নওগাঁয় শীতার্তদের কাছেগিয়ে শীতবস্ত্র দিচ্ছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল

সাইফুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধি :
টানা ৪দিন পর নওগাঁয় শনিবার ২৫জানুয়ারী সকাল থেকেই নিরুত্তাপ সূর্যের দেখা মিলেছে। নিরুত্তাপ সূর্যের দেখা মিললেও কমছে না কনকনে হাড় কাঁপানো শীতের তীব্রতা। দিনের বেলায় নিরুত্তাপ সূর্য অস্ত যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে জেঁকে বসছে কনকনে শীত। চলতি শীত মৌসুমে নওগাঁ ও তার আশে পাশের অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র শীতের দাপট। কখনো মৃদু শৈত প্রবাহ আবার কখনো তীব্র শৈত প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি উত্তরের হিমেল হাওয়া শীতের সেই তীব্রতাকে আরো বাড়িয়েছে কয়েকগুন। নওগাঁর বদলগাছী কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, শীত মৌসুমে নওগাঁর তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। শনিবার ২৫জানুয়ারী সকাল ৯টায় নওগাঁর সর্বনিম্ম তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছে ১০.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পুরো জানুয়ারী মাস জুড়েই শীতের এমন তীব্রতা অব্যাহত থাকতে পারে বলে তিনি জানিয়েছেন।
চলমান শীতের এমন তীব্রতায় নাজেহাল হয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকার শীতার্ত অসহায়, দু:স্থ, ছিন্নমূল ও ভবঘুরে সহ খেটে-খাওয়া শ্রেণির নিম্ম আয়ের মানুষরা। এছাড়াও বিভিন্ন শিশু সদন-এতিমখানার শিক্ষার্থী, হরিজন ও বেদে পল্লীর বাসিন্দারাও শীতে কাহিল হয়ে পড়েছেন। শীতে যেন জেলার শীতার্ত মানুষরা কষ্ট না পায় তার জন্য সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়েছে। নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল নিজে বিভিন্ন শিশু সদন-এতিমখানায় গিয়ে শীতবস্ত্র পৌছে দিচ্ছেন। এছাড়া হরিজন পল্লী, বেদে পল্লী, হিজড়া সম্প্রদায়ের মানুষদের মাঝে এবং শ্রমজীবী মানুষদের মাঝেও শীতবস্ত্র বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক। জেলা প্রশাসক সময় পেলেই গাড়িতে করে শীতবস্ত্র নিয়ে ছুটছেন শীতার্ত মানুষদের কাছে। সেখানেই শীতার্ত মানুষের সন্ধান পাচ্ছেন সেখানেই সরকারের উপহার শীতবস্ত্র তুলে দিচ্ছেন মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল। এছাড়া এবারই প্রথম জেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীতার্ত শিক্ষার্থীদের মাঝেও শীতবস্ত্র বিতরণ করা হচ্ছে।
নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল জানান, প্রতি বছরই শীতের তীব্রতায় জবুথবু অবস্থায় থাকে উত্তর বঙ্গের সীমান্তবর্তি জেলা নওগাঁর শীতার্ত মানুষরা। চলতি শীত মৌসুমে জেলার বিভিন্ন এলাকার দু:স্থ, অসহায়, ছিন্নমূল, ভবঘুরে, হিজড়া, শ্রমজীবী মানুষসহ শিশুসদন-এতিমখানা, হরিজন ও বেদে পল্লীর শীতার্তদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই সরকারের পক্ষ থেকে ২০ হাজারের অধিক শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল বিতরণ সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া জেলার ১১টি উপজেলা ও ৩টি পৌরসভার জন্য ৬৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়েছে যে অর্থ দিয়ে স্ব স্ব উপজেলার নির্বাহী অফিসারগন শীতবস্ত্র হিসেবে কম্বল ক্রয় করে শীতার্ত মানুষদের মাঝে বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। এছাড়াও মন্ত্রণালয় বরাবর আরো চাহিদা পাঠানো হয়েছে। আমি আশাবাদি জেলার কোন শীতার্ত মানুষকেই গরম কাপড়ের অভাবে শীতে কষ্ট করতে হবে না। যতদিন শীতের এই প্রকোপ অব্যাহত থাকবে ততদিন শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।