কচুয়া বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ, আজ সাধারণ ভোটারদের মানববন্ধন

উজ্জ্বল কুমার দাস ,বাগেরহাট জেলা প্রতিনিধি।।
বাগেরহাটের কচুয়ায় চলছে বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে উপজেলা পর্যায়ে নেতৃত্ব বাছাই পর্ব। তাই উপজেলা জুড়ে সর্বত্র বিরাজ করছে ভোটের আমেজ। কিন্তু এরই মধ্যে উঠেছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগের তকমা। দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৯ জন এবং ভোটার রয়েছে প্রত্যেক ইউনিয়ন হতে ৭১ জন করে মোট ৪৯৭ জন। বর্তমানে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীরা এবং প্রার্থী সমর্থকরা।
নির্বাচনী প্রচারণা কার্যক্রমকে ঘিরে রয়েছে নানা ধরনের অভিযোগ। ইতিমধ্যে ভোটারদের ভয়-ভীতি দেখানো হচ্ছে এমন দাবি করে আজ সকাল ৯.৩০ মিনিটের সময় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করবেন সাধারণ ভোটাররা।
অভিযোগ আসে কচুয়া উপজেলার দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে হাজরা আসাদুল ইসলাম পান্না, সরদার সাহনেওয়াজ, মোহাম্মদ মহিদুল ইসলাম নকিব, মোঃ আব্দুস সালেক শেখ নির্বাচনী প্রচারণায় জেলা পর্যায়ে নেতৃবৃন্দের সহায়তা নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে শেখ তৌহিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জানান,”৫ই আগস্ট এর পরে একটি জনসভায় কিছু নেতা “জয় বাংলা” স্লোগান দেওয়ায় তাদের বরখাস্ত করা হয় সেই বরখাস্ত হওয়া নেতাদের নিয়ে নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে তারা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।” অন্য আরেকজন বিএনপি সমর্থক মোহাম্মদ টিপু শিকদার বলেন,”জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেওয়া আমার দৃষ্টিতে পক্ষপাতিত্ব মূলক।”
কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন,”আজকেও জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফফর রহমান আলম, পৌর বিএনপি নেতা শেখ শাহেদ আলী রবি, বিএনপি নেতা সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক, শ্রমিক দল নেতা সরদার লিয়াকত আলী, কৃষকদলের আসাফুদৌলা জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের জাহিদুল ইসলাম শান্তসহ কয়েকজন কচুয়ায় এসেছেন কিন্তু তারা বিএনপির অফিসে আসেননি।”
এছাড়া খান মনিরুল ইসলাম (সাবেক সহ-সভাপতি বাগেরহাট জেলা বিএনপি) বলেন,”এখানে যারা নির্বাচন করছেন এবং ভোটার হিসেবে আছেন তারা সবাই কচুয়ার বাসিন্দা কিন্তু জেলা নেতৃবৃন্দ নির্দিষ্ট একটি পক্ষ নিয়ে প্রচার-প্রচারণায় অংশ নিচ্ছেন এতে ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ে দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে জেলা নেতৃবৃন্দের কোন কাজই নেই এতে ভোটারদের মনে ভয়ভীতি জন্মায়।” তিনি আরো বলেন,” জেলা বিএনপির একজন সাবেক নেতা ভোটারদের ডেকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন শুনেছি, যাতে তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট প্রদান করা হয়। কেন্দ্রীয় নির্দেশ ছাড়া কিভাবে জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ এভাবে নির্দিষ্ট একটি পক্ষের প্রচার-প্রচারণা চালাতে পারে।” তিনি জেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দদের আহ্বান জানান যাতে তারা এ ধরনের কার্যক্রম হতে দূরে থাকেন।
আজ কচুয়া উপজেলায় বেলা ১১.৩০ এরপর হতেই জেলা নেতৃবৃন্দদের দেখা গেছে সভাপতি প্রার্থী হাজরা আসাদুল ইসলাম পান্নার নির্বাচনী ব্যানারে গাড়ি বহরে অংশগ্রহণ করতে।
এ ব্যাপারে সভাপতি প্রার্থী হাজরা আসাদুল ইসলাম পান্নার কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,”এ বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট, এখানে কোন বহিরাগত কেউ নেই, জেলা পর্যায়ে নেতৃবৃন্দ এসেছেন নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা দেখতে ভোটারদের খোঁজখবর নিতে এবং আমি নির্বাচনে জয় হবো বলে আশা রাখি। আমি নির্বাচিত হলে দলকে সুসংগঠিত করব যেখানে আওয়ামী লীগের কেউ থাকবে না।”
জেলা বিএনপি নেতা সৈয়দ নাসির আহমেদ মালেক জানান,” আমরা কেউই বহিরাগত নই, আমরা এসেছি ভোটের সার্বিক পরিস্থিতি দেখার জন্য।”
আগামী ২৬ জুলাই এই সম্মেলনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ,সভাপতি পদে সরদার জাহিদ ও হাজরা আছাদুল ইসলাম পান্না, সাধারণ সম্পাদক পদে শেখ তৌহিদুল ইসলাম ও সরদার শাহনেওয়াজ, এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে হুমায়ুন কবির, শেখ জাহাঙ্গীর হোসেন, মোঃ নুরুল ইসলাম শিকদার, মোঃ মহিদুল ইসলাম নকিব, মুহাম্মাদ আব্দুন সালেক শেখ ।
কচুয়া উপজেলায় বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন উপলক্ষে সর্বত্র ভোটারদের আনাগোনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবং সাধারণ জনগণ চাচ্ছেন দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগ পরে তারা গণতান্ত্রিকভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করার সুযোগ পাচ্ছেন তাই সবকিছু শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হোক।
তবে দুপক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা ঘটতে পারে এমন সন্দেহ থেকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরাপত্তা টহল বৃদ্ধি করেছে।