কারাগারে রহস্যজনক মৃত্যু হাজতির,কর্তৃপক্ষ দাবী মারমারি
ফারিয়াজ ফাহিম
জামালপুর
জামালপুর জেলা কারাগারে হযরত আলী (২৫) নামের হাজতির রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে । শুক্রবার (২৮ নভেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান হাজতি হযরত। তিনি দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চেংটিমারি গ্রামের মো. ইমান হোসেনের ছেলে।
জেলা কারাগার কর্তৃপক্ষের দাবী, বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে কারাগারের ভেতরে কাশি ও থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে পাগলা হযরতের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ও তর্কাতর্কি শুরু হয় রহিদুর মিয়ার। এক পর্যায়ে রহিদুর মিয়া শৌচাগারের দরজার একটি কাঠের টুকরা দিয়ে পাগলা হযরতের মাথায় পরপর বেশ কয়েকবার আঘাত করে। পরে দায়িত্বরত কারারক্ষী ও অন্যান্য হাজতিরা আহত মো. পাগলা হযরতকে উদ্ধার করে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করে।
এদিকে খোজ নিয়ে জানা যায়, জামালপুর জেলা কারাগারে ব্রক্ষপুত্র ৪ টি, এমডি ১ টি, মেডিকেল ১ টি, রজনীগন্ধা ১ টি, যমুনা ওয়ার্ড ১ টি ও আমদানী ওয়ার্ড রয়েছে ১ টি। সকাল থেকে শুরু করে হাজতী কিংবা কয়েদীরা সন্ধ্যা পর্যন্ত কেউ ওয়ার্ডের সৌচাগারে প্রবেশ করে ব্যবহার করতে পারে না। কেননা ব্রক্ষপুত্র ৪ ওয়ার্ডের মাঝামাঝি ৩ টি শৌচাগার রয়েছে সেখানে প্লাষ্টিকের দরজা তো দুরের কথ কাঠের কোন দরজা নেই। হাজতী কিংবা কয়েদীরা তাদের পড়নের লুঙ্গি ছিড়ে শৌচাগারের পর্দা বানিয়েছে। অন্যদিকে যমুনা ওয়ার্ডের পাশে যে শৌচাগার রয়েছে সেখানে কাঠের দরজা থাকলেও কাঠের কোন টুকরা থাকে না। কোন ওয়ার্ডে শৌচাগার দিনের বেলায় কেউ ভুলে একবার ব্যবহার করলেও তাকে ওয়ার্ডের রাইটার অশ্লীল গালিগালাজ করে পাঠিয়ে দেয় কেস টেবিলে। আর কেস টেবিলে শাস্তি স্বরুপ করা হয় নির্যাতন। গত অক্টোবর মাসে জেলা কারাগারে ৫/৬ জন পাগলদের দেখাশুনা করার জন্য কয়েদি(সেবক) নিয়োগ প্রদান করে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে স্থানীয় সচেতন মহলের প্রশ্ন উঠেছে, কারাগারের ভেতরে কাশি ও থুথু ফেলাকে কেন্দ্র করে যদি হাজতীদের মধ্যে মারামারি হয়ে থাকে তাহলে সেই সিসিটিভির ফুটেজ জনসম্মুখে উপস্থাপন করা হোক। এমনও হতে পারে কারা রক্ষীদের নির্যাতনে মারা যায় হযরত আলী। সেটা লুকানোর জন্যই দাবী করা হয়েছে মারামারি।
এ বিষয়ে জামালপুর জেলা কারাগারের জেলার লিপি রানী সাহাকে শুক্রবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে কল দেওয়া হলে রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।।



