জামালপুরে জুলাই স্মৃতি অনুষ্ঠানে উপস্থিত আওয়ামী লীগ নেতা বাবু

প্রতিনিধি
জামালপুর
জামালপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও জুলাই বিপ্লব ছাত্রদের আয়োজনে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মৃতিতে তারুন্যের উৎসব-২৫ হাডুডু সেমিফাইনাল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও উপজেলা প্রশাসনকে এক কাতারে দেখা গেছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। মঞ্চে থাকা ওই আওয়ামী লীগ নেতা বলছেন, তিনি ৫ আগস্টের অনেক আগেই দলটি থেকে পদত্যাগ করেছেন।
গতকাল (মঙ্গলবার)১১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দুয়া মাঠে এই তারুণ্যের উৎসব হাডুডু খেলায় উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকি। একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন মিলন। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলী সদস্য নাজমুল হক বাবু।
স্থানীয়, এলাকাবাসীর অভিযোগ জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের স্মৃতিচারণ করেছেন ছাত্র-জনতার উপর হামলাকারী চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবু। যিনি জুলাই আগস্ট বিপ্লবে জামালপুর সদর উপজেলার হাসিল বটতলাতে বৈষম্য বিরোধে ছাত্র-জনতারদের উপর হামলার নির্দেশ দাতা। তার নির্দেশেই নেতা কর্মী সমর্থকরা বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের উপর হামলা চালিয়েছিল। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের অভিযোগ এভাবেই দিন দিন জুলাই আগস্ট বিপ্লব ভুলন্ঠিত করার মস্ত বড় ষড়যন্ত্র চলছে।
গণমাধ্যমকে, জামালপুর সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি রুহুল আমিন মিলন বলেন, ‘আমি ওই অনুষ্ঠানের কোনো অতিথি না। আমার এলাকা তাই সেখানে গিয়েছিলাম। এখন কে, কোথায়, কার সাথে বসবে, এটা তো আমি জানি না। অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে উপজেলা প্রশাসন।’
তিনি আরও বলেন ‘আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আমি মোট ৪০টি মামলার আসামি হয়েছিলাম, জেল খেটেছি। ১৬টি বছর বাড়িতে থাকতে পারিনি। তাই এখানে আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করার কোনো সুযোগ নেই।’
এদিকে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল হক বাবু মোবাইলে বলেন, ‘আমি স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হয়েছি। জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য পদে আমাকে রাখা হয়েছিল। আমি তখন জানতাম না। জানার পরপরই আমি সেই সময়ে এই পদ প্রত্যাহার করে চিঠি দিয়েছিলাম। এছাড়াও ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আমার এলাকায় যারা মামলার শিকার হয়েছিল, আমার পকেটের টাকা খরচ করে জামিনের জন্য ৫ আগস্টের আগেই তাদেরকে উচ্চ আদালতে পাঠিয়েছিলাম। নিম্ন আদালতেও আসামি হওয়া ছাত্রদের জন্য আমি শ্রম, সময়, অর্থ ব্যয় করেছি। ৫ আগস্টের পর এখনও আমি এলাকাতেই আছি। শুধু মাত্র আমি এলাকার মানুষের জন্য কাজ করেছি আর জনগণ আমাকে ভালোবাসে বলে। একটি পক্ষ আমার ক্ষতি করার জন্য ষড়যন্ত্র করে আমার নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার করছে।’
ইতিমধ্যে নাজমুল হক বাবুর অনুষ্ঠানে বক্তব্যের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। সেখানে বাবুকে বলতে শোনা যায়, বিএনপির নেতা মিলনকে আগামীতে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চান তিনি।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকি গণমাধ্যমকে বলেন নাজমুল হক বাবু এর উপস্থিতির বিষয়ে আমার জানা নেই। তিনি আরো বলেন উনি হয়তো ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন।।