প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-সংস্কৃতি রক্ষা করেই বাঁচতে হবে

ডেস্ক রিপোর্ট : জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ রিসোর্স সেন্টার ফর ইনডিজেনাস নলেজ বারসিক‘র সহযোগিতায় ‘শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি’,‘কৃষিজমি সুরক্ষায় নাগরিক মঞ্চ’,‘নেত্রকোনা সম্মিলিত যুব সমাজ’,‘জেলা জনসংগঠন সমন্বয় কমিটি’র আয়োজনে“প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় সবুজ সংহতি” শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব বনানী বিশ্বাস,অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সুখময় সরকার, মৃত্তিকা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জনাব মোখলেছুর রহমান, শিক্ষক তানভির হায়াৎ খান, সাংবাদিক ও ছড়াকার শ্যামলেন্দু পাল, লেখক গবেষক পুরবী সম্মানিত, নেত্রকোনা কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও জেলা সবুজ সংহতি কমিটির সভাপতি অমলেন্দু সরকার, শিক্ষা সংস্কৃতি পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলপনা বেগম, নেত্রকোনা জেলা শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির প্রতিনিধি, নেত্রকোনা সম্মিলিত যুব সমাজ, হাওর বাঁচাও আন্দোলনের প্রতিনিধি, কৃষিজমি সুরক্ষায় নাগরিক মঞ্চ ও মদন,আটপাড়া, কলমাকান্দা, নেত্রকোনা সদর উপজেলা ও কেন্দুয়া উপজেলার সবুজ সংহতি কমিটির প্রতিনিধি লেখক,গবেষক,সাংবাদিক,সমমনা ব্যক্তি সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহন করেন। সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন কৃষিপ্রতিবেশবিদ্যা,জলবায়ু ন্যায্যতা ও খাদ্যবিভাগের পরিচালক জনাব সৈয়দ আলী বিশ্বাস। আলোচনার শুরুতেই কৃষকদের পক্ষ থেকে ‘তুলসিমালা’ ও “বিন্নি”ধানের চাল বিনিময়ের মাধ্যমে প্রধান অতিথি মতবিনিময় সভাটি উদ্বোধন করেন। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী জনাব মো. অহিদুর রহমান।
মুক্ত আলোচনায় মদন উপজেলার সবুজ সংহতি কমিটির সাধারণ সম্পাদক নুরে আলম সিদ্দিকী, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জনাব মুখলেছুর রহমান, কৃষক সায়েদ আহমেদ খান, আব্দুল মোতালিব, সাংবাদিক শামীম আহমেদ,প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব ম. কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম, লেখক গবেষক সোহরাম উদ্দীন আকন্দ, নেত্রকোনা সবুজ সংহতি কমিটির সভাপতি ও নেত্রকোনা কালেক্টরেট স্কুলের প্রধান শিক্ষক অমলেন্দু সরকার,সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল,লেখক সহকারী অধ্যাপক পুরবী সম্মানিত,মৃত্তিকা গবেষণার গবেষক জনাব মুখলেছুর রহমান,সম্মিলিত যুব সমাজের পার্থ প্রতিম সরকার করেন। আলোচকরা নেত্রকোনা অঞ্চলের নদী,পুকুর,খেলারমাট,পাহাড়,হাওরে প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষার দাবী জানান, তাঁরা বলেন, নেত্রকোনা অঞ্চলের পরিবেশ ও প্রতিবেশ অনেক বেশী সংকটাপন্ন। প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যসমৃদ্ধ নেত্রকোনা অঞ্চলে যুগ যুগ ধরে ক্ষমতাকে ব্যবহার করা হয়েছে নদীদখল,পাহাড় ধ্বংস,হাওরের পরিবেশ প্রতিবেশকে ধ্বংসের কাজে। নদী-খাল দখল, বায়ুদূষণ, শব্দদূষণ, পানিদূষণ,পাহাড় কাটা ও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংসের মাধ্যমে আামদের এ অঞ্চলকে বিপন্ন করে তুলা হয়েছে। পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়নকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। বাস্তুতন্ত্রকে বিপন্ন করা হয়েছে। আমরা কৃষক, জেলে, কামার, কুমার,পাহাড়ী, কবিরাজ সকলে মিলে আমাদের নদী, নালা, খাল, বিল, হাওর, জলজলাশয়, পাহাড়, বন, গাছ লতা পাতা, মাছ,পাখি,ব্যাঙ, প্রজাপতি, ও সংস্কৃতি রক্ষা করতে হবে। শ্রদ্ধা জাানতে হবে আমাদের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যর প্রতি।যে বৈচিত্র্যর উপর ভর করে পারস্পরিক নির্ভরশীলতায় ঠিকে আছি আমরা আমাদের এই সুন্দর বাংলাদেশ। সবুজ সংহতির মাধ্যমে গড় তুলতে চাই ‘সবুজ নেত্রকোনা’ সবকিছুকে নিয়ে গড়ে তুলতে চাই প্রাকৃতিক ও সাংস্কৃতি বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি স্বপ্নের নেত্রকোনা।
প্রধান অতিথির ভাষণে, নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জনাব বনানী বিশ্বাস বলেন, “ প্রাণ-প্রকৃতি-পরিবেশ-সংস্কৃতি প্রতিটি শব্দই খুবই গুরুত্বপূর্ন, আমাদের স্থানীয় ঐতিহ্যগুলো হারিয়ে ফেলেছি এবং হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বেশ সমৃদ্ধ এগুলো রক্ষা করে,চারপাশ ভালো রেখে আমাদের ভালো থাকতে হবে।আর এক কাজটি কারও একার পক্ষে সম্ভব নয় সকলের সচেতনতা,মানবিকতা সুন্দর চিন্তা নিয়ে এগিয়ে আসতে হবে।” মতবিনিময় সভা শেষে, সবাইকে শীতের পিঠা দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়।
সভায় ১০টি উত্তাপন করা হয়: নেত্রকোনার মগড়া নদীর দখলমুক্ত,দূষণমুক্ত খনন করা, হাওরের ইজারা প্রথাম বাতিল করা,পাহাড়ের বনকে ও বন্যপ্রাণীকে রক্ষায় আগ্রাসী গাছ নয় দেশী প্রজাতির গাছ রোপন করা,সীমান্তের ছড়াগুলো খনন করা,শতবর্ষী গাছ রক্ষা করা, হাওরের মাছ রক্ষায় অভয়াশ্রম তৈরী, হাওরের নদী,খাল খনন করা, পাখি রক্ষায় উদ্যোগ গ্রহন,মাটিকে বাঁচাতে টপসয়েলকে রক্ষা করা,শহরের পুকুর ও খেলার মাঠকে সুরক্ষা করা।