নবীন শিক্ষার্থীদের আগমনে মুখরিত ইবি ক্যাম্পাস

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি:
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর নতুন স্বপ্ন আর বুকভরা আশা নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) সবুজ ক্যাম্পাসে পদার্পণ করেছে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থীরা। কঠোর অধ্যবসায়ের ফলস্বরূপ ভর্তিযুদ্ধে জয়ী হয়ে তারা আজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে। এই অনুভূতি প্রত্যেকের কাছে নতুন এক স্বপ্নের সূচনা।
সোমবার (১১ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে তাদের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ক্লাস। নতুনদের বরণ করে নিতে প্রতিটি বিভাগই আয়োজন করে নানা ধরনের অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইংরেজি, আইন, হিসাব বিজ্ঞান, ইইই-সহ প্রায় সব বিভাগেই ছিল মনোমুগ্ধকর আয়োজন। পরিচয় পর্ব, শিক্ষকদের দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য, এবং ফুল-কলমসহ বিভিন্ন উপহার সামগ্রী প্রদানের মাধ্যমে তাদের বরণ করে নেওয়া হয়। কিছু বিভাগে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেরও আয়োজন।
ক্যাম্পাসের বটতলা, ডায়না চত্বর, ঝাল চত্বর, মফিজ লেক, টিএসসিসি এবং শহীদ মিনার-সহ বিভিন্ন স্থানে নবীন-প্রবীণদের পদচারণায় মুখরিত ছিল পুরো ক্যাম্পাস। একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হওয়া এবং প্রথম দিনের স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি তোলার ব্যস্ততা ছিল চোখে পড়ার মতো। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই নতুন অধ্যায়কে স্মরণীয় করে রাখতে সবাই মেতে ছিল উৎসবে।
উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের নবীন সানজিদা ইসলাম বলেন, আজকে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম দিন। আমি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম যা আজ সত্যি হয়েছে। আজকে আমাদেরকে বিভাগ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নিয়েছে। এখানে সিনিয়ররা খুবই আন্তরিক। অনুষ্ঠান শেষে আমরা ক্যাম্পাস ঘোরাঘুরি করছি। আমাদের ক্যাম্পাস গাছপালায় ভরা যা আমার খুব ভালো লেগেছে।
নবীব শিক্ষার্থী ফারিহা তাবাসসুম বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় আমার প্রথম দিনটি অসাধারণ ছিল। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বড় ভাই-আপুদের ব্যবহার অনেক ভালো ছিল।
আরেক শিক্ষার্থী কানিজ ফাতিমা বলেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। নতুন ক্যাম্পাসে এসে নতুন নতুন বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে পরিচিত হচ্ছি। আজ থেকে নতুন এক জীবন শুরু হচ্ছে আমাদের। আল্লাহ্’র কাছে শুকরিয়া যে আমাকে এখানে পড়র সুযোগ করে দিয়েছেন।
আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের নবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, “আমরা যদি আমাদের ভবিষ্যৎকে উন্নত করতে চাই এবং লক্ষ্যে পৌঁছাতে চাই, তাহলে প্রথমেই আমাদের সময়কে গুরুত্ব দিতে হবে। সময়ের সাথে পরিকল্পনা করে এগোতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় আগের যেকোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের থেকে ভিন্ন। তোমরা প্রাইমারি, হাইস্কুল, মাদ্রাসা, কলেজ -এসব ধাপ অতিক্রম করে এখানে পৌঁছেছো। এখন বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সবসময় নতুন কিছু চিন্তা করবে এবং নতুনত্ব বের করার চেষ্টা করবে। এই পৃথিবী হলো প্রতিযোগিতার মঞ্চ- তোমরা প্রত্যেকেই একজন প্রতিযোগী। তাই শুরুটা হতে হবে দৃঢ় ও ইতিবাচক। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম মূল লক্ষ্য হলো ইসলামী শিক্ষা ও আধুনিক শিক্ষার মধ্যে সমন্বয় সাধন। আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।”