পলাশবাড়ীতে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি অভিযোগ সার ডিলারদের বিরুদ্ধে।
বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :
গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার মহদীপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি ও বিএডিসি সার ডিলার ববি সাহার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
টিএসপি, ডিএফপি সার বেশি দামে কালোবাজারে বিক্রি,স্বেচ্ছাচারিতা, চাহিদা অনুযায়ী সার না দিয়ে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে অধিক দাম হাঁকানো, বেশিরভাগ সময় দোকান বন্ধ রাখা, সাব সেন্টার করে কৃষকদের হয়রানি, কৃষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে ডিলার ববি সাহাসহ একাধিক ডিলারের বিরুদ্ধে।
তদন্ত সাপেক্ষে ডিলার ববি সাহাসহ অন্যান্য ডিলারদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন কৃষকরা।
জানা গেছে,পলাশবাড়ী উপজেলর মহদীপুর ইউনিয়নের বিসিআইসি সার ডিলার মেসার্স রাম চন্দ্র সাহা প্রোপ্রাইটার স্বগীয় চন্দন সাহা।চন্দন সাহার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী ববি সাহার নামে ২০২২ সালে লাইসেন্স স্থানান্তর করা হয়। তার প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা মুলত ঠুঠিয়াপাকুর বাজারে হওয়ার কথা থাকলেও পলাশবাড়ী কালীবাড়ী বাজারে রয়েছে তার অপর একটি গুদাম বা প্রতিষ্ঠান। মূলত মহদীপুর ইউনিয়নের জন্য তার ডিলার নিবন্ধন নির্ধারিত।তিনি সেই ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠান না রেখে ঠুঠিয়া পাকুর বাজারের সাব সেন্টার কালীবাড়ি বাজার থেকে সার বিক্রি করে থাকেন।
আবার মহদীপুর ইউনিয়নের সাব সেন্টারটি অনিয়মিতভাবে পরিচালনা করেন মেসার্স রাম চন্দ্র সাহা ম্যানেজার আসাদুজ্জামান টুটুল।মুলত তিনিই কালোবাজারে এসব সার বিক্রি করে থাকেন।
মহদীপুর ইউনিয়নের বিষ্ণপুর,
দূর্গাপুর,মহদীপুর গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে কৃষক বাবু মিয়া,কাশেম আলী, হযরত আলী,শামিম মিয়া ও শাফি মিয়ার সাথে কথা বললে তারা সার ডিলারের স্বেচ্ছাচারিতা, চাহিদা অনুযায়ী সার না পাওয়া, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে অধিক দাম নেয়া, সার বিক্রির রশিদ বা ক্যাশ মেমো না দেয়া,বেশিরভাগ সময় দোকান খুলে না রাখা, কৃষকদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণ করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন।
কৃষকরা বলেন কৃষি অফিসে গেলে বলে সারের সংকট নেই। কিন্তু ডিলার প্রায় সময়ই বলেন এত সার দেওয়া যাবে না। এই জিনিসটা আমার মাথায় ঢুকে না।ডিলারের ব্যবহার দেখে মনে হয় রিলিফের সার আনতে গেছি।
কৃষকদের দাবি, বর্তমান ডিলার ববি সাহার ডিলারশিপ বাতিল করে স্থানীয় কাউকে ডিলারশিপ দিলে চাষীরা উপকৃত হবে।
ববি সাহার ম্যানেজার আসাদুজ্জামান টুটুল বলেন ডিসেম্বর মাসে টিএসপি ১৩৭ বস্তা,ডিএফপি ২১৪ বস্তা পটাশ ১৭৭ বস্তা বরাদ্দ পাওয়া গেছে।যা এখনো উত্তোলন করা হয় নি।ফলে একটু সংকট দেখা দিয়েছে।
ম্যানেজারের সহযোগী নির্মল সাহার সাথে যোগাযোগ করে কোন বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
এ ব্যাপারে ববি সাহা বলেন,আমি সারের ডিলার কিনা জানিনা, বরাদ্দ কত? মজুদ কত? আমি কিছুই জানিনা! তবে আমাদের ডিলারসীপ নির্মল দেখা শুনা করে।কে সার পেলো কে পেলো না আমি জানিনা।আমি অসুস্থ মানুষ শুধু স্বাক্ষর করি।
এ ব্যাপারে পলাশবাড়ী উপজেলা সার ডিলার সমিতির সভাপতি ও উপজেলা আওয়ামিলীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবু তালেব সরকার তারা বলেন, সার সংকট ও অতিরিক্ত মুল্যে সার বিক্রি বন্ধে সম্প্রতি উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভা হয়েছে।প্রত্যেকটি পয়েন্ট একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন আওয়ামিলীগ সভাপতি ও সার ডিলার মাহাবুব বলেন, টিএসপি ডিএফপির সরবরাহ কম থাকায় খুচড়া বিক্রেতারা একটু দাম বেশি নিচ্ছে।
পলাশবাড়ী উপজেলার সচেতন মহলসহ কৃষকদের দাবি দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে সার সিন্ডিকেট ও চোরাকারবারিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি।