বৃদ্ধ মিষ্টির কারিগরকে দাঁত ভেঙে দিলেন হোটেল মালিক

বায়েজিদ, পলাশবাড়ী (গাইবান্ধা) :
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে ভবেশ চন্দ্র সরকার (৭২) নামে এক মিষ্টির কারিগরকে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে হোটেল মালিক আবু তালেবের বিরুদ্ধে। এসময় গাছের খড়ি দিয়ে পিটিয়ে তার হাত, মুখ ও শরীরে ফোলা জখমসহ একটি দাঁত ভেঙে দেন তিনি। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
শনিবার (৩১ মে) দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলা শহরের চৌমাথা মোড়ের সাদুল্লাপুর মিষ্টান্ন ভান্ডার নামের একটি হোটেলে। এ ঘটনায় হামলার শিকার জামুডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা ভুক্তভোগী ভবেশ চন্দ্র সরকার বাদি হয়ে সাদুল্লাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত হোটেল মালিক আবুল তালেব (৪০) বনগ্রাম ইউনিয়নের জয়েনপুর গ্রামের মৃত্যু ফজলুল হকের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভবেশ চন্দ্র সরকার ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, মিষ্টির কারিগর হিসেবে হোটেলে কাজ করি। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে হোটেলের ভিতরে মিষ্টি বানানোর কাজ করছিলাম। হোটেলের একটি ফ্রিজের বৈদ্যুতিক লাইনের তার ইদুর কেটে ফেলে। কিন্তু বিষয়টি আমার জানা না থাকলেও হোটেল মালিক আবু তালেব আমাকে গালিগালাজ করেন। এসময় তাকে গালিগালাজ করতে নিষেধ করি এবং হোটেল কাজ করবো না বলে জানাই। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আবু তালেব আমাকে কিল-ঘুষি ও লাথি দেয়। এক পর্যায়ে আবু তালেব গাছের খড়ি দিয়ে এলোপাথারী পিটিয়ে আমার হাত, মুখ ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এতে উপরের মাড়ির একটি দাঁত ভেঙে গেছে এবং একটির গোড়া নড়ে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হলে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে খবর পেয়ে আমার ছেলে আশপাশের ব্যবসায়ীর সহায়তায় আমাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে।
এ সময় ভবেশ চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, শুধু আমাকে নয়, হোটেল মালিক আবু তালেব এরআগেও নানা কারণে শ্রমিকদের মারধরসহ নির্যাতন করেন। ঘটনার পর থেকে মামলা না করতে হুমকি দেয়াসহ পুলিশকে ম্যানেজের চেষ্টা করছে তালেব। তবে এমন অমানুষিক নির্যাতনের ঘটনায় এবার তার সঠিক ও সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন তিনি।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজউদ্দিন খন্দকার জানান, হোটেল শ্রমিককে মারধরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সাদুল্লাপুর বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন বলেন, হোটেল শ্রমিকদের মধ্যে ভূল-ভ্রান্তি যদি হয়ে থাকে তবে তাকে বে-আইনি ভাবে মারপিট করা ঠিক হয়নি। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
তবে এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে হোটেলে গিয়েও পাওয়া যায়নি অভিযুক্ত আবু তালেবকে। ঘটনার পর থেকে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। এ কারণে তার মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।