সনাতনী নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিল ইবি পূজা উদযাপন পরিষদ
ইবি প্রতিনিধি:
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) হিন্দু ধর্মাবলম্বী নবীন শিক্ষার্থীদের বরণ করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পূজা উদযাপন পরিষদ। বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের গগন হরকরা গ্যালারিতে সকাল ১০ থেকে এই নবীন বরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন তারা। এসময় নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়।
শিক্ষার্থী স্নিগ্ধা দাস এবং ইন্দ্রজিৎ ঘোষের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. লিটন বরণ শিকদার, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের সিনিয়র টেকনিক্যাল অফিসার অশোক চন্দ্র বিশ্বাস। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি, সেক্রেটারি পংকজ রায় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত হিন্দুধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।
এসময় অশোক চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, “আমরা পরিশ্রমী জাতি, আমরা সৎ জাতি। সব ধরনের ভালো গুণ আমাদের মধ্যে বিদ্যমান। আপনারা সাধারণ মানুষ নন, আপনারা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আপনাদের অধ্যবসায়ী হতে হবে, ভালো মানুষ হতে হবে। পরিবর্তনের সাথে আমাদের খাপ খাইয়ে চলতে হবে। আমাদের প্রতিভা স্বজাতির কল্যাণে কাজে লাগাতে হবে। একতাই বল—এই চেতনায় আমাদের বর্ণপ্রথার ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে হবে। আমরা সবাই এক, এই ঐক্যের শক্তিতেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। আপনাদের মার্জিত হতে হবে, যেন অন্যরা আপনাদের দেখে শিক্ষা নিতে পারে। বাংলাদেশ বিনির্মাণে আমরা সব ধরনের কাজ করতে চাই। আমরা বাঙালি, আমরা আমাদের দেশের স্বার্থে কাজ করব। ন্যায়ের পথে থাকলে সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। আপনাদের কারো যদি অর্থনৈতিক সমস্যা থাকে, তাহলে আমাকে জানাবেন। আমি ব্যক্তিগতভাবে সাহায্য করব। পাশাপাশি হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট থেকেও আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়।
তিনি আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যে চাকরি হয়, তার অন্তত দশ শতাংশ যেন হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্য থেকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আমরা আমাদের অধিকার আদায়ে প্রয়োজনে রাস্তায় নামতেও প্রস্তুত।”
সহযোগী অধ্যাপক ড. লিটন বরণ শিকদার বলেন, “তোমরা দেশের প্রথম শ্রেণীর নাগরিক। এই দেশ আমাদের সকলের। তোমাদের আগে যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। অধিকার কেউ কাউকে দেয় না—অধিকার আদায় করে নিতে হয়। তোমাদের আজকের অবস্থা পরিবর্তন করতে তোমরা প্রতিনিয়ত চেষ্টা করবে। তোমরা সবসময় জ্ঞানের অন্বেষণ করবে। সবসময় মনে রাখবে, নিজের ধর্মের কোন অনুষ্ঠান দোষযুক্ত হলেও তা অন্য ধর্ম থেকে শ্রেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে তোমরা কোন ধরনের সমস্যায় পড়লে আমাদের জানাবে। আমরা তোমাদের সর্বাবস্থায় সহযোগিতা করবো।”
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে সকলের জন্য লটারির ব্যবস্থা করা হয়। সবশেষে সাংস্কৃতিক পর্বের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।

