রায়পুরে খালে বাঁধ দিয়ে কাটা হচ্ছে ফসলি জমির মাটি, যাচ্ছে ইটভাটায়

মাহমুদ সানি, রায়পুর (লক্ষ্মীপুর):
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে নদীর সংযোগ খালে বাঁধ দিয়ে ভেকু দিয়ে কৃষিজমির উপরি ভাগের মাটি কেটে বিক্রি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে একটি চক্র। অপরদিকে অবৈধ ড্রেজার দিয়ে এসব মাটি দিয়ে ভরাট করা হচ্ছে কোটি কোটি টাকার জায়গা, সরবরাহ করা হচ্ছে বিভিন্ন ইটভাটায় ও নীচু জমি। এতে জমির উর্বরতা শক্তি নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্যও হুমকির মুখে পড়েছে।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী, কৃষিজমির মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ।
জানা যায়, পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১২-এর ৬ ধারায়) অনুযায়ী, প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট টিলা ও পাহাড় নিধন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। অন্যদিকে ১৯৮৯ সালের ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইন (সংশোধিত ২০০১) অনুযায়ী, কৃষিজমির টপ সয়েল বা উপরিভাগের মাটি কেটে শ্রেণি পরিবর্তন করাও সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ রয়েছে। দুই আইনে শাস্তির বিধান একই রকম। এসব কাজে জড়িত ব্যক্তিদের দুই লাখ টাকার জরিমানা ও দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। একই কাজ দ্বিতীয়বার করলে দায়ী ব্যক্তির ১০ লাখ টাকা জরিমানা ও ১০ বছরের কারাদণ্ড হবে। এ ক্ষেত্রে এ কাজের সঙ্গে জড়িত জমি ও ইটভাটার মালিক উভয়ের জন্যই সমান শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে।।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউপির চরইন্দ্রুরিয়া গ্রামের আলতাফ মাস্টারের মাছঘাটে যাওয়ার পথে ব্রীজের পাশে মেঘনা নদী সংযোগ খালে বাঁধ দিয়ে চরে কৃষিজমিতে এক্সকাভেটর মেশিন দিয়ে মাটি কেটে সরবরাহ হচ্ছে নিকটবর্তী ইটভাটায়।
তবে জমির মালিক আবু দেওয়ান বলেন, আমার জমি থেকেই কৃষি জমির মাটি মন্তাজ ব্রীকসের জন্য বিক্রি করা হয়েছে। তাই ভেকু মেশিন দিয়ে খালের পাড়ে ইটের কংকর দিয়ে রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে। এতে কার কি সমস্যা আমি তো বুঝতে পারছিনা।
পরিবেশ আইন অনুযায়ী কৃষিজমি ও টিলার মাটি কাটা দণ্ডনীয় অপরাধ হলেও স্থানীয় তহশীলদারদের সহযোগিতায় মাটি কাটা হচ্ছে বলে কয়েকজন গ্রামবাসী জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তাহমিনা আক্তার বলেন, কৃষিজমির টপ সয়েল কেটে নেওয়ার ফলে ফলন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হয়। এভাবে মাটি কাটা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জমি চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
রায়পুর উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি শাহেদ আরমান বলেন, ‘সোমবার রাতে ফসলি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় আনার অপরাধে চরকাছিয়া গ্রামের একটি ইটভাটার মালিককে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। এবিষয়ে সংবাদ পেলেই খোঁজখবর নিয়েব্যবস্থা গ্রহণ হচ্ছে।