সিরাজগঞ্জে যমুনার তীব্র ভাঙনে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি-ফসল জমি

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ.
সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার শোনগাছা/ খোকসাবাড়ী ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকায় অসময়ে নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণের ফলে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। সেইসাথে বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙনও শুরু হয়েছে। যমুনার তীর এলাকা ভাটপিয়ারি সংরক্ষণ বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এতে যমুনা পার মানুষের মধ্যে এখন আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, কয়েকদিন ধরে পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে যমুনার তীরবর্তী সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, কাজিপুর ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার যমুনার অভ্যন্তরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে এবং এ বর্ষণে আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। বিশেষ করে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ব্রাম্মনবয়ড়া থেকে পাঁচঠাকুরি পর্যন্ত প্রায় ৩ কিলোমিটার জুড়ে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যেই যমুনার তীর সংরক্ষণ ভাটপিয়ারি বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া অনেক স্থানে ভাঙনও দেখা দিয়েছে। এতে ফসলি জমিসহ বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করছে।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত ভাটপিয়ারি গ্রামের বাসিন্দারা জানান, প্রায় ২ মাস ধরে ব্রাম্মনবয়ড়া, ভাটপিয়ারি ও পাঁচঠাকুরিসহ বিভিন্ন স্থানে এ ভাঙন শুরু হয়েছে। তখন এ ভাঙন ঠেকাতে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড তেমন ব্যবস্থা নেয়নি। কয়েক সপ্তাহ ধরে দফায় দফায় বর্ষণ ও উজানের ঢলে যমুনার পানি ক্রমাগতভাবে বাড়ছে। বিশেষ করে গত সপ্তাহ থেকে যমুনা নদীর পানি বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিভিন্ন স্থানে এ ভাঙ্গনের প্রভাবও বাড়ছে এবং বৃহস্পতিবার রাতে যমুনা নদীর তীর সংরক্ষণ ভাটপিয়ারি বাঁধের প্রায় ৫০ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এতে যমুনা পাড়ের মানুষের মধ্যে এখন আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
তারা আক্ষেপ করে আরো বলেন, ভাঙন ঠেকাতে সরকার কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে ভাঙন ঠেকাতে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করা যায়? তারা এখানে একটা স্থায়ীবাদ নির্মাণের দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) নাজমুল হোসাইন বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বর্ষণে যমুনা নদীতে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে যমুনার অভ্যন্তরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভাটপিয়ারি, পাঁচঠাকুরি ও ব্রাম্মনবয়ড়া জুড়ে ভয়াবহ ভাঙন ঠেকাতে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে এবং সেখানে বালু ভর্তি জিও দিনরাত নিক্ষেপ করা হচ্ছে। বর্তমানে এ ভয়াবহ ভাঙন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।