সারাদেশ

দেবীগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষনের চেষ্টায় থানায় অভিযোগ, পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক 

একেএম বজলুর রহমান, পঞ্চগড়
পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে। লিখিত অভিযোগ দেয়ার পরেও তদন্তে গিয়ে পুলিশের ভূমিকা রহস্যজনক বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ৩০ জানুয়ারী রাতে সোনাহার ইউনিয়নের মাঝপাড়া এলাকায়।
এঘটনায় দেবীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়ার পর পহেলা জানুয়ারী দেবীগঞ্জ থানার এসআই ইমরান হোসেন তদন্ত করার জন্য যান। তদন্তে গিয়ে স্থানীয় একাধিক লোকজন আলমগীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন এবং ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা ও আহত করার ঘটনার
সত্যতা পেলেও তিনি কোন ব্যবস্থা নেননি। সে মামলা এজাহার ভুক্তও করা হয়নি। ভুক্তভোগীর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করে বলেন, আসামীর কাছ থেকে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছে তদন্তকারী কর্মকর্তা ইমরান হোসেন।
তবে টাকা নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে
দেবীগঞ্জ থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ইমরান হোসেন জানান, আসামীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নেয়ার কথা সত্যি না। ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। তার বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ের মধ্যেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
৪ জানুয়ারি ঘটনাস্থলে গিয়ে সরজমিনে গিয়ে মোজাহার হোসেন, গাজী রহমান, হাফিজুল, মশিউর রহমান, শহিদুল ইসলাম, সাজিনা বেগমসহ স্থানীয় লোকজনদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আলমগীর এর আগে ৪/৫ টি ধর্ষনের চেষ্টা ও ধর্ষনের ঘটনা ঘটিয়েছে। প্রত্যেকবার টাকার বিনিময়ে আপোষ করে ছাড়া পান। সে সব সময় ইউপি সদস্য শাহিনুরের সাথে চলাফেরা করার কারনে তার সাহসেই এসব ঘটনা ঘটাচ্ছেন। ইতিপূর্বে সোনাহার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ও বর্তমান চেয়ারম্যান, সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যরা আলমগীরের বিচার করেছেন। স্থানীয় গ্রাম পুলিশও আলমগীরের বিভিন্ন অপকর্মের কথা স্বীকার করেন। তারা বলেন, আলমগীরের কাছে কোন নারী নিরাপদ না। সুযোগ পেলেই নারীদের ধর্ষনের চেষ্টা চালান। তার বাড়িতে বউ বাচ্চা থাকার পরেও একের পর এক ঘটনার জম্ম দিচ্ছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, দেবীগঞ্জ উপজেলার সোনাহার ইউনিয়নের মাঝাপাড়া এলাকার মনিরুল ইসলামের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম ৩০ জানুয়ারী রাতে বাড়ির পার্শ্বে অন্য বাড়িতে তরকারি আনার জন্য গেলে আলমগীর হোসেন পূর্ব থেকে ওৎপেতে থাকা অবস্থায় মোর্শেদা বেগমকে দেখে এগিয়ে এসে মুখ চেপে ধরে কিল-ঘুষি মারতে থাকে। তাতে সে গুরুতর আহত হয়। এরপর তার পরনের জামা ওড়না ছিড়ে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করে। পরে ধর্ষনের হাত থেকে বাচাঁর জন্য চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
মনিরুল ইসলাম বলেন, ৩০ জানুয়ারী আমার স্ত্রী ঘর থেকে বের হলে আলমগীর মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক বাহিরে নিয়ে ধর্ষনের চেষ্টা করে। আমার স্ত্রী বাধা দিলে তার সাথে হাতাহাতি হয়। এক পর্যায়ে আলমগীর আমার স্ত্রীর মুখে ঘুষি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দেয়। পরে তাকে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে চিকিৎসা করাই। তিনি আরও বলেন, ইতিপূর্বেও আমার স্ত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক করার জন্য চেষ্টা করছিল। সে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা করছিল। এনিয়ে এরআগে গ্রাম্য ভাবে তার বিচারও করা হয়েছিল৷
মোর্শেদা বেগম বলেন, আলমগীরের অত্যাচারে আমার এখন সংসার টিকতেছেনা। আমি এ ঘটনার বিচার না পেলে আত্মহত্যা ছাড়া কোন উপায় থাকবেনা।
দেবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সোহেল রানা জানান, ঘটনাস্থলে তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেছে। আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

আইনপুর গ্রামে পরিতোষ , সন্তোষ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডে দুর্ঘটনা ঘটে

মৌলভীবাজার প্রতিনিধিঃ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আইনপুর গ্রামের পরিতোষ সূত্রধর ও সন্তোষ সূত্রধর বাড়িতে আগুনে দুর্ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার ০৭/০৮/২৪ ইং