পাবনা সিটি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ

সাব্বির আহমেদ ,স্টাফ রিপোর্টার (পাবনা)
পাবনা সিটি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে জালিয়াতি ও তথ্য গোপনের অভিযোগ উঠেছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে দীর্ঘ ২১ বছর ধরে ডিগ্রি পর্যায়ে পাঠদান চালিয়ে আসলেও, সদ্য প্রকাশিত এক নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে প্রতিষ্ঠানটিকে কেবল ‘উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে করে ডিগ্রি কলেজে অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য সরকারি নীতিমালা ও যোগ্যতাকে পাশ কাটানোর অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে।
গত ৩১ জুলাই দৈনিক প্রথম আলো পত্রিকায় প্রকাশিত বিজ্ঞাপন অনুযায়ী, সিটি কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য যে যোগ্যতা চাওয়া হয়েছে, তা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ নিয়োগের ক্ষেত্রে যথেষ্ট নয় বলে দাবি করেছেন এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্টরা।
এ ঘটনায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন দফতর, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক), রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট ১৬টি প্রতিষ্ঠানে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন মো. আব্দুর রহমান নামে একজন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নূরুল আলম (শুভ), সদ্য-সাবেক সভাপতি আনিছুল হক বাবু এবং সমাজবিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. সাইফুল ইসলাম যৌথভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দিচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে, মো. সাইফুল ইসলামকে অধ্যক্ষ করার জন্যই ডিগ্রি কলেজের স্বীকৃতি গোপন করে পরিকল্পিতভাবে বিজ্ঞাপনটি তৈরি করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে আরও বলা হয়, সিটি কলেজ ২০০৪ সাল থেকেই জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ডিগ্রি (পাস) কোর্স চালু করেছে। প্রতি বছর শতাধিক শিক্ষার্থী ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নিলেও বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গোপন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য একটাই অযোগ্য ব্যক্তিকে অবৈধভাবে অধ্যক্ষ বানানো। অভিযোগে বলা হয়, এই তিনজনের লক্ষ্য হলো মো. সাইফুল ইসলামকে অধ্যক্ষ বানিয়ে কলেজের অর্থ ও সম্পদ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া। তাদের মধ্যে দুইজন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় অনেকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নূরুল আলম (শুভ) বলেন, ‘অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে জালিয়াতি ও তথ্য গোপনের অভিযোগ সঠিক নয়। সকল নিয়মনীতি মেনে ও স্বচ্ছতার মাধ্যমে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। সিটি কলেজটি উচ্চমাধ্যমিক কলেজ হিসেবে অনুমোদিত।
তবে কেন উচ্চমাধ্যমিক কলেজে ডিগ্রিতে শিক্ষার্থী ভর্তি ও শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি নূরুল আলম (শুভ)।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সংশ্লিষ্ট ১৬টি দফতরে পাঠানো অভিযোগে অধ্যক্ষ নিয়োগ বিজ্ঞাপন বাতিল, বর্তমান পরিচালনা কমিটি ভেঙে দেওয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
সচেতন মহল মনে করেন, বিষয়টি তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।