ভারত থেকে শুল্ক মুক্ত সুবিধায় ৩,৩২০ মে: টন চাউল আমদানি হলেও স্বস্তি ফিরেনি বাজারে।

জাকির হোসেন, বেনাপোল-শার্শা প্রতিনিধি: ভারত থেকে বেনাপোল বন্দর দিয়ে শুল্কমুক্ত সুবিধায় ৩,৩২০ মেট্রিক টন চাউল আসলেও যশোরের বেনাপোলসহ অন্যান্য বাজার গুলাতে এর কোনো প্রভাব পড়েনি। স্থানীয় বাজারে চাউলের দাম কমেনি, বরং দু’এক টাকা আরো বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আপাতত চাউলের দাম কমার কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। ফলে, কৃষকের ঘরে আমন ধান উঠলেও অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষদের বেশি দামেই চাউল কিনে খেতে হচ্ছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম এমন জায়গায় গেছে যে, ইতিপূর্বে যেসব ক্রেতারা চিকন চাউল কিনতেন তারাও এখন বাধ্য হচ্ছেন মোটা চাউল কিনতে। এক প্রকার জোর করেও অভ্যাস পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছে তাদের।
সরকার ভারত থেকে চাউলে শুল্ক প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর, গত ২৫ দিনে বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ৩,৩২০ মেট্রিক টন চাউল আমদানি হয়েছে বলে জানা যায়। যদিও অনুমোদন দেয়া হয় তিন লাখ ৯২ হাজার মেট্রিক টন চাউল আমদানির। এরপর ১৭ নভেম্বর থেকে আবার চাউল আমদানি শুরু হয়। গত ১২ ডিসেম্বর ছিল আমদানির শেষ দিন।
বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা আবু তাহের সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাহবুবুল আলম ফুড প্রডাক্ট, অর্ক ট্রেডিং, সর্দার এন্টারপ্রাইজসহ আটটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বেনাপোল বন্দর দিয়ে এই চাউল আমদানি করেছে।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১০টা পর্যন্ত সর্বশেষ তিনটি ট্রাকে ১০৫ মেট্রিকটন চাল আমদানি হয়েছে। এ নিয়ে ১৭ নভেম্বর থেকে ১২ ডিসেম্বর রাত ১০টা পর্যন্ত ৯৭টি ভারতীয় ট্রাকে করে ৩,৩২০ মেট্রিক টন চাউল বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
এ পর্বে বেসরকারি ভাবে চাউল আমদানির অনুমতি দেয়া হয় ৯২টি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে। এতে দু’লাখ ৭৩ হাজার মেট্রিকটন সিদ্ধ চাউল এবং এক লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আতপ চাউল আমদানির অনুমতি দেয়া হয়।
অনেক প্রতিষ্ঠান এই স্বল্প সময়ের মধ্যে চাউল আমদানি করতে পারেনি। সরকার মাত্র ২৫ দিন সময় নির্ধারণ করে দেয়, আমদানিকৃত চাউল বাজারজাত করার জন্য। যা গত বৃহস্পতিবারে সময় শেষ হয়ে গেছে।
এদিকে, শুল্কমুক্ত সুবিধায় চাউল বাজারে আসলেও দামের কোনো প্রভাব পড়েনি খোলা বাজারে, বেনাপোল বাহাদুরপুর, নারায়নপুর রোডের বড় বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন। এই বাজারের অন্যতম পাইকারি ব্যবসায়ী মোশারেফ হোসেন জানিয়েছেন। বর্তমানে মোটা চাল ৫৩-৫৫, টাকা, হীরা চাল ৪৮ টাকা, উনপঞ্চাশ চাউল ৫৬ টাকা,আঠাশ চাউল ৬৮-৭০টাকা, মিনিকেট ৬৮-৭০টাকা, তেষট্টি চাউল ৮০- ৮২ টাকা, বাসমতি ৮০-৮৬ ও নাজিরশাইল ৮০ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে। আর খুচরা বাজারে সব ধরনের চাউল বিক্রি হচ্ছে দু’ তিন টাকা বেশিতে। আমন ধানের অর্ধেকের বেশি কাটা হয়ে গেলেও দাম কমেনি বললেই চলে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ভারত থেকে আমদানি করা মোটা চাউল বন্দর থেকে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৩ টাকায়। ঐ চাউল পাইকাররা ৫৪ টাকায় বিক্রি করছেন। আর খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫৬ টাকায়। আর ভারতীয় টেন চাল ৫৮ টাকায় পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।
পাইকাররা বলছেন, বেনাপোল বন্দর দিয়ে হাজার হাজার মেট্রিক টন চাউল আমদানি হলেও বেনাপোল খুচরা ক্রেতারা তার কোনো সুফল পাচ্ছে না। সবমিলিয়ে হতাশার মধ্যে দিন পার করছেন বিভিন্ন পর্যায়ের ভোক্তারা।