গাজীপুরে শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় এক শিক্ষককে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে। রবিবার দুপুরে উপজেলার চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় বঙ্গবন্ধু সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
আহত ব্যবসায় শিক্ষা শাখার সহকারী শিক্ষক মো. বসির উদ্দিনকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে যুবদলের জেলা ও উপজেলার কয়েকজন নেতার নাম উঠে এসেছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বরাতে জানা যায়, রবিবার দুপুরে বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমারের সঙ্গে কথা বলছিলেন সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিন। ঠিক সে সময় জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনি, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রিপন আহমেদ, এবং কর্মী রাকিব হাসান ও তাজিদ মিয়া লাঠিসোঁটা নিয়ে সেখানে প্রবেশ করেন।
তারা বসির উদ্দিনকে টেনে-হিঁচড়ে বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের কাছে নিয়ে যান এবং এলোপাতাড়ি মারধর করতে থাকেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী রিজভী আহাম্মেদ সজিব তাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও নির্মমভাবে পেটানো হয়। পরে বিদ্যালয়ের দপ্তরি ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করেন এবং দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনন্দ কুমার বলেন, “যুবদল নেতা রাশেদুল ইসলাম রনি, রাকিব হোসেনসহ কয়েকজন বিদ্যালয়ে ঢুকে সহকারী শিক্ষক বসির উদ্দিনকে টেনে নিয়ে গিয়ে মারধর করেন। বিষয়টি খুবই নিন্দনীয়।”
অভিযোগের বিষয়ে জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম রনি দাবি করেন, ওই শিক্ষক আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এজন্যই তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে গাজীপুর জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আতাউর রহমান মোল্লা বলেন, “যদি কোনো যুবদল নেতা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কালিয়াকৈর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জামিল হোসেন জানান, “একটি পক্ষ ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে তাকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে। এর জের ধরেই যুবদলের কয়েকজন কর্মী তাকে মারধর করেছে।এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
স্থানীয়দের একাংশ জানিয়েছেন, শিক্ষক বসির উদ্দিন ছাত্র আন্দোলন দমনে ভূমিকা রাখতেন এবং ছাত্রছাত্রীদের ভয় দেখিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধা দিতেন। তিনি নাকি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। আহত শিক্ষক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঘটনাটি তদন্ত করছে এবং দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছে।