সারাদেশ

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভায় জ্বলে না সড়কবাতি, চরম দুর্ভোগে

সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে।

বাসিন্দাদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।

ঘটছে চুরি-ছিনতাইও।

 মোঃ হামিদুজ্জামান জলিল স্টাফ রিপোর্টার।
প্রথম শ্রেণির পৌরসভা কালীগঞ্জ । তবে এই শহরের অধিকাংশ এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সড়কবাতি নেই। অনেক জায়গায় সড়কবাতি স্থাপনের জন্য ল্যাম্পপোস্ট বা বৈদ্যুতিক খুঁটি থাকলেও, সেগুলোতে স্থাপিত বাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে, অনেক স্থানে  ল্যামপোস্ট থাকলেও তাতে নেয় লাইট । সড়কবাতি না থাকায় শহরবাসীকে বাজারের রাস্তাঘাট ও প্রধান সড়কে চলাচল করতে হয় সড়কের পাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আলোতে। মেইন বাসস্ট্যান্ড থেকে শহর অভিমুখে রাস্তার মাঝখান দিয়ে থাকা ডিভাইডারের মাঝে  ১৩ টি ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে। যেখানে ২৬ টি লাইটের মাধ্যমে রাতে আলো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। অথচ ২৬  টি লাইটের মধ্যে ১৫ টি লাইটই নষ্ট। বাকিগুলো জ্বলে অনেকটা নিভু-নিভু অবস্থায়। আর এসব ল্যাম্পপোস্টে অবৈধ বিলবোর্ড ঝুললেও পৌর কর্তৃপক্ষ এগুলো অপসারণে নেই না কোন ব্যবস্থা।
সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোর। সড়কবাতি না থাকায় পাড়া-মহল্লার অনেক এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। বাসিন্দাদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ঘটছে চুরি-ছিনতাইও। ৩ নং ওয়ার্ড ফয়লা হাসপাতাল সড়ক হয়ে  হেলাই ব্রীজ পর্যন্ত কোন বৈদ্যুতিক খুটিতে লাইট জ্বলে না নিয়মিত।মোবারকগঞ্জ রেলস্টেশন সড়কে অধিকাংশ লাইট নষ্ট। যে কারণে রাতে রেলের ঘুটঘুটে অন্ধকারে বিপাকে পড়েন রেলের যাত্রীরা।আর অন্ধকার থাকায় অনেক সময় ছিনতাইকারীর কবলেও পড়তে হয় তাদেরকে।
এরপরও এ বিষয়ে নজর নেই পৌর কর্তৃপক্ষের। এমনকি পৌরসভায় লাইট লাগানোর কথা বললেও তারা তা মোটেও আমলে নেন না।  গত মঙ্গল ও বুধবার  পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ সড়কেই অনেক দূর পরপর দু–একটা লাইট জ্বলে, তারপর আবার অন্ধকার। সড়কের পাশে ল্যাম্পপোস্ট  থাকলেও সেগুলোর বাতি নষ্ট থাকায় আলো জ্বলছে না। বর্তমানে সড়কগুলোতে যে পরিমাণ সড়কবাতি জ্বলছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপর্যাপ্ত। মূল শহর, বাণিজ্যিক এলাকা ও আবাসিক এলাকাগুলোতে সড়কবাতি কিছুটা দেখা গেলেও পৌরসভার পাড়া ও মহল্লার অধিকাংশ সড়কে সড়কবাতি নেই।
পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শিবনগর এলাকার বাসিন্দা মানু দাস বলেন, আমার  এলাকায় বৈদ্যুতিক খুঁটিতে  বাতি লাগানোর অল্প কিছুদিনের মধ্যে প্রায় সব বাতি নষ্ট হয়ে যায়। সড়কবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হয়। অথচ প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে শহরের অন্য বাসিন্দাদের মতো তাঁদেরকেও কর ঠিকই দিতে হচ্ছে। পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ফয়লা গ্রামের  বাসিন্দা শাহিনুর রহমান  বলেন, ১৭ বছর অন্ধকারে ছিলাম এখনো আছি। সরকারি হাসপাতালে  আমাদের গ্রামের ভেতর দিয়ে যেতে হয়।  অন্তত হাসপাতালে যাওয়া আসা রোগীদের সুবিধার কথা চিন্তা করে লাইটগুলো ঠিকঠাকভাবে জ্বালানো উচিত। আর মহল্লার গলির রাস্তাগুলোর সড়কবাতিতো জ্বলেই না। সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। সড়কবাতি না থাকার কারণে এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার  জনতা মোড়, কালীবাড়ি মোড়, কাপুড়িয়াপট্টি, মুরগীহাটা, নলডাঙ্গা রোড, গান্নার রোড,চাপালি, কলেজপাড়া, ভূষণ হাই স্কুল রোড, বৈশাখী মোড়, আড়পাড়া, চাঁচড়া, হেলাই,মাস্টার পাড়া, নিশ্চিন্তপুর, খয়ের তলা, বাকুলিয়া, কাশিপুর, ঈশ্বেরবা এলাকায়  পৌরবাসীদের চলাচল গভীর রাত পর্যন্ত।  বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, অধিকাংশ সড়কেই বাতি জ্বলে না। পথচারীদের চলাচল হচ্ছে সড়কের পাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আলোতে।
কথা হয় কাপুড়িয়াপট্টি মোড়ে এক ফল বিক্রেতার  সঙ্গে। তিনি বলেন, দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেলে পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। কিছু কিছু দোকানদার নিরাপত্তার জন্য দোকানের সামনে আলো জ্বালিয়ে রেখে যান। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালীগঞ্জ পৌরসভায় কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানান, পৌরসভা কার্যালয়ে লাইট জ্বললেই হবে। পৌর শহর বা এলাকায় লাইট জ্বললো কি জ্বলল না তা খেয়াল কে রাখবে। ৪৫ টাকা পিস কেনা লাইট কয়দিনইবা চলে। খোঁজ নিয়ে দেখলে দেখা যাবে ওই লাইটেরই বিল হয়েছে ডাবলেরও বেশি।পৌরসভা এখন অন্য স্টাইলে চলছে। পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং পৌর নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা কবীর হাচান  বলেন,নানা কারণে ল্যাম্পপোস্ট কিংবা বৈদ্যুতিক খুঁটিতে থাকা বাল্বগুলো নষ্ট হয়ে থাকে। লাইটপোস্টে বাতি নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলো সংস্কার করা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। নিম্নমানের লাইট ব্যবহার করার ব্যাপারটি তিনি অস্বীকার করেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক হলেন সাব্বির আহমেদ সামাদ

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে প্রচার সম্পাদক পদে দায়িত্ব পেয়েছেন জেলার একনিষ্ঠ ও ত্যাগী ছাত্রনেতা সাব্বির আহমেদ সামাদ।
সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,