আবাসন আছে, থাকার লোক নেই

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার খলিশাডহুরা এলাকায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে রয়েছে সারি সারি আধা পাকা ১৭টি ঘর। প্রতিটি ঘরে রয়েছে দুটি কক্ষ, একটি রান্নাঘর ও একটি শৌচাগার। রয়েছে বিদ্যুৎ আর সুপেয় পানির জন্য গভীর নলকূপ ব্যবস্থাও। প্রতিটি ঘর তৈরিতে সরকার থেকে বরাদ্দ ছিল ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা। সেখানের ১৭টি ঘরের মধ্যে ১৬টিই ফাঁকা পড়ে আছে। অভিযোগ উঠেছে, সঠিক বিবেচনায় ঘরগুলো বরাদ্দ না দেওয়ার ফলে বেশির ভাগ সুবিধাভোগী বরাদ্দ পাওয়া ঘরগুলোতে থাকছে না।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার খলিশাডহুরা এলাকায় ২০২০-২১ অর্থবছরে বিগত সরকারের আমলে ভুমিহীনদের আশ্রয়ন প্রকল্পের ১৭টি ঘর নির্মাণ করা হয়। নির্মাণের কয়েক মাসের মধ্যে ঘরগুলো বরাদ্ধ প্রাপ্তদের কাছে বুঝিয়েও দেওয়া হয়।
২০ জানুয়ারী দুপুরে ওই আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, ১টি ঘর ছাড়া বাকি ১৬টি ঘরের তালায় মরিচা পড়ে নষ্ট হবার উপক্রম। আশ্রয়নের বাসিন্দা মোসলেম উদ্দিনের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম(৩০) জানান, এই আশ্রয়নে যাদের ঘর ও জমি বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে তাদের ১৫ জন বালিয়াটি ইউনিয়নের বাসিন্দা। উপজেলা সদর বালিয়াটি ইউনিয়নে অবস্থিত। উপজেলা সদর থেকে ১৫ কিঃমিঃ দুরে অজপাড়ায় অবস্থিত এই আশ্রয়ন প্রকল্প। এখানে আয় রোজগারের কোন পথ নেই। বালিয়াটি, সাটুরিয়া গিয়ে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে হয়। এখানে বাস করে তারা আয় উপার্জন করতে পারে না। এত দূরত্বে থেকে তাদের জীবন যাপন খুবই কষ্টকর। তাই তারা এখানে থাকেন না। কেউ কেউ অন্যত্র বাসা ভাড়া করে থাকেন। আশ্রয়ন প্রকল্পের পাশে বাস করা সাহেব আলী জানান, রাত হলে এখানে ভূতুড়ে পরিবেশ তৈরী হয়। বখাটেরা নেশা করার উপযুক্ত স্থান হিসেবে ব্যবহার করে।
আরেক জন আব্দুল বারেক (৮০) জানান আশ্রয়ন প্রকল্প যে জমিতে হয়েছে সে খাস জমিতে তার ঘর ছিল। প্রকল্প করার সময় তাকে একটি ঘর দেবার কথা বলা হলেও সে ঘর পায়নি ।
আশ্রয়ন প্রকল্পে বরাদ্ধ পেয়েছেন হাজিপুর গ্রামের ৩ জন, বালিয়াটি গ্রামের ১২ জন ও গোপালপুর গ্রামের দুই জন তারা হলেন : জাহাঙ্গীর, পাপন, ইব্রাহিম, আয়নাল হক, মীর হোসেন, আন্না রানী কর্মকার, বেগম, দুলাল দাস, হানিফ আলী, সুফিয়া, সজীব, ভেলা, মোসলেম, শরীফ, আবুল হোসেন, রনী বালা ও করিম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, বন্ধ থাকা এই সব ঘরের বারান্দা, খোলা জায়গায় অপরাধীরা রাতে নানা অপকর্ম করে বেড়ায়। বরাদ্ধপ্রাপ্ত দের সঠিক যাচাই বাচাই করে ঘর ও জমি বরাদ্ধ দেওয়া হয়নি।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: রমজান আলী বলেন, স্থানীয় অনেক ভূমিহীন থাকলেও তাদের ঘর বরাদ্ধ না দিয়ে অন্য ইউনিয়নের লোকজনকে ঘর বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। অন্য এলাকার লোকজন ঘর গুলোতে থাকছে না। এ এলাকার ভুমিহীনদের ঘরগুলো বরাদ্ধ দেওয়া হলে ঘরগুলো সঠিক ব্যবহার হতো।