চিহ্নিত সন্ত্রাসীর চাঁদা না পেয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা, বিচারের দাবীতে মানববন্ধন

স্টাফ রিপোর্টার ।।
ইঞ্জিনিয়ার জিয়াউর রহমান ও তার পরিবারের উপর হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন।
গতকাল ৭ এপ্রিল রবিবার বিকাল ৩ টায় চাঁদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ শামীম, বেলাল ও তাদের সহযোগীদের দ্রুত বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগীর পরিবার ও চাঁদপুর টেক্সটাইল এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ।
মামলার এজাহার ও মানববন্ধনের বক্তব্য সূত্রে জানা যায় জিয়াউর রহমান এবং তার পরিবার মিথ্যা মামলা ও হামলার শিকার হন।
গত ৩০ই মার্চ শাহরাস্তি থানার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের নরহ গ্রামের বাড়িতে আমি ও রাকিবুল হাসান রনি তাদের পুরো পরিবার নিয়ে প্রাইভেট কার যোগে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি (নরহ, শাহরাস্তি, চাঁদপুর) ফিরছিল।
পথিমধ্যে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে তাদের উপর এক অতর্কিত হামলা চালায় কিছু স্হানীয় সন্ত্রাসীরা।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের শাহ শরীফ ডিগ্রী কলেজের সামনে একটি সিএনজি অটোরিকশা তাদের প্রাইভেট কারে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দেয়। সিএনজিটি চিতোষী বাজারে পৌঁছালে সিএনজির ড্রাইভারকে আটক করা হয় এবং জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সেখানে স্হানীয় দুজন সন্ত্রাসী উপস্থিত হয়। তারা এই সামান্য বিষয়টিকে নিয় বাড়াবাড়ি করে মারাত্মক আকার ধারণ করে। পরবর্তীতে জানা যায় এটি ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত। সন্ত্রসীরা হলো ”শামিম-বিল্লাল” ক্যাডার বাহিনীর অন্যতম সদস্য। মূলত তারা জিয়াউর রহমানকে আওয়ামী লীগের দোষর বলে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।বঅথচ এই জিয়াউর ও রনি প্রথম থেকেই বৈষম্য বিরোধী আনাদোলনের সক্রিয় কর্মী ছিল। যা তাদের সোস্যাল মিডিয়ার একটিভি থেকে খুব সহজেই প্রমান পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন
সন্ত্রসীরা হলো – সারাফত করিম শামিম ওরফে কোপা শামিম, এবং বিল্লাল হোসেন ওরফে চাঁন্দা বিল্লাল ,যারা পুরো এলাকাজুড়ে তান্ডব চালিয়ে বেড়ায়। তাদের প্রধান কাজ হলো- চাঁদাবাজী,ইভটিজিং,মাদকসেবন ও মাদক বিক্রি,লুটতরাজ ও ছিনতাই করা। এলাকার মানুষ তাদের অত্যাচারে রিতীমতো অতিষ্ঠ।প্রত্যেকটা দোকনদার তাদের ভয়ে আতঙ্কে থাকে,ঠিকঠাক ব্যবসা বানিজ্য করতে পারে না। কেউ যদি তাদের সাথে বাকবিতন্ডায় জড়ায় তাহলে তারা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়,এমনকি বাড়িঘর ভাঙচুড় পর্যন্ত করে।যার ফলে পুরো এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খোলেনা।তারা দীর্ঘদিন যাবৎ পেশী শক্তি প্রয়োগ করে চলছে। সবচেয়ে ন্যাক্কারজনক ঘটনা হলো- তারা যুব সমাজটাকে মাদক সরবারহ করে পুরো যুব সমাজটাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়েছে।
ঘটনার বর্ণনায় জিয়াউর রহমান ও তার পরিবার জানায়- বেশ কিছুদিন আগে চিতোষী বাজার সংলগ্ন স্থানে জিয়াউর রহমান একটা ১৬ শতাংশের জায়গা ক্রয় করেন।সেসময় এই “শামিম- বিল্লাল” ক্যাডার বাহিনীর কোপা শামিম তার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি দিতে অস্বীকৃতি জানালে ,ক্যাডার বাহিনী হুমকি দেয় যেন এলাকাতে পা না রাখেন। যেহেতু জিয়াউর রহমানের জন্মভূমি ও পৈত্রিক নিবাশ চিতোষী ইউনিয়ন ,তাই তাদের সেখানে যাওয়া বাঞ্ছনীয়। এছাড়াও আরো জানা যায় বন্যার সময় জিয়াউর ও রনি যৌথভাবে প্রায় ৯০০ ব্যাগ ত্রাণ এলাকায় নিয়ে যায়। সেসময় ঐ সন্ত্রাসী বাহিনী তাদের কাছে ২০০ ব্যাগ দাবি করে। কিন্তু এবারো দিতে অস্বীকৃতি জানানোর ফলে তারা অনেক বেশি ক্ষিপ্ত হয়। তাই তারা ঈদের আগে কয়েকদিন যাবৎ সুযোগের অপেক্ষায় ছিল। আসা মাত্রই তারা সুযোগ কাজে লাগায়। ঘটনার শুরুতে কোপা শামিম ও চাঁন্দা বিল্লাল থাকলেও পরবর্তীতে তারা তাদের পুরো গ্যাং ফোন করিয়ে হাজির করায়।প্রায় ৪০ থেকে ৫০ জন মুহুর্তেই সেখানে হাজির হয়।তারা এতটাই প্রস্তুত ছিলো যে – তাদের প্রত্যেকের হাতে আধুনিক মারণ অস্ত্র ছিল।যেমন: ইলেকট্রিক স্টানগান,টেলিস্কোপিক সেলফ ডিফেন্স স্টিক, কাঠের লাঠি, ইট। যার মজুদদাতা হলো- বেলায়েত হোসেন ওরফে ব্লেড বেলায়েত। মারামারির এক পর্যায়ে কোপা শামিম বলে- মেরে ফেলতে,এবং চাঁন্দা বিল্লাল গাড়িতে আগুন দেবার প্রস্তুতি নেয়।তারা তিন চার দফায় এলোপাথাড়ি পেটায় জিয়াউর ও রনিকে। একসময় তারা প্রান রক্ষার্থে তাদের নিজস্ব হাসপাতাল “চিতোষী জেলারেল হাসপাতালে” প্রবেশ করে। এরপর ৯৯৯ এ কল করে তারা নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে পৌঁছায়।
ঘটনার সময় জিয়াউর ও তার পরিবারের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি সাধন হয়। হামলা সময় গাড়ি ভাংচুড় করে,নগদ ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ২১৫ টাকা লুট করে এবং জিয়াউর রহমানের স্ত্রীর গলার স্বর্ণের চেইন লুট হয়। স্থানীয় জনগনের বিপুল সমাগমের ফলে হামলাকারীরা প্রাননাশের হুমকি প্রদান করে একসময় পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
হাসপাতালে যাবার পর রাকিবুল হাসান রনির শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপের দিকে যায় তাই উন্নত চিকিৎসা নিতে তাকে ঢাকা মেডিকেলে প্রেরণ করা হয়। এ হামলার কারণে ভিক্টিমরা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।মামলা নং ১৬৪৪(৩)।