ছোনগাছায় আড়াই মাসে ফাটল রাস্তায়, প্রায় ১০ লাখ টাকার উন্নয়ন কাজ প্রশ্নবিদ্ধ

ওয়াসিম সেখ, সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের ছোনগাছা ইউনিয়নের পারপাচিল এলাকায় সদ্য নির্মিত একটি সড়ক মাত্র আড়াই মাসের মাথায় ফাটল ধরে নষ্ট হতে শুরু করেছে। প্রায় ৯ লাখ ৫৯ হাজার ২০০ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়কটি স্থানীয়দের গুরুত্বপূর্ণ যাতায়াত পথ হলেও নিম্নমানের কাজের কারণে দ্রুত অচল হয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে—ওয়ার্ক অর্ডারে রড দিয়ে আরসিসি (RCC) রাস্তা নির্মাণের কথা থাকলেও বাস্তবে রড ছাড়াই নিম্নমানের ইট–বালু–খোয়া দিয়ে সিসি (CC) ঢালাই করে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন পরিষদের উন্নয়ন সহায়তার বরাদ্দ থেকে ‘পারপাচিল বদরুজ্জামানের বাড়ি থেকে মান্নানের বাড়ি’ পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের কাজ শেষ করা হয়। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার মাত্র আড়াই মাসের মধ্যেই বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও গর্ত তৈরি হয়েছে, যা এখন যান চলাচলে বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আখতারুজ্জামান বলেন, “রাস্তা বানানোর সময় ঠিকাদার রড ব্যবহার করেনি, যার ফলে দ্রুত ফাটল দেখা দিয়েছে। এত অল্প সময়ে রাস্তা নষ্ট হওয়া মানে সরকারি টাকার অপচয়।” অপর এক বাসিন্দা জানান, “আমি কাজ চলাকালীন সময়ে উপস্থিত ছিলাম, এখানে প্রচুর অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে।”
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার বিভিন্ন অংশে ফাটল ও ভাঙনের চিত্র স্পষ্ট। বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এত টাকা খরচ করেও রাস্তা এখনও ব্যবহারযোগ্য নয়। দোষী ঠিকাদারকে কালো তালিকাভুক্ত করে শাস্তি দিতে হবে।”
এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক সচিব মেহেদী হাসান ও প্রশাসক ডা. আলমগীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অনিয়মের সত্যতা পান। প্রশাসনিক সচিব মেহেদী হাসান বলেন, “কিছু অংশে আরসিসি করা হলেও পরে সিসি ঢালাই করা হয়েছে। নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এখনো বিল দেওয়া হয়নি, আর এই কাজ আমার সময়ে বাস্তবায়িত হয়নি।”
ইউপি প্রশাসক ডা. আলমগীর হোসেন জানান, “আগামী সোমবার আমি নিজে রাস্তা পরিদর্শন করবো। এখনো এ কাজের বিল দেওয়া হয়নি।”
সচেতন মহল বলছে, দায়িত্বশীল সংস্থার অবহেলা ও নিম্নমানের নির্মাণের কারণে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থ নষ্ট হচ্ছে, যা রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।