আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সেলিম কে সি ডাব্লু মূল্যে কারাগারে প্রেরন

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ.
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজার (৪৮)কে হত্যার চেষ্টা মামলায় সি ডাব্লু মূল্যে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বুধবার (১৮ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় কামারখন্দ আমলী আদালতে সেলিম রেজা, আব্দুল্লাহ শেখকে হত্যা চেষ্টা মামলার হাজিরা শেষে বিচারক কে.এম শাহরিয়ার শহীদ বাপ্পি আসামি সেলিম রেজা কে সি ডাব্লু মূল্যে কারাগারে প্রেরণ করেন। প্রাথমিক অবস্থায় প্রমাণ হওয়াতে বিচারক এই আদেশ দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন কামারখন্দ আমলী আদালতের সি এসে আই মোঃ মাসুদ হোসাইন বলেন, মোছাঃ সাথী খাতুনের দায়ের করা মামলায় সেলিম রেজার অপরাধ প্রাথমিকভাবে প্রমাণ হওয়াতে আদালত এই আদেশ দেন এই মামলার সেফ প্রধান আসামী।
কামারখন্দ উপজেলার ঝাঐল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সমাজ কল্যান বিষয়ক সম্পাদক সেলিম রেজার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্মসহ এলাকার সাধারণ মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও বিএনপি নেতাকর্মীদের প্রশয়ে তার অপকর্ম থেমে নেই বলে দাবি করছেন স্থানীয়রা।
ওই ইউনিয়নের পাইকশা গ্রামে গেলে সাথী খাতুন, ৯নং ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন, পাইকশা ফাজিল মাদাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বজলুর রহমান, ফজলু সেখ ও মাজেদুল ইসলামসহ স্থানীয় ভুক্তভোগীরা এমন অভিযোগ তুলেছেন।
সাথী খাতুন অভিযোগ করে বলেন, মে মাসের রাত সাড়ে ৯ টার দিকে তার স্বামী আব্দুল্লাহ শেখকে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী সেলিম ও তার লোকজন হত্যার উদ্দেশ্যে রামদা দিয়ে মাথায় আঘাত ও শরীলের বিভিন্ন অংশে বেধড়ক মারপিট করে। শুধু তাই নয়, তার সঙ্গে থাকা নগদ ২৫ হাজার ৩০০ টাকাও ছিনিয়ে নেয় তারা। পরে স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় সেলিম রেজাকে প্রধান করে ৬ জনের নামে একটি হত্যা চেষ্টার মামলাও দায়ের করেছেন তিনি। এতে আরও ৩-৪ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
স্থানীয় ওয়ার্ড যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মমিন বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছর সেলিমের অত্যাচারে আমরা ঘরে থাকতে পারি নাই। সাধারণ মানুষও তার এই অত্যাচার থেকে রক্ষা পায়নি। এখন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় নেই।তবুও তিনি বিএনপির কিছু নেতার প্রশয়ে এলাকায় নানান অপকর্ম করছেন। তার নির্যাতনে অতিষ্ট হয়ে স্থানীয় যুবদলের এক নেতা দেশের বাইরেই চলে গেছেন।
তিনি আরও বলেন, সেলিম শুধু আওয়ামী লীগের একজন নেতা না। তিনি একজন বড় অর্থ দাতা। যে কারণে এলাকার কেউ তার বিরুদ্ধে কোন প্রতিবাদ করার সাহস পায়না। চোরাই পথে সুতার ব্যবসা করে সে এখন শতকোটি টাকার মালিক। বাস করেন বিলাসবহুল বাড়িতে। অথচ এক সময় তার কিছুই ছিল না।
এছাড়াও আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম রেজা মাদারাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি না হতে পেরে অধ্যক্ষ কে মারধর করেছিল। এ ঘটনায় থানায় অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার পাননি। সেই সময় সেলিমের শাস্তির দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনও করেছিলেন।
সেলিম রেজার গ্রেপ্তারে পাইকোশা গ্রামে মিষ্টি বিতরণ ও আনন্দ মিছিল করেছে স্থানীয় ভুক্তভোগীরা।
এ বিষয়ে সাথী খাতুন বলেন, আল্লাহ আমাদের কথা শুনেছে ঐ আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী সেলিমকে গ্রেপ্তার করেছে। আমি সেলিমের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাই সরকারের কাছে।