আদমদীঘিতে মসজিদ কমিটির সভাপতিকে হত্যা চেষ্টা, অভিযোগ বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে

আবু বকর সিদ্দিক বক্করঃ আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি:
বগুড়ার আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের ডহরপুর গ্রামের পীরপাল মসজিদ কমিটির সভাপতিকে শ্বাসরোধ করে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু হাসানের বিরুদ্ধে ।
এ ঘটনায় গত শনিবার মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে আদমদীঘি থানায় আবু হাসান, ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাওনসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে একটি এজাহার দায়ের করেন।
ঘটনার দুইদিন পার হয়ে গেলেও আইনগত কোনো পদক্ষেপ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মসজিদ কমিটির লোকজন। গত শুক্র বার জুমার নামাজের দিনে আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডহরপুর গ্রামের পূর্বপাড়া মহল্লার পীরপাল মসজিদের ভেতরে ঘটনাটি ঘটে।
এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আদমদীঘি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ডহরপুর গ্রামের পূর্ব পাড়া মহল্লার পীরপাল মসজিদ কমিটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দু’পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। চলতি বছরের গত ১৬ মার্চ আব্দুল হামিদকে সভাপতি নিযুক্ত করে আদালত রায় দেন। পদাধীকার বলে তিনি মসজিদের পরিচালনা করবেন। এরই ধারাবাহিকতায় চলতি মাসের ২০ তারিখ শুক্রবার জুমার দিন মসজিদে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর গত (২৭ জুন) শুক্রবার জুমার নামাজের দিনে মসজিদের ভিতরে কমিটির হিসাব নিকাশ নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান ও তার তিন ছেলেসহ আরো কয়েক জন দলবদ্ধ ভাবে কমিটির লোকজনের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা কাটাকাটি শুরর হলে এক পর্যায়ে আবু হাসান মসজিদের সভাপতি আব্দুল হামিদকে দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে শ্বাসরোধ করার চেষ্টা করে। তাকে রক্ষা করতে মসজিদের মুসল্লী জাহিদুল এগিয়ে আসলে আবু হাসানের দ্বিতীয় ছেলে নাস্তাইনের কাছে থাকা চাকু দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে বুকে আঘাত করে। তখন জাহিদুল হাত এগিয়ে দিলে তার হাতে গুরুতর জখম হয়। এতে তার শরীর থেকে প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকলে তাকে প্রথমে আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ সময় আবু হাসানের লোকজন শফিকুলের চাকু দিয়ে মুসল্লী লোকমান আলীকে মাথায় আঘাত করতে গেলে ডান হাত দিয়ে ঠেঁকালে হাতের আঙুল কেটে গুরুতর আহত হন। এরপর আবু হাসানের লোকজনের সঙ্গে মসজিদ কমিটির লোকজনের বেধড়ক মারপিট শুরু হয়। এতে করে অনেকেই গুরুতর আহত হন। পরে তাদের আহত অবস্থায় আদমদীঘি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে সভাপতি আব্দুল হামিদ বাদী হয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান, তার ছেলে ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাওন, নাস্তাইন আদমদীঘি সদর ইউনিয়নের এক নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোফাজ্জল, ওয়ার্ড আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক উজ্জলসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় এজাহার দায়ের করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান বলেন, ঘটনাটি এমন নয়। এই মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন উপজেলা আ’লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম খান রাজু। তিনি এলাকায় না থাকায় আব্দুল হামিদ দায়িত্ব নিয়ে আছে। গত ১৭ বছর সে কোনো মসজিদেরই হিসাব দিতে পারেনি। এই বিষয়ে মুসল্লীদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তাকে মারতে গেলে আমার ছেলেই বাঁচিয়েছে। রক্তপাতের বিষয়ে তিনি বলেন, অনেক লোকজনের ভীরে জানালা লেগে হয়তো হাত কেটে গিয়েছে। এ ঘটনায় উদ্দেশ্য প্রণোদিত ভাবে আমাকে এবং আমার ছেলেদের জড়ানো হচ্ছে।
আদমদীঘি থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ ঘটনায় একটি লিখিত এজাহার দিয়েছেন মসজিদ কমিটির সভাপতি আব্দুল হামিদ। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।