সারাদেশ

ঝিনাইদহ কালীগঞ্জে অনিয়ম চলছে চাপরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।

(স্টাফ রিপোর্টার)
মোঃ হামিদুজ্জামান জলিল।
প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সরকারি হলেও সেটি চলে শিক্ষকদের তৈরি করা  নিজস্ব নিয়মে। বিদ্যালয়টি পরিচালনার ক্ষেত্রে অনেক সময় সরকারি নিয়ম মানা হয় না।  শিক্ষার্থীদের ভর্তি, পরীক্ষার ফি, অনুপস্থিত কিংবা সময় মত উপস্থিত না হওয়ায় জরিমানা  বাবদ নেওয়া হয় টাকা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এ সকল কাজের জন্য কোনো টাকা নেওয়ার নিয়ম না থাকলেও বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তা নিয়মিত করে যাচ্ছেন বলে একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ রয়েছে।তারা আরো অভিযোগ করে বলেন,  স্কুলটির অনেক শিক্ষক আবার নিয়ম না মেনে ছুটি কাটান ,প্রধান শিক্ষকের সুনজরে থাকা শিক্ষক কর্মস্থলে আসেন দেরিতে চলে যান নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই,রোস্টারে সুবিধা পান বেশি। এমনকি স্কুলে উপস্থিত না হয়েও হাজিরা খাতায় পেছনের তারিখে স্বাক্ষর করেন । আবার শিক্ষকরা মিলে স্কুলে নিয়মিত রান্না বান্না করে ভুড়িভোজের আয়োজন করে থাকেন। এসব কারণে এলাকার স্বনামধন্য প্রাথমিক বিদ্যালয়টির লেখাপড়ার পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে। এরকম নানা অনিয়মের  অভিযোগ উপজেলার সরকারি চাপরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়টির শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। বিদ্যালয়টিতে ইতিপূর্বে চার শতাধিকের বেশি শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করলেও বর্তমানে ২৩১ জন শিক্ষার্থী পাঠ গ্রহণ করছে। আর এ সকল শিক্ষার্থীদের পাঠদানের  জন্য ১০ জন শিক্ষক রয়েছেন।এসব শিক্ষকদের মধ্যে ৬ জন নিয়মিত শ্রেণিকক্ষে থাকলেও ৪ জন অফিসে অলস সময় কাটান ।বিদ্যালয়টি নানা অনিয়মে চললেও সে ব্যাপারে খোজ রাখেন না ক্লাস্টারের দায়িত্বরত সহকারী শিক্ষা অফিসার।বিদ্যালয়টির অনিয়মের অভিযোগের প্রমাণাদি ইতিমধ্যে এই প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে। সরেজমিনে বিদ্যালয়টিতে যেয়ে খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়,চলতি বছরে বিদ্যালয়টিতে সর্বমোট ৫১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে প্রাক প্রাথমিক শ্রেণীতে ২১ জন, প্রথম শ্রেণীতে ১৮ জন, দ্বিতীয় শ্রেণীতে ১১ জন, তৃতীয় শ্রেণিতে ২ জন এবং চতুর্থ শ্রেণীতে ২ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যাদের প্রত্যেকের অভিভাবকদের নিকট থেকে ভর্তি বাবদ মিষ্টি খাওয়ার নাম করে নেওয়া হয়েছে টাকা। অনুপস্থিত কিংবা দেরিতে স্কুলে আসলে শিক্ষার্থী প্রতি নেওয়া হয় ২০ টাকা।বিদ্যালয়ে উপস্থিত পঞ্চম শ্রেণীর সকল শিক্ষার্থী জরিমানা আদায়ের কথা প্রতিবেদককে জানায় ।
শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের সময় শিক্ষকদের হাতে বেত দেখা যায়।এসময় বিদ্যালয়টির পুরাতন শৌচাগারে খুব নোংরা অবস্থা চোখে পড়ে । নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভিভাবক বলেন, আমার বাচ্চা ভর্তির সময় স্কুল থেকে ১০০ টাকা নিয়েছিল। চাপরাইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শৈলেন্দ্র নাথ রায় সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, স্কুলে বাচ্চাদের লেখাপড়ার ব্যাপারে আমরা সব সময় যত্নশীল। টাকা নিয়ে ভর্তি কিংবা জরিমানা আদায় এর ব্যাপারে আমার জানা নেয়।শিক্ষক কর্মচারী কারো প্রতি কোন পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গি আমার নেয় বলেও তিনি যোগ করেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান জানান,সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য ফি নেওয়ার বিধান নেয়। পরীক্ষার ফি, দেরিতে আসা কিংবা অনুপস্থিতির জন্যও টাকা নেওয়া যাবেনা। বিদ্যালয়টির বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ রয়েছে তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানান তিনি।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং