বিদায়ের আনন্দটাই বাকি জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে বিদায়ী সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান।
এনামুল মবিন(সবুজ)
স্টাফ রিপোর্টার.
দিনাজপুরের খানসামায় সাকোরপাড় আকবর আলীশাহ্ দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমানের অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১ নভেম্বর) সাকোরপাড় আকবর আলীশাহ্ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্নার সভাপতিত্বে শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
সাকোরপাড় আকবর আলীশাহ্ দাখিল মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী জিন্না বলেন, একজন জ্ঞানের আলো দানকারী শিক্ষক কে বিদায় জানাতে হচ্ছে। তিনি এ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ৩৭ বছর শিক্ষকতা করেছেন। জীবনে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার অনন্য এক প্রতিচ্ছবি হয়ে উঠেছিলেন। আজকে এ মহান শিক্ষককে বিদায় জানাতে হচ্ছে । আমরা তার উত্তরোত্তর সফলতা কামনা করছি।
মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষিকা মোছাঃ রশিদা খাতুন বলেন, মিজানুর রহমান স্যার ছিলেন ছাত্র ও সহকর্মীদের কাছে অত্যন্ত প্রিয় একজন মানুষ। তাঁর ন্যায়নীতি ও আদর্শ আমাদের জন্য অনুকরণীয় হয়ে থাকবে।
মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বলেন, আজকের এই বিশেষ দিনে আমরা এখানে সমবেত হয়েছি আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক মিজানুর রহমান স্যার এর বিদায় উপলক্ষে। এই মুহূর্তটি যেমন আনন্দের, তেমনি কিছুটা বেদনাদায়কও। মিজানুর রহমান স্যার শুধু একজন শিক্ষকই নন, তিনি আমাদের অনুপ্রেরণার উৎস। স্যারের জ্ঞানের গভীরতা, শিক্ষাদানের দক্ষতা এবং শৃঙ্খলা আমাদের সকলের জন্য এক আদর্শ হয়ে থাকবে। স্যারের অসাধারণ পাণ্ডিত্য এবং আন্তরিকতার জন্য আমরা চিরকাল স্যারের কাছে ঋণী।
তারা আরো বলেন, তিনি আমাদের শুধু বইয়ের জ্ঞান দেননি, জীবনের সঠিক পথের দিকনির্দেশনাও দিয়েছেন। স্যারের নৈতিক শিক্ষা এবং আদর্শ আমাদের ভবিষ্যৎ গঠনে অমূল্য ভূমিকা পালন করবে। আমরা স্যারের দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করি। আমাদের সকলের পক্ষ থেকে, স্যারের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা জানিয়ে বিদায় জানাচ্ছি।
বিদায় সংবর্ধনায় অশ্রুসিক্ত নয়নে বিদায়ী শিক্ষক মোঃ মিজানুর রহমান বললেন, আমার কর্মজীবনে সেরা সঞ্চয় পেয়েছি আজ আপনাদের ভালোবাসায়। এই বিদ্যালয় আমার জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন। এখানে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমার কাছে অমূল্য। ০১/১১/১৯৮৮ সালে যোগদান এর পর থেকে আজ ২০২৫ সাল দীর্ঘ এই ৩৭টি বছর আমার পরিবার এর মতো ছায়া দিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি সব সময়। শিক্ষার্থীরা যখন ভালো ফল করে কিংবা সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়, তখনই মনে হয় আমার জীবন সার্থক। দীর্ঘ কর্মজীবনে নিজের অজান্তে যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, কারো প্রতি অন্যায় করে থাকি তাহলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী।
তিনি আরো বলেন, জীবনের বেশির ভাগ সময়টা বিদ্যালয়ে কাটালাম। আজ থেকে আর বিদ্যালয়ে আসা হবে না। মনটা খারাপ হয়ে গেল। কিন্তু সহকর্মী শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা যেভাবে বিদায় জানালেন, মনটা ভরে গেল। বিদায়ের আনন্দটাই বাকি জীবনের স্মৃতি হয়ে থাকবে। ভালো থাকুক সাকোরপাড় আকবর আলীশাহ্ দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক- শিক্ষার্থী,অভিভাবক ও শুভাকাঙ্খিরা।
উক্ত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান শেষে, উক্ত বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে স্মৃতি হিসেবে উপহার এবং ক্রেস্ট দিয়ে বিদায় অনুষ্ঠানটি স্মরণীয় করে রাখা হয়।


