জাকির নায়েকের ঢাকায় আগমন নিয়ে যা বললেন ধর্ম উপদেষ্টা
চলতি মাসের শেষ দিকে ঢাকায় আসার কথা রয়েছে ডা. জাকির নায়েকের। তবে তার আগমনকে মোটেও স্বাগত জানাচ্ছে না ভারত। গত ৩০ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাংলাদেশকে এই বিষয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিল। এবার বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন।
প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী, জাকির নায়েক আগামী ২৮ ও ২৯ নভেম্বর ঢাকায় একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন। তবে ভারতের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। দেশে তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে, যার কারণে ভারত চাইছে, যদি তিনি ঢাকায় আসেন, তাকে ভারতের হাতে হস্তান্তর করার সুযোগ পান। বিষয়টি ভারতের গণমাধ্যমেও বলা হয়েছে।
জাকির নায়েকের ঢাকায় আগমনের বিষয়ে সম্প্রতি ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের একটি প্রতিনিধি দল ধর্ম উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। তবে এ বিষয়ে তার কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেই বলে জানান ড. খালিদ হোসেন।
কেন, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘জাকির সাহেবকে যারা আনতে চাচ্ছেন, তাদের একটা দল আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। আমি তাদেরকে বলেছি যে এটা আমার ব্যাপার নয়। এটা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার, তাদের এখতিয়ারে। আপনারা জানেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইতোমধ্যে বলেছেন যে তিনি এই ব্যাপারে অবহিত নন। বিদেশী কোনো মেহমান যদি দেশে আসেন, এটা পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র ডিল করে থাকেন। তাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে তার (জাকির নায়েক), আমি ধর্ম উপদেষ্টা হিসেবে আমি কোনো এখতিয়ার রাখি না, সিদ্ধান্তও আমি দিতে পারি না। এটা দেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, এটার সঙ্গে কোনো আইন জড়িত কি না, বা পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যিনি আছেন, তিনি দেবেন কি না, ওই দুই মন্ত্রণালয়ের ব্যাপার আমার এখতিয়ারে আসে না।’
পুরো বিষয়টি স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপরই ছেড়ে দিয়েছেন ধর্ম উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমার সম্মতি অসম্মতি বড় কথা নয়। কোনো মেহমান বাংলাদেশে আসবেন, তার দেখভাল করবেন স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আমার পছন্দ অপছন্দ বড় কথা নয়। তারা যদি অনুমতি দেন, তাহলে তিনি আসবেন।’
এর আগে গত ৩০ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রনধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘জাকির নায়েক একজন পলাতক আসামি। তিনি ভারতে ওয়ান্টেড। তাই আমরা আশা করি, তিনি যেখানেই যান না কেন, সংশ্লিষ্ট দেশ তার বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে এবং আমাদের নিরাপত্তা উদ্বেগের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখবে।’
বিশিষ্ট এই ইসলামি স্কলারের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্রের মন্তব্য বাংলাদেশের নজরে এসেছে বলে জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। মুখপাত্র এস. এম. মাহবুবুল আলম বাসসকে বলেছিলেন, ‘ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র একজন বিশিষ্ট ইসলামি স্কলার বা ধর্মীয় ব্যক্তিত্বের সম্ভাব্য বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে যে মন্তব্য করেছেন, তা আমাদের নজরে এসেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরাও বিশ্বাস করি যে, কোনো দেশের অন্য দেশের কোনো অভিযুক্ত বা পলাতক ব্যক্তিকে আশ্রয় দেওয়া উচিত নয়।’





