কক্সবাজার সীমান্তে গোলার শব্দ নেই; নৌযান বন্ধ
আলফাজ মামুন নুরি,
হঠাৎ সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান বন্ধ হওয়ায় ভাবিয়ে তুলেছে স্থানীয়দের। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপ আরাকান আর্মি দখলে নেয়ার পর এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে না। এতে করে সীমান্তবাসীর মধ্যে আপাতত স্বস্তি ফিরেছে। তবে নিরাপত্তার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মংডু টাউনশিপ দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি দখলে নেয়ার পর গোলাগুলি বন্ধ রয়েছে। এপারে কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে গোলার বিকট শব্দ ভেসে আসছে না। এতে করে সীমান্তে বসবাসকারীদের মাঝে এক ধরনের ‘স্বস্তি’ ফিরেছে।
তবে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তবর্তী এলাকা মংডু শহর পুরোপুরি আরাকান আর্মি দখলে নেয়ার পর নিরাপত্তার কারণে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে নৌযান চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে উপজেলা প্রশাসন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, টেকনাফ পৌরসভার জালিয়াপাড়া, নয়াপাড়া ও শাহপরীর দ্বীপের লোকজন সীমান্তে লবণ চাষসহ নাফ নদের তীরে টেলা জালে মাছ ধরতে ব্যস্ত ছিল জেলেরা। তবে নাফ নদে আগের মতো দেখা যায়নি জেলে নৌকা।
নাফের তীরে টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটের ভ্রাম্যমাণ দোকানি বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে রাতে মিয়ানমারে গোলাগুলির শব্দে আমাদের র্নিঘুম রাত কেটেছে। কেননা সেদেশে যুদ্ধের কারণে বোমা-গুলির শব্দে এপারে বাড়িঘর বার বার কেঁপে উঠছিল।’
তিনি বলেন, ‘গত দুদিন ধরে পাশের দেশ (রাখাইন) থেকে গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যায়নি। যার ফলে রাতে নির্ভয়ে ঘুমাতে পেরেছি।’
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা আব্দুর রহমান বলেন, ‘গত দুদিন ধরে ওপারে সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়নি। এজন্য আপাতত এপারে দ্বীপের ৩০ হাজার মানুষ স্বস্তিতে আছে। লোকজন চাষাবাদেও ফিরছে।’
টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটের বোট মালিক সমিতির সভাপভি আবদুর রশিদ বলেন, ‘সীমান্তে আগের মতো গোলার বিকট শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও নিরাপত্তার কথা ভেবে সামায়িকভাবে আমাদের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দীন বলেন, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মিয়ানমারের রাখাইন এলাকা দখলে নিয়েছে আরাকান আর্মি। এজন্যই নিরাপত্তার জন্য সীমান্তবর্তী নাফ নদ ও সাগরে মাছ শিকার সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে।
তবে সেন্টমার্টিনে পর্যটকের আগমনসহ দ্বীপবাসীর জন্য ইমার্জেন্সি সাপ্লাইয়ের জন্য কিভাবে ঝুঁকিহীনভাবে নৌযান চলাচল করতে পারে সেজন্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। পাশাপাশি সীমান্তে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের জোরদার টহল রয়েছে।’
টেকনাফ-২ বিজিবির ভারপ্রাপ্ত অধিকনায়ক মেজর সৈয়দ ইশতিয়াক মুর্শেদ বলেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। পাশাপাশি অনুপ্রবেশ রোধসহ সীমান্তে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত রয়েছে বিজিবি।