসামগ্রী পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কাস্টমস স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান জানান, দীর্ঘদিন ধরে ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংস্কার না করায় এই দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তিনি দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।
হ্যান্ডেলিং শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সহিদ আলী বলেন, সামান্য বৃষ্টিতেই এই এলাকায় জলাবদ্ধতা তৈরি হয়, যা শ্রমিকদের জীবন-জীবিকাকে চরম হুমকির মুখে ফেলছে। সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে শুধু এই জলাবদ্ধতার কারণে।
জানা যায়, বর্তমানে মাত্র একটি সাবমারসিবল মোটরের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের চেষ্টা চলছে। তবে দুর্বল ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে তা যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে না। ফলে কাস্টম হাউসের নিচতলার রুমগুলোতেও পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, “জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য একটি স্থায়ী ও সমন্বিত প্রকল্প ছাড়া সমাধান সম্ভব নয়। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি সংস্থাকে নিজ নিজ উদ্যোগে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিতে হবে।” তিনি আরও জানান, স্থায়ী সমাধানে কমপক্ষে দুই বছর সময় লাগবে।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাজিব হাসান জানান, গত ৯ জুলাই বেনাপোল পৌরসভা, কাস্টম হাউস এবং বন্দরের সম্মিলিত উদ্যোগে জলাবদ্ধতা নিরসনের লক্ষ্যে একটি ছয় সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। বেনাপোল পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাতে কাস্টমস, রেলওয়ে, বন্দর কর্তৃপক্ষ, একজন নির্বাহী প্রকৌশলী এবং স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাও রয়েছেন।
তবে কমিটি গঠনের পরও এখনও পর্যন্ত কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি, যা বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং হাজারো শ্রমিকের জীবনে নেমে এনেছে চরম সংকট।