আমা ইট দিয়ে হচ্ছে পাকা সড়ক

মেহেদী হাসান শিপলু – স্টাফ রিপোর্টার, চৌগাছা (যশোর)
চৌগাছায় একটি পাকা সড়ক নির্মানে নানা অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয়রা বলছেন কাজে যে পরিমান অনিয়ম হচ্ছে তাতে ধার্য্যকৃত টাকার অর্ধেকও খরচা হবে কিনা সন্দেহ। বিশেষ করে কাজে ব্যবহৃত ইট সব থেকে নিন্মমনের। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের লোকজন বলছে তারা ইট পাচ্ছে না তাই আমা ইট দিয়ে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।
চৌগাছা-পুড়াপাড়া সড়কটি অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক। বছরের পর বছর এই সড়কটি চলচলের অনুপযোগী হয়ে ছিল। একাধিকবার সড়কটি নিয়ে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় একাধিকবার খবরও প্রকাশ পাই। অবশেষে টরক নড়েছে কর্তৃপক্ষের। পুড়াপাড়া বাজার হতে চৌগাছা অভিমুখে কাজ শুরু হয়েছে। তবে যে নিন্মমানের সামগ্রী এই কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে তাতে সড়কটি কত দিন ভালো থাকে তা নিয়ে সন্দেহে দেখা দিয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে যেয়ে দেখা যায় বাজারে প্রবেশ মুখে বিদ্যুত গতিতে কাজ করে যাচ্ছেন সব ধরনের লেবাররা। তাদের কোনই দোষ না ঠিকাদার তাদের দিয়ে দ্রুত গতিতে কাজ করাচ্ছেন এর করন হচ্ছে সেখানে ব্যবহার করা হচ্ছে নিন্ম মানের সামগ্রী। ছুটির দুই দিনে খারাপ নষ্ট সামগ্রী যত দ্রুত ব্যবহার করা যায়। সড়কের দুই পাশে ভেঙ্গে রাখা ইটের খোয়া দেখে মনে হচ্ছে রং করা মাটি। আসলে সেটি ইটের খোয়া ঠিকই কিন্তু ৪নং আমা ইট। এই ইটের দ্বারা কাজ সম্পন্ন করে ঠিকাদার চৌগাছা ত্যাগ করবেন এবং যথারীতি তিনি টাকাও উঠাবেন, কিন্তু সড়কের ভবিষ্যত কি হবে তা তিনি একটি বারের জন্য উপলব্ধি করছেন না।
পথচারি আরিফ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, উজ্জল বলেন, দেখা দৃষ্টিতে সড়কে যে ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে তাতে সড়ক পাকা না করাই ভালো ছিল। কারণ এই সড়ক বেশি দিন টিকবে না। সড়ক যখন খোড়া হয়েছিল তখন কি পরিমান বালি দিয়েছে তাতেও রয়েছে সন্দেহ।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, যশোরের ঠিকাদার বলে কথা। তিনি ব্যাপক ক্ষমতাধর তাই যেমন ইচ্ছা তেমন ভাবে কাজ শেষ করে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে।
ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজল এন্টারপ্রাইজের মালিক কাজল হোসেন বলেন, ৩০০ মিটার কাজ করা হচ্ছে যার ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় ৮৬ লাখ টাকা। অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ভাটা মালিকরা ইট দিচ্ছে না তাই তুলনা মুলক খারাপ ইট দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। তিনি অনিয়মের বিষয়টি ভাটা মালিকদের উপর চাপিয়ে সরে গেলেন।
এ বিষয়ে চৌগাছা ইট ভাটা মালিক সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল হালিম চঞ্চলের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, কেন্দ্রের নির্দেশে সরকারী কাজে ইট বিক্রি নিষেধ আছে। স্থানীয়দের প্রশ্ন সরকারী কাজে যখন ভাটা মালিকরা ইট দিচ্ছে না, তাহলে ভালো ইটের পরিবর্তে কেন খারাব ইট বিক্রি করছে ? যে ভাটা মালিক খারাপ ইট বিক্রি করেছেন তাহলে তিনিও কি এই অনিয়মের সাথে জড়িত? বিষয়টি তদন্ত করে ওই ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং যে ইট ভাটা ৪নং ইট বিক্রি করেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরী বলে মনে করছেন এলাকাবাসি।