মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দিনব্যাপী নানান ধর্মীয় অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শুভ বড়দিন উদযাপন করা হয়েছে।
যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন পালনের শুরুতে মা মারীয়ার গ্রটোতে উদ্বোধনী আশীর্বাদ করা হয়। পরে সেন্ট যোসেফ গীর্জায় পবিত্র খ্রীস্টযাগ প্রার্থনায় খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীরা যোগ দেন।
বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) শহরের ক্যাথলিক মিশন রোডস্থ সেন্ট যোসেফ চার্চে বেলা ১১ টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চলে বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান। খ্রীস্টযাক উৎসব পরিচালনা করেন সিলেট ধর্মপ্রদেশের ধর্মপাল বিশপ শরৎ ফ্রান্সিস গমেজ।
এসময় উপস্থিত ছিলেন ক্যাথলিক মিশনের প্রধান পুরোহিত ফাদার ড. জেমস্ শ্যামল গমেজ। এদিকে জেলার বিভিন্ন উপজেলার পুঞ্জি ও চা বাগান থেকে আসতে থাকেন হাজার হাজার খ্রীষ্ট ভক্তরা।
তারা বেলা ১১ টায় বিশ্বের শান্তি কামনায় শ্রীমঙ্গল ক্যাথলিক মিশনে অংশ নেন বিশেষ সমবেত প্রার্থনা ও খ্রীষ্টযাক উৎসবে। তাছাড়া বড়দিন উপলক্ষে ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার জেমস্ শ্যামল গমেজকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানায় বিবেকানন্দ শিক্ষা ও সংস্কৃতি পরিষদ শ্রীমঙ্গল উপজেলা শাখার। বড়দিন উৎসবকে ঘিরে অপরূপ সাজে সেজেছে গির্জাগুলো। আলপনা একে নতুন করে রং করা হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন খাসিয়া পুঞ্জি, চা বাগানের গারো লাইন এলাকায় গির্জাগুলো সাজানো হয়েছে আলপনা একে সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজ করা হয়েছে। তাছাড়া জেলায় ১৮১টি গীর্জা রয়েছে।
এরমধ্যে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় ৬৫ টি, এবং কমলগঞ্জ উপজেলায় ৪৩ টি গীর্জাসহ জেলার ১৮১ টি গীর্জায়
বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠান পালন করা হয়।
মৌলভীবাজার থেকে আগত চেলসি বলেন, ‘অনেক ভালো লাগছে, এটা আমাদের জন্য খুবই স্পেশাল একটা দিন। এই দিনের জন্য আমরা সারাটা বছর অপেক্ষা করে থাকি যে, একটা ২৫ তারিখ আসবে। আমরা সবাই নতুন রঙে সাজবো। চার্চে আসছি আমরা, আমাদের যীশুকে স্মরণ করবো, যেহেতু আজকে যীশুর জন্মদিন। তাছাড়া আমরা খুবই আনন্দিত।’
বড়দিনের আনন্দ উপভোগ করতে আসা প্রমা চৌধুরী বলেন, ‘ধর্ম যার যার উৎসব সবার। আমরা প্রত্যেক বছরেই বড়দিনে এখানে আসি, অনেক আনন্দ করি। অনেক সুন্দর আয়োজন তাঁদের। অনেক ভালো লাগছে। চার্চে অনুষ্ঠান হচ্ছে, সবাই আনন্দ করছে। যীশু খ্রীস্টের গোষালা এতো সুন্দর করে সাজিয়েছে, সেটা দেখতে আসছি।’
ক্যাথলিক মিশনের প্রধান পুরোহিত ফাদার ড. জেমস্ শ্যামল গমেজ বলেন, ‘বড়দিনের শুভেচ্ছা সবাইকে। একটা সুন্দর ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে আমরা আজকের এই বড়দিন উদযাপন করছি। সমস্ত ধর্মের ভাই-বোনদের সার্বজনীন উৎসব। তাই সুস্থ, শান্তি পৃথিবীতে শান্তি নেমে আসুক। আমাদের দেশে শান্তি সুশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হোক, সবার মঙ্গল কামনা করে, শান্তি কামনা করে বড়দিনের বিশেষ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি।’
মৌলভীবাজার জেলার পুলিশ সুপার এম কে এইচ জাহাঙ্গীর হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘জেলায় ১৮১ টি গীর্জা রয়েছে। গীর্জার নিরাপত্তার জন্য, খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের বড়দিন উদযাপনের জন্য পুলিশ যথেষ্ট পরিমাণ, বিশেষ করে সাদা পোশাকে এবং ইউনিফর্ম পোশাকে আমরা নিরাপত্তায় রেখেছি। মানুষ যেনো নির্বিঘ্নে উদযাপন করতে পারে অনুষ্ঠান, এবং পাশাপাশি এই উৎসবে শঙ্কা, ভয় কাজ না করে সেবিষয়ে আমরা আশ্বস্ত করেছি। তাছাড়া আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাব, সেনাবাহিনী মাঠে কর্মরত রয়েছে