বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের শামছুল আলমকে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদ দিতে মরিয়া ওজোপাডিকো
প্রকৌঃ মোহাঃ শামছুল আলম ছিলেন বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অন্যতম নির্বাহী সদস্য। তাঁর চাকরী জীবনে বরাবরই তিনি আওয়ামী লীগের ছত্রছায়ায় ভালো পদ পেয়েছেন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এর মদদে যেখানে বেশি উপার্জন করা যাবে সেখানে পোস্টিং নিয়ে প্রচুর অবৈধ অর্থ উপার্জন করেছেন। বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রামে পোস্টিং এ দীর্ঘসময় থাকার সুবাদে প্রচুর ঘুষ নিয়েছেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মেরিট লিস্টের ১০ নাম্বারে থেকেও স্বৈরাচার সরকারের হানিফ এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানী প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সাথে ঘুষ লেনদেন করে বিউবোর সদস্য হন। আওয়ামী মদদপুষ্ট এই অফিসার সদস্য পদ থেকে পরবর্তীতে মোটা অংকের লেনদেনের মাধ্যমে ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক, অপারেশন হয়েছেন।
বর্তমানে জনাব শামসুল আলম ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওজোপাডিকোর অতিরিক্ত দায়িত্বে আছেন। নিজ দায়িত্ব নির্বাহী পরিচালক পরিচালনের পাশাপাশি ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে থাকায় সমস্ত কিছু তার নিয়ন্ত্রণে।
এছাড়াও ঠিকাদার বান্ধব হিসেবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি আছে ঠিকাদার মহলে। অভিযোগ আছে তিনি ঠিকাদারদের থেকে ঘুষ নিয়ে আন্তরিকভাবে তাদের কাজ বাগিয়ে দেন। ছোট-বড় সব ধরনের ঠিকাদারদের এক দৃষ্টিতে দেখে সবার কাছ থেকেই টাকা খান, সুবিধা নেন এবং প্রতিনিয়ত ঠিকাদারদের সময় দেন। ঢাকায় তার বাড়িতে ঠিকাদারদের ভিড় লেগে থাকে।
সূত্রের মাধ্যমে জানা গেছে নিয়মিত ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র তার জন্যই ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিযোগীদের বয়সসীমা শিথিল করা হয়েছে। সার্ভিস রুলে ব্যবস্থাপনা পরিচালকে বয়স ৬০ বছর থাকলেও তার তোয়াক্কা না করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি এমনভাবে দেয়া হয়েছে যাতে তিনি আসতে পারেন। জানা গেছে, সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের মাধ্যমে এডমিন কমিটিতে নিয়ে বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে।
তাতে শীর্ষস্থানীয় এই পদের জন্য ২৬ জন আবেদন করলেও দৌড়ে এগিয়ে আছেন শামছুল আলম। তাঁর জন্যই ওজোপাডিকোর সার্ভিস রুল অমান্য করে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। সেই সাথে তিনি এই পদ পাওয়ার জন্য অবৈধ পথে উপার্জিত টাকার বস্তা নিয়ে বসেছেন যে কাউকে কিনে ফেলে পদ নেওয়ার জন্য।
বর্তমানে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে থাকায় তদবীরের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন শামসুল আলম। ঠিকাদার বান্ধব শামসুল আলম যেমন প্রচুর টাকা কামিয়েছেন তেমন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হতে প্রচুর টাকা দুই হাতে খরচ করছেন।
জনাব শামছুল আলম ব্যবস্থাপনা পদে নিজে একজন আবেদনকারী। শর্টলিস্টের একজন প্রতিযোগী হিসেবে বাছাই হয়েও তার তত্ত্বাবধানেই ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের ইন্টারভিউ হতে যাচ্ছে আগামী ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪ শুক্রবার। তিনি নিজে ওজোপাডিকোর বোর্ডের একজন ডিরেক্টর। স্বার্থের সংঘাতের এধরনের বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত নজিরবিহীন।
এ ব্যাপারে ওজোপাডিকোর চেয়ারম্যান এবং অতিরিক্ত সচিব, সমন্বয় এবং সুশাসন, জনাব ফয়েজ আহমেদ বলেন, “ওজোপাডিকোর ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে ২৬ জন আবেদন করছেন। এর মধ্যে ১৩ জন আবেদনের চাহিদা পূরণ করেছেন। শামছুল আলমের নামে যদি অভিযোগগুলো সঠিক হয়ে থাকে তাহলে বিষয়টা আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখবো।”
আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও ঘুষখোর আওয়ামী লীগের দোসরদের নিয়োগ করে যাচ্ছেন স্বৈরাচার সরকারের প্রেতাত্মারা। বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সদস্য হয়েও তাকে সংস্থাপ্রধাণ পদে নিয়োগ করার জন্য এই তৎপরতা বর্তমান বিপ্লবী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে।