পাবনায় সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে বেড়াবাসীর বিক্ষোভ

সাব্বির আহমেদ, স্টাফ রিপোর্টার পাবনা
পাবনা-১ ও পাবনা-২ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে এবং আগের সীমানা পুনর্বহালের দাবিতে বেড়া উপজেলার বাসিন্দাদের আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আজ রোববার দুপুরে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করে স্মারকলিপি দিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা।
নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী দুপুর ১২টার দিকে বেড়া থেকে বাস নিয়ে কয়েক শ মানুষ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে আসেন। এরপর তাঁরা কার্যালয়ের মূল ফটকে বিক্ষোভ শুরু করেন। ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভের পর বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে দাবির পক্ষে স্মারকলিপি দেন। এরপর বেলা একটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা মিছিল নিয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে যান। সেখানে একইভাবে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
দীর্ঘদিন ধরে বেড়ার একাংশ ও সাঁথিয়া উপজেলা নিয়ে পাবনা-১ আসন এবং বেড়া অপর অংশ ও সুজানগর উপজেলা নিয়ে পাবনা-২ নির্বাচনী আসন ছিল। সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের গেজেটে সাঁথিয়াকে এককভাবে পাবনা-১ এবং বেড়া ও সুজানগরকে মিলিয়ে পাবনা-২ আসন করার সিদ্ধান্ত হয়। এর প্রতিবাদে এবং আগের আসন পুনর্বহালের দাবিতে বেড়া উপজেলাবাসী সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি গঠন করে টানা আন্দোলনের ঘোষণা দেন। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আগে ৭ সেপ্টেম্বর স্থানীয় বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একই দাবিতে ১৪ সেপ্টেম্বর উপজেলার সড়ক ও নৌপথ বন্ধ করে হরতাল পালন করা হয়।
বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা বলছেন, নতুন করে সীমানা নির্ধারণের ফলে বেড়া উপজেলার মানুষ বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন। তাঁরা বলছেন, দাবি আদায়ে তাঁরা মাঠে নামতে বাধ্য হয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
উপজেলাবাসীর এই আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন ইকবাল বলেন, ‘বেড়া উপজেলা দীর্ঘদিন ধরে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকারের একজন মন্ত্রীর পরিবারের কাছে জিম্মি হয়ে ছিল। উপজেলায় শুধু লুটপাট হয়েছে, কোনো উন্নয়ন হয়নি। বেড়াকে সাঁথিয়া থেকে বাদ দিলে উপজেলাবাসী আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ফলে আমরা ঘোষিত প্রজ্ঞাপন বাতিল করে সীমানা পুনর্বহালের বাদি করছি।
দাবি আদায়ে গঠিত সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফজলুর রহমান ফকির বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের কারণে বেড়া থেকে সাথিঁয়াকে আলাদা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন এলাকার ভৌগোলিক বিষয় না দেখে না বুঝে এই সিদ্ধান্ত দিয়েছে। সামাজিকতা, ব্যবসা, রাজনীতি—সবকিছু আমাদের এক। আমরা এই অন্যায় আসনবিন্যাস মানি না। অবিলম্বে আসন পুনর্বহালের দাবি করি।
এ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্মারকলিপি পেয়েছি। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনকে জানানো হবে। আশা করছি, কমিশন বিষয়টি বিবেচনা করবে।