যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও মুক্তিযোদ্ধা পিরোজপুরের নান্না শিকদার

পিরোজপুর প্রতিনিধি :
পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পশ্চিম পশারীবুনিয়া গ্রামের মৃত আজাহার আলীর ছেলে হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করেও গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধা এবং সবধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করার অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন একই এলাকার মিরাজ শিকদার।
এদিকে ২০০২ সালের আগস্ট মাসের ২ তারিখে মুক্তিযুদ্ধের ৯ নং সাব সেক্টর কমান্ডার মেজর জিয়াউদ্দিন আহমেদ ওই ব্যাক্তিকে রাজাকার হিসেবে চিহ্নিত করে প্রত্যয়ন প্রদান করেন।
এছাড়াও ২০১৭ সালের ১০ জানুয়ারি ভান্ডারিয়া উপজেলা প্রশাসন ৮৪ জন রাজাকারের তালিকা তৈরী করেন সেখানে অভিযুক্ত নান্না শিকদার পিতা আজাহার আলী রয়েছেন।
অভিযোগ সূত্র থেকে জানা যায়, হাবিবুর রহমান নান্না শিকদার ১৯৭১ সনে রাজবিহারী ডাক্তার বাড়ী থেকে ৬৫,০০০/=টাকা ও ৪০ ভরি স্বর্ণ লুট করে। এ বিষয়ে বাবুল হালদার ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে একটি দরখাস্ত করেন। ১৯৭১ সনে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে রাজবিহারী ডাক্তার বাড়ীতে ০৭ জনকে হত্যা করে এই রাজাকারা এবং ১৯৭২ সালের ২ এপ্রিল ভান্ডারিয়া থানায় মামলা হয়, মামলা নং-১, ধারা-১৪৭/৪৪৮/৩৮০/৩৭৯/৪৩৬/৩০২/ ৩৪ যেখানে আসামী ১৯ জন। নান্নার আপন বড় ভাই মানিক শিকদার ১০নং আসামী। মামলাটি আন্তর্জাতিক যুদ্ধ অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন আছে।
ভান্ডারিয়ার মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা বাচ্চু বলেন, নান্না শিকদার যুদ্ধ করেছেন এ ব্যাপারে তাদের কাছে কোন ধরনের প্রমাণাদি নেই বরং তার বাবা এলাকার স্বীকৃত রাজাকার ছিলেন। তিনি স্বাধীনতার পর ৭১ সালের কর্মকাণ্ডের জন্য জেলও খেটেছেন। একইসাথে নান্না শিকদারের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময় হত্যা, লুট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ রয়েছে। তবুও তিনি কিভাবে মুক্তিযোদ্ধা হলেন তাদের জানা নেই। নান্না শিকদারের দাবি তিনি ভারতে গিয়েছিলেন। তবে বাস্তবে দেখা গিয়েছে তিনি দেশে থেকে লুটপাট ভাঙচুর করেছে।
অভিযুক্ত হাবিবুর রহমান নান্না শিকদারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্যক্তিগত শত্রুতার জের ধরেই আমাকে রাজাকার বানানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে অভিযোগের ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে তিনি সেগুলো বারবার এড়িয়ে যান এবং বলেন সব ষড়যন্ত্র।