চিরিরবন্দরে আলুর বাম্পার ফলনে খুশি কৃষক।

জেলা প্রতিনিধি দিনাজপুর.

দিনাজপুর চিরিরবন্দরে আগাম জাতের আলু তুলতে শুরু করেছেন আলু চাষিরা। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলন ও বাজারদর ভালো পাওয়ায় আগাম জাতে আলু চাষ করে লাভের মুখ দেখছেন কৃষকেরা। পাইকাররা জমি থেকে প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকা দরে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর জেলায় ৪৭ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে। এর মধ্যে আগাম জাতের আলু চাষ হয়েছে ১১ হাজার হেক্টর জমিতে। এবার প্রতিহেক্টরে ফলন হয়েছে ১০-১২ মেট্রিক টন।

চিরিরবন্দর উপজেলার ইসবপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ নগর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, লাভের আশায় এক বিঘা জমিতে সাত জাতের আলু লাগিয়েছি। জমি থেকেই পাইকাররা আলু প্রতিকেজি ৫০থেকে ৫৬ টাকা দরে নিয়ে যাচ্ছেন।

উপজেলার ফতেজংপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ শাকিল আহমেদ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে লাভের আশায় ২ বিঘা জমিতে ২ জাতের আলু লাগিয়েছি। তবে আর ১০দিন আগে আলু তুলতে পারলে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি করতে পারতাম। আমার জমি থেকে পাইকাররা প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকা দরে নিয়ে যাচ্ছেন। ফলন ভালো হওয়ায় এ দামে আলু বিক্রি করেও ভালোই লাভ হচ্ছে।

উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের কৃষক মোঃ জাকারিয়া হোসেন বলেন, ৫ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ৪ জাতের আলু চাষ করেছি। আমি প্রতিকেজি আলু ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। আগাম আলুর ফলন গতবছরের তুলনায় বেশি ও দাম ভালো পাওয়ায় লাভ বেশি হয়েছে।

উপজেলার নশরতপুর ইউনিয়নের কৃষক মোঃ মোক্তার হোসেন বলেন, এক বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু লাগিয়েছি। আলু বীজের দাম বেশি থাকায় এক বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আলু বিক্রি হবে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। বীজের দামটা কম থাকলে আরও বেশি লাভ হতো।

উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ জোহরা সুলতানা বলেন, চলতি মৌসুমে উপজেলায় এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন আগাম জাতের আলুর চাষ হয়েছে। ইতিমধ্যে সেভেন, স্ট্যারিক্স জাতের আলু উত্তোলন শুরু করেছেন কৃষকেরা। কৃষকেরা আগাম জাতের আলু ৬৫-৭০ দিনের মধ্যে তুলতে পারেন। সাধারণত হেক্টর প্রতি আগাম জাতের আলুর ফলন ১০-১২ মেট্রিক টন। তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকেরা যে আলু তুলছেন সেখানে আমরা দেখছি হেক্টর প্রতি ১২-১৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত আলু উৎপাদন হয়েছে। কৃষকেরা বর্তমানে প্রতিকেজি আলু ৫০-৬০ টাকা দরে পাইকারি বিক্রি করছেন। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়েও তারা ভালো লাভ পাচ্ছেন।