হাজী ইয়াছিনকে মনোনয়ন দাবিতে টানা ১১ দিন ধরে তৃণমূলের অবস্থান কর্মসূচি কুমিল্লায়
হাবিবুর রহমান মুন্না।।
কুমিল্লা–০৬ (সদর, সদর দক্ষিণ, সিটি কর্পোরেশন ও সেনানিবাস) আসনে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে টানা ১১ দিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) সকালে থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরীর কান্দিরপাড়স্থ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে এ অবস্থান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকেই বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন হাতে দলীয় কার্যালয়ে ভিড় করেন।
নেতাকর্মীরা জানান, গত ৩ নভেম্বর রাতে মহাসড়ক অবরোধের মধ্য দিয়ে এ আন্দোলনের সূচনা হয়। পরদিন ৪ নভেম্বর নগরীর কান্দিরপাড়সহ বিভিন্ন স্থানে মশাল মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এরপর একে একে নারী সমর্থকদের সমাবেশ, গণ–ইফতার, দোয়া মাহফিল, সংবাদ সম্মেলন, তারুণ্যের সমাবেশ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে টানা ১১ দিন ধরে তারা আন্দোলন অব্যাহত রেখেছেন।
বৃহস্পতিবারের অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেন মহানগর, সদর উপজেলা, সদর দক্ষিণ উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী।
অবস্থান কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা ও সাবেক মন্ত্রী আকবর হোসেনের সাবেক পিএস আমিনুল ইসলাম, আদর্শ সদর উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা হাজী নাসির উদ্দিন, সদর উপজেলা বিএনপির সদস্য হাজী শাহজাহান, মামুনুর রশিদ, জগন্নাথপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সেলিম মেম্বার, পাঁচথুবী ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. কাইয়ূম, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম–আহ্বায়ক সালমান সাঈদ, মহানগর যুবদলের যুগ্ম–আহ্বায়ক সাজ্জাদ হোসেন, যুবদল নেতা মনছুর নিজামী, আরিফুর রহমান সুমন, আমড়াতলী ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক মো. আলমগীর হোসেন, সদস্য সচিব শাহজাহান সাজু, মহানগর ছাত্রদল নেতা রবিন খানসহ অনেকে।
বক্তারা অভিযোগ করেন, হাজী ইয়াছিন কেবল একজন রাজনীতিক নন, তিনি দলের সংকটে আশ্রয়দাতা ও নিবেদিতপ্রাণ সংগঠক। দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে থেকে আইনি ও আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন, আন্দোলন ও সংগঠন গঠনে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। অথচ এ আসনে এমন এক প্রার্থীর নাম আলোচনায় এসেছে, যিনি এলাকার রাজনীতি বা জনগণের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন—এতে তৃণমূলের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
আমড়াতলী ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব শাহজাহান সাজু বলেন, “আমরা যাঁর নেতৃত্বে রাজনীতি করি, যিনি হামলা-মামলার সময় আমাদের আশ্রয় দেন, সেই ইয়াছিন ভাইয়ের পরিবর্তে বাইরের কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হলে আমরা তা মেনে নেব না।”
মহানগর যুবদল নেতা মনছুর নিজামী বলেন, “কুমিল্লা–৬ আসনে বিএনপির রাজনীতির প্রাণকেন্দ্রে আছেন হাজী ইয়াছিন। তিনি নিবেদিতপ্রাণ ও গ্রহণযোগ্য নেতা, তাঁকে বাদ দিয়ে এ আসনে কোনো গণভিত্তিক রাজনীতি টিকবে না।”
যুবদল নেতা আরিফুর রহমান সুমন বলেন, “আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের দাবি জানাচ্ছি। গণস্বাক্ষর, দোয়া মাহফিল, ইফতার—সব কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা তৃণমূলের বার্তা কেন্দ্রে পৌঁছে দিচ্ছি। আশা করি দল সেই বার্তাকে সম্মান জানাবে।”
অবস্থান কর্মসূচি শেষে নেতাকর্মীরা ঘোষণা দেন—তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন ও কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।


