সারাদেশ

পলাশবাড়ীতে জমেছে উঠেছে শীত কেনাকাটা, নিম্ন মধ্যবিত্তদের ফুটপাতই ভরসা।

বায়েজীদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা)  :
উত্তরবঙ্গের প্রবেশদ্বার গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলায় গেলো তিন দিনে মেলেনি সূর্যের দেখা
সকাল-সন্ধ্যায় ঘন কুয়াশার হাত ধরে প্রকৃতিতে নামছে শীত। গত কয়েকদিন ধরে অনুভূত হচ্ছে শীতের। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গরম কাপড়ের কেনাকাটাও। এবারের শীতেও পূর্বের মতো উষ্ণতা ছড়াতে নিম্ন-মধ্যবিত্তের ভরসা ফুটপাত মার্কেট।
জমেছে শীত-পোশাকের কেনাকাটা নিম্ন-মধ্যবিত্তের ভরসা ফুটপাতের দোকান।
বুধবার (১১ ডিসেম্বর ) পৌরসভার রাব্বির মোর,কালিবাড়ী বাজার,হারুন মার্কেট ও হাইস্কুল মার্কেট সংলগ্ন এলাকাসহ পৌর ও উপজেলার প্রধান প্রধান সড়কের মোড়গুলো ঘুরে দেখা যায়, ফুটপাতে ও ভ্যানের উপর শীতের কাপড় বেচাবিক্রি বেশ জমে উঠেছে। দোকানি কে ঘিরে ধরে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ এ পোশাক কিনছেন।
ক্রেতারা বলছেন, এবার শীতের প্রত্যেকটা পোশাকের দাম কিছুটা  বেড়েছে। নিম্ন-মধ্যবিত্তের জীবনযাপনের ব্যয় বেড়েছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। এরমধ্যে অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির কারণে ফুটপাতকেই বেছে নিচ্ছেন তারা। সাধ থাকলেও সাধ্যের কাছে তারা অসহায়- এমন মন্তব্যই করছেন ক্রেতারা।
এদিন কাশিয়াবাড়ী রোড রাব্বীর মোর এলাকায় ফুটপাতের দু’ধারে অস্থায়ী পোশাকের দোকান বসতে দেখা যায়। সন্ধ্যার পর প্রত্যেকটি দোকানে ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো। যেখানে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০০ টাকা দামের শীতের কাপড় কেনাবেচা হচ্ছে।
ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সপ্তাহের দুদিন হাট বারে বুধবার ও শনিবারে অনান্য দিনের চেয়ে  ফুটপাত সবচেয়ে বেশি বেচাকেনা হয়ে থাকে।
আর শীতের জন্য এখন বেচাবিক্রি বেশি। ফুটপাত মার্কেটেও পোশাকের দাম বেড়েছে। তবে অস্বাভাবিক নয়। নিম্ন-মধ্যবিত্তের মানুষরা এখান থেকেই বাজার করছেন। বিক্রি চলে রাত ১১ পর্যন্ত।
কিছু কিছু দোকানিরা ক্রেতাদের ডেকে ডেকে কাপড়ের দাম হেঁকে বিক্রি করছিলেন মো শহিদুল ইসলাম। তিনি রাব্বি মোরে ভ্যানে সাজানো একটি দোকানের মালিক। শহিদুল বলেন, সপ্তাহে হাটবারে তাদের ব্যবসা অন্য দিনের চেয়ে ভালো হয়, তাদের এখানে ছোট-বড় সবার জামাকাপড় পাওয়া যায়। দামও সাশ্রয়ের মধ্যেই।
মোঃ মেজবাহুর রহমান নামের আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ি নিম্ন আয়ের মানুষ কে টার্গেট করে শীতকালে ব্যবসা করি শীত যতো বেশি হয় ব্যবসাও ততো জমে বেশি। গেলো তিনদিনে শীত বেশি। এ কারণে মানুষ শীতের জামাকাপড় কেনা শুরু করে দিয়েছেন। শীত বাড়লে আরও বিক্রি বেড়ে যাবে। এখানে পঞ্চাশের বেশি দোকান বসে। কম করে হলেও এখানে ৫ হতে ৭ লাখ টাকার কাপড় বিক্রি হয় বলে আমার ধারণা।
ইউছুব আলী নামের এক শিক্ষার্থী ফুটপাতে শীতের পোশাক কিনছিলেন। তিনি বলেন, ফুটপাতে পোশাক একটু বেছে নিলে ভালো পাওয়া যায়। দামও অনেকটা সাশ্রয়ী। এই পোশাকগুলোই শো-রুম বা ভালো দোকানে কিনতে গেলে কয়েকগুন দাম নিবে।
আরেক শিক্ষার্থী কামরুল হাসান তিনি বলেন, আমি হাইস্কুল মার্কেটে গিয়ে একটা হালকা শীতের পোশাক খুঁজছিলাম। কিন্তু আমার বাজেটের মধ্যে সেখানে না পাওয়ায়  ফুটপাতের বেশকিছু দোকান খুঁজে দুইশত টাকায় কিনলাম। আমারা শিক্ষার্থী। জীবনযাপনের অস্বাভাবিক ব্যয়ে এরইমধ্যে নাভিশ্বাস উঠছে। একারণে বাধ্য হয়েই ফুটপাতের দিকে নজর দিতে হচ্ছে।
ফুটপাতে ছেলে মেয়ের জন্য শীতের কাপড় কিনছিলেন অটো রিকশা চালক হানিফ উদ্দিন । তিনি বলেন, এখন দিনে ৫০০ টাকাও আয় করতে পারি না। কিন্তু পরিবারের ব্যয় অত্যাধিক হারে বেড়েছে। এরইমধ্যে ঋণে জর্জরিত হয়ে পড়েছি।ছেলে মেয়ের বায়না ভালো দোকানে যাবে। কিন্তু এখন তো সেটা পারছি না। তাই ফুটপাতেই একটু ভালো দেখে দুইটা পোশাক কিনলাম।
পৌর শহরের প্রতিষ্ঠত গার্মেন্টস ব্যবসায়ী পিনু ফ্যাশন এর স্বত্বাধিকারী মোঃ খোরশেদ আলম চিনু জানান, এখনো বিপণিবিতানের শীত উপলক্ষে খুব একটা বেচাকেনা শুরু হয়নি ক্রেতারাও তেমন একটা আসা শুরু  করেন নি। কিন্তু একটু নিম্ন আয়ের মানুষ ফুটপাতে শীতের কেনাকাটা অলরেডি শুরু করে দিয়েছে। যারা ফুটপাতে বিক্রি করেন, তাদের লক্ষ্যও নিম্ন আয়ের লোকজন। এটা ইতিবাচক।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

Do You Like Your Playing Style? Try New Kill La Kill

There are many variations of passages of Lorem Ipsum available but the majority have suffered alteration in that some injected