প্রতারণায় চলে সোহেলের জীবন

মেসবাহুল হক মাসুম, উল্লাপাড়া (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চেক জালিয়াতি, এনজিওর টাকা তুলে দেওয়া, পুকুর লিজ সহ নানা বিষয়ে প্রলোভন দেখিয়ে এলাকার সহজ সরল মানুষদের বোকা বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলার দূর্গানগড় ইউনিয়নের বালসাবাড়ী গ্রামের সোহেল রানার বিরুদ্ধে। ইতোমধ্যেই শাহজাদপুর আমলী আদালতে সোহেল রানার বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির মামলা দায়ের করেছে একই গ্রামের নুরুল ইসলাম।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, বাদী নুরুল ইসলামের নিকট থেকে ৪০ লক্ষ টাকা হাওলাত স্বরুপ গত ১৯ মার্চ ২০২৪ইং তারিখে ৩’শ টাকার তিনটি নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর করে বিবাদী সোহেল রানা। উক্ত টাকা পরিশোধের জন্য বিবদী ডাচ বাংলা ব্যাংকের একটি চেক প্রদান করেন যে চেকটি গত ১ এপ্রিল ২০২৪ ইং তারিখে ব্যাংক জমা দিয়ে টাকা উত্তোলন করার কথা থাকে। কিন্তু বাদী উক্ত চেকটি নিয়ে ডাচ্ বাংলা ব্যাংকে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অ্যাকাউন্ট ক্লোজ মর্মে চেকটি ডিজঅনার করে বাদীকে ফেরত দেয়। এরপর বাদী নুরুল ইসলাম পাওনা টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য বিবাদী সোহেল রানার সাথে বারবার যোগাযোগ করলেও সোহেল রানা টাকা পরিশোধ করার নানা তালবাহানা করে এবং প্রতারণামূলক ভাবে উক্ত টাকা আত্মসাৎ করার পায়তারা শুরু করে। এমতবস্থায় বিবাদী সোহেল রানাকে টাকা পরিশোধ করার জন্য আইনজীবির মাধ্যমে গত ০৪ এপ্রিল একটি লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। বর্তমানে শাহজাদপুর উপজেলা আমলী আদালতে মামলা চলমান রয়েছে।
এছাড়াও গাড়াদহ গ্রামের হালিমের নিকট পুকুর লিজ দেওয়ার কথা বলে টাকা আত্মসাৎ এবং এনজিও থেকে টাকা ঋণ দেওয়ার কথা বলে বালসাবাড়ী গ্রামের ওমর ফারুকের নিকট থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও রয়েছে সোহেল রানার বিরুদ্ধে।
এ বিষয়ে গাড়াদহ গ্রামের হালিমের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বালসাবাড়ী গ্রামের সোহেল রানা গত তিন মাস আগে আমাদের গ্রামের একটি পুকুর নিজ দেওয়ার কথা বলে ১০ হাজার টাকা নেয় এবং বলে আমার ভাই এসে আপনাদের সঙ্গে চুক্তিপত্র করবে। এরপর সোহেলের ছোট ভাই আমাদের সাথে দেখা না করলে আমরা খোজ খবর নিয়ে জানতে পারি পুকুরটি অনেক আগেই লিজ দেওয়া আছে। আমরা সোহেলের নিকট টাকা ফেরত চাইলে টাকা তো দেইনা বরং নানা তালবাহানা শুরু করে। আজ পর্যন্ত আমাদের কাছে থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দেয়নি।
ওমর ফারুক সঙ্গে কথা হলে তিনি জানায়, সোহেল রানা আমাদেরকে এনজিও থেকে টাকা তুলে দেওয়ার কথা বলে কাগজপত্র এবং মোটা অংকের টাকা নিয়েছে। টাকা নিয়ে কাজ করে দিলে তাও হয়। কিন্তু মাসের পর মাস কেটে গেলেও এনজিও থেকে টাকা উত্তোলন করে তো দেয়ই না। তার উপর আমি যে টাকা দিয়েছি সেগুলো ফেরত চাইলেও টাকা না দিয়ে নানা তালবাহানা করে।
অভিযুক্ত সোহেল রানার সঙ্গে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে সকল অভিযোগ আনা হয়েছে তা সত্য নয়। আমি কারো কাছ থেকেই টাকা নেইনি। অনুগ্রহ করে আপনি সংবাদটি প্রচার করবেন না, আমি আপনার সাথে দেখা করবো, আপনাকে চা খাওয়াবো।