বৃষ্টির পানিতে ভেঙ্গে গেল পঞ্চগড় সদরের সেতু, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হাজারো মানুষের

একেএম বজলুর রহমান , পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ের সদর উপজেলার কামাত কাজল দিঘি ইউনিয়নের কুচিয়ামোড় ও বন্দরপাড়া এলাকার সংযোগ সড়কের একটি সুইগেট সেতু ধসে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টার মুষলধারে বৃষ্টির কারণে সেতুর দুই পাশে মাটি সরে গিয়ে সংযোগ সড়ক বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। পরে বৃষ্টির পানি সরাসরি সেতুর নিচে গিয়ে মাটি ধুয়ে দেয়। এতে সেতুর ভেতরের অংশ দুর্বল হয়ে পুরো সেতুটি ভেঙ্গে পড়ে।
স্থানীয়রা জানান, এই ব্রিজটি ভেঙে যাওয়ায় হাজারো মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। এই রাস্তা ছাড়া অন্য কোনো সরাসরি বিকল্প পথ নেই। বিকল্প পথে যেতে হলে কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার ঘুরে যেতে হবে। ফলে রাতে রোগী পরিবহন, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ এবং শিক্ষার্থীদের যাতায়াত মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে।
সেতুর দুই পাশে থাকা পাঁচটি দোকানও পানির তীব্র স্রোতে ভেসে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত দোকানদাররা জানান, তারা রাত ১১টার পর দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। ভোরে এসে দেখেন দোকানের কিছুই অবশিষ্ট নেই।
জমির উদ্দিন নামে একজন দোকানদার বলেন, আমার দোকানে বিভিন্ন মালামাল ছিল, সব মিলিয়ে প্রায় আড়াই লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছে। কিছুই উদ্ধার করা যায়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা ইউসুফ আলী বলেন, এই সেতুটাই ছিল আমাদের একমাত্র ভরসা। সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় জরুরি রোগী হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কৃষকরা তাদের কৃষিপণ্য বাজারে নিয়ে যেতে পারছেন না।
আরেকজন বাসিন্দা বলেন, রাতে কারো অসুস্থ হলে অ্যাম্বুলেন্সও এখানে আসতে পারবে না।
প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেনো দ্রুত অন্তত একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করে দেন। কুচিয়ামোড় ইবতেদায়ী মাদরাসার প্রধান শিক্ষক মনিরা খাতুন বলেন, সেতুটি ভেঙ্গে যাওয়ায় স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারবে না। তাদের কথা ভেবে দ্রুত অন্তত একটি অস্থায়ী ব্রিজ নির্মাণ করা জরুরি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় পঞ্চগড়ে ৩৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সামনের কয়েক দিন বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন বলেন, আমরা সরজমিনে পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। ওই ব্রিজের সংস্কারের বরাদ্দ এসেছিল, টেন্ডারও করা হয়েছিল। কিন্তু এরই মধ্যে ব্রিজটি ভেঙে গেছে। নতুন ব্রিজ নির্মাণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পানি কমে গেলে অস্থায়ীভাবে ব্রিজ বানানো হবে চলাচলের জন্য।