লিজের টাকা আত্বসাত, নিয়োগ বানিজ্য, অনুদানের টাকা নয়ছয়। সুপারকে শুনানীতে হাজির হওয়ার নির্দেশ

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার শেখবাধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলামকে ৭ কর্ম দিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে এবং স্বশরীরে হাজির হয়ে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিদর্শক (রংপুর) এর কার্যালয়ে শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
দেবীগঞ্জ উপজেলার শেখবাধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলামকে মাদরাসা অধিদপ্তরের পরিদর্শক (রংপুর) শাখা হতে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ১০ এপ্রিল পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে ৭ কর্মদিবসের মধ্যে হাজির হয়ে ব্যাখ্যাসহ শুনানিতে হাজির হতে হবে। সে হিসেবে মাদরাসা অধিদপ্তরে তার স্বশরীরে হাজির হওয়ার শেষ তারিখ ২১ এপ্রিল।
এর অনুলিপি দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
ওই মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানের জমির লিজের টাকা আত্বসাত, সরকারি অনুদানের টাকা যথাযথ ভাবে ব্যবহার না করা, প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নিয়োগের উৎকোচ গ্রহনের আনীত অভিযোগ উঠে। এসব অভিযোগের বিষয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক কর্তৃক সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভি ম্যাজিস্ট্রেটকে সরজমিনে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। এপ্রোদিত সরজমিনে তদন্ত করে প্রতিষ্ঠানের জমির লিজের টাকা আত্বসাত, সরকারি অনুদানের টাকা যথাযথ ভাবে ব্যবহার না করার বিষয়ে তদন্তে প্রমানিত হয়েছে মর্মে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন
সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভি ম্যাজিস্ট্রেট।
পরবর্তীতে আনীত অভিযোগ সমূহ পুনরায় অধিকতর তদন্তের জন্য দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানের জমির লিজের টাকা আত্বসাত করার বিষয়ে একমত পোষন করে তদন্ত প্রতিবেদন মহোদয়ের নিকট জমা দেন ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রেরন করেন। আনীত অভিযোগ সমুহ কার্যত প্রেরিত তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে আপনার এমপিও (বেতন ভাতার সরকারি অংশ) কেন সাময়িক ভাবে বন্ধের ব্যবস্থা করা হবেনা মর্মে ৭দিনের মধ্যে মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগের পরিচালক মুর্শিদা করিমের কার্যালয়ে স্ব শরীরে হাজির ব্যাখ্যাসহ শুনানীর জন্য নির্দেশ ক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
সুপার সাইফুল ইসলামের মোবাইল ফোনে একাধিক বার ফোন দেয়া হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
দেবীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) সাইফুল ইসলাম ব্যাখ্যাসহ শুনানির কাগজ এখ্নো তিনি পাননি বলে জানান।
দেবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান বলেন, তাকে হাজির হতে বললে অবশ্যই হাজির হবে। তবে আমরা কাগজ এখনো হাতে পাইনি।
মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলাম শেখবাধা রেয়াজিয়া দাখিল মাদরাসার সুপার হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকেই মাদরাসায় একক আধিপত্য বিস্তার করেন। প্রতিষ্ঠানের আর্থিক কর্মকান্ডে তিনিই সর্বে শর্বা। কাউকে তোয়াক্কা না করে অনিয়ম ও দূর্নীতির স্বর্গরাজ্য পরিনত করেন মাদরাসাটিকে। তার নিয়ম আর দূর্নীতির প্রতিবাদ করলে তার বিরুদ্ধে নেয়া হতো প্রশাসনিক ব্যবস্থা।
মাদরাসার সুপার সাইফুল ইসলাম চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।