শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রশিবিরের বাকবিতণ্ডা, জিয়া পরিষদ-ইউট্যাবের প্রতিবাদ

ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোকপ্রশাসন বিভাগে নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতে গিয়ে ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিএনপিপন্থি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমানের সঙ্গে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মীদের শ্রেণিকক্ষে অশোভন আচরণ এবং অনাকাঙ্ক্ষিত বাকবিতণ্ডার ঘটনায় উদ্বেগ এবং তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া পরিষদ ও ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) ইবি শাখা।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সংগঠনের নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত পৃথক প্রতিবাদলিপিতে নিন্দা ও নির্দিষ্ট কিছু দাবি জানানো হয়।
ইবি জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. ফারুকুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত যৌথ বিবৃতিতে জানান, একজন শিক্ষকের প্রতি যেকোনো ধরনের অবমাননাকর আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক এবং সার্বিক পেশাদারিত্ব ও মর্যাদার পরিপন্থী। বিশ্ববিদ্যালয় হলো উন্মুক্ত জ্ঞান চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির কেন্দ্র। এখানে মতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটি অবশ্যই ভদ্রতা, শালীনতা ও প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম মেনেই প্রকাশ করতে হবে। ক্লাস চলাকালীন বা ক্লাসের নির্ধারিত সময়ে শ্রেণিকক্ষে অন্য কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করা এবং শিক্ষকের প্রতি অসদাচরণ ও উচ্চস্বরে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হওয়া স্পষ্টতই বেয়াদবি, অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক।
জিয়া পরিষদ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি কিছু দাবি জানিয়েছেন। দাবিগুলো— বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সংগঠনকে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতি, প্রক্রিয়া-প্রকরণ ও সময়সূচি মেনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার ও সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক মতপার্থক্য যেন কখনোই শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করে, সেই লক্ষ্যে কার্যকর মনিটরিং, সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
এদিকে ইউট্যাব ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. তোজাম্মেল হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রশিদুজ্জামান একই ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন, পাঠদানের নির্দিষ্ট সময়ে শ্রেণিকক্ষে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
জানা যায়, এর আগে বুধবার দুপুর সাড়ে ১২ টায় ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীনদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও উপহারসামগ্রী প্রদানের ধারাবাহিক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে লোকপ্রশাসন বিভাগে যান শিবিরের নেতাকর্মীরা। এ সময় শিবিরের ইবি শাখা সেক্রেটারি ইউসুব আলীর নেতৃত্বে অন্তত ১০-১২ জন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে নবীনদের সাথে কথা বলতে গেলে ওই সময়ের শিডিউল ক্লাস নিতে আসেন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান। তিনি ক্লাসে আসার পর শিবির নেতাদের দেখে ক্লাস থেকে বের হয়ে যেতে বললে একপর্যায়ে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে শাখা শিবির সভাপতি মাহমুদুল হাসান এলে বিভাগের সভাপতি ও প্রক্টরের উপস্থিতিতে আলোচনা করে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।