জীবিকার সহয়তা পেল বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে চোখ হারানো সাইদুল

আসাদুল্লাহ হাসান মুসা,পটুয়াখালী জেলা প্রতিনিধিঃ- জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে গুলির স্পিল্টারে চোখের আলো হারিয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েন পটুয়াখালীর দশমিনার যুবক সাইদুল (২৫)। ঢাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করলেও দুর্ঘটনার পর স্ত্রী পান্না আক্তার আর দেড় বছরের একমাত্র কন্যা সুমাইয়াকে নিয়ে চলে আসেন বাঁশবাড়িয়া গ্রামের পৈত্রিক ভিটায়। কর্মক্ষমতা না থাকায় স্ত্রী পান্না আক্তার একমাত্র কন্যাকেও তাকে তালাক দিয়ে চলে যান। জীবন সংগ্রামে বিপর্যস্ত সাইদুলকে তার জীবিকা নির্বাহের জন্য ঢাকার কয়েকজন হৃদয়বান ব্যক্তি তাকে একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা উপহার দিয়েছেন। আজ রবিবার বেলা ১১ টার দিকে পটুয়াখালী প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও দি ডেইলি স্টারের পটুয়াখালী প্রতিনিধি সাইদুলের হাতে এ রিক্সা তুলে দেন।
সম্প্রতি সাইদুলের বিপর্যস্ত জীবন নিয়ে দি ডেইলি স্টার একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করলে ঢাকার এক হৃদয়বান পাঠকের দৃষ্টিতে পড়ে। তিনি ইক্ত সাংবাদিকের মাধ্যমে সাইদুলের সাথে যোগাযাগে করেন এবং সাইদুলের চাহিদা অনুযায়ী একটি ব্যাটারি চালিত রিক্সা উপহার দেন।
রিক্সাটি গ্রহন করে সাইদুল বলেন, আমি কৃতজ্ঞ। আমার দুঃসময়ে যারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন তাদের প্রতি শুভকমনা। এখন আমি রিক্সাটির মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবো। সমাজের হৃদয়বান এসব মানুষের জন্য আজও মানবতা টিকে আছে।
সাইদুল বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ মৃধার ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সাইদুল সবার বড়। অভাবের সংসারে বেশিদূর পড়াশুনা না করতে পারা সাইদুল ঢাকায় ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। শরীরে অসংখ্য স্পিল্টারের অসহ্য ব্যাথা আর চোখ হারিয়ে চিকিৎসাবিহীন দিন কাটছে বেকার যুবক সাইদুলের।
সাইদুল জানান, আমার দুঃসময় দেখে স্ত্রী পান্না আক্তার তাকে তালাক দিয়ে দেড় বছরের একমাত্র মেয়ে সুমাইয়াকে নিয়ে চলে গেছেন।
তিনি জানান, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনে সামিল হন তিনি। ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে আন্দোলনের সময় চোখে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে প্রায় অর্ধশতাধিক স্পিল্টার বিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। ওই সময় আন্দোলনে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও জনতা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে এক সপ্তাহ ভর্তি থাকার সময় তার চোখ থেকে স্পিল্টার বের করা হয়। পরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালেও ভর্তি হয়ে এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন নেন তিনি। সেখানে তার চোখে অপারেশন করা হয়। স্পিল্টারের আঘাতে তার বাম চোখ সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।