ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ প্রশাসকের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি: আওয়ামী ফ্যাসিষ্ট সরকারের মদদ পুষ্ট ময়মনসিংহের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের প্রশাসক জিয়া আহমেদ সুমনের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনে শহীদ ও আহতের পরিবারসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন মানববন্ধন করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে এই মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে
শহীদ সাগরের পিতা আসাদুজ্জামান আসাদ, শহীদ মাহিনের পিতা জামিলুর রহমান, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ময়মনসিংহ জেলার মুখ্য সংগঠক সাজ্জাদ হোসেন সজীব, জেলার সদস্য সচিব, আলী হোসেন ও আঃ আলীম বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা বলেন, বিগত ২০২৪ এর গণআন্দোলনে ময়মনসিংহের ৪১ জন্য শহীদ হয়েছেন। এই ৪১ জন শহীদের পরিবারকে ময়মনসিংহ জেলা পরিষদ থেকে ২ লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এক মাস আগে এই সকল শহীদ পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেওয়ার পরও জেলা পরিষদের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসক এই আর্থিক অনুদান প্রদানে নানা তালবাহানা করে আসছেন। তারা আরো বলেন, এই অনুদান প্রাপ্তিতে বাঁধা কেন তা জানতে চাই প্রশাসনের কাছে। তারা এও বলেন,
ফ্যাসিষ্ট তাড়াঁও। আওয়ামী দোসর খেদাও। আন্দোলনে শহীদ ও আহত পরিবারের মর্যাদা যেকোন মুল্যে রক্ষা করতে তারা বদ্ধ পরিকর বলেও দাবি করেন।
সুত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ চলতি বছরের ২৪ মার্চ তারিখে উপসচিব খন্দকার ফরহাদ আহমদ স্মারক নং ৪৬.০০.০০০০.০০০.০৪২.১৪..০০৯২.২৪(অংশ -১).৪৭৩ মুলে ১৫ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত বাংলাদেশ গেজেটভুক্ত ছাত্র-জনতার জুলাই- আগষ্ট গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এ প্রত্যেক শহীদ পরিবারের অনুকূলে আর্থিক অনুদান প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়। উক্ত নির্দেশে প্রত্যেক শহীদ পরিবারের অনুকূলে জেলা পরিষদের নিজস্ব (রাজস্ব) তহবিল হতে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক অনুদান প্রদানের প্রশাসনিক অনুমোদন সহ নির্দেশ প্রদান
জেলা পরিষদের একটি সুত্রে জানা গেছে, ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান শহীদ পরিবারের সদস্যদের আর্থিক অনুদান প্রদানে মন্ত্রণালয়ের চিঠি প্রাপ্তির পর শহীদ পরিবারের সদস্যদের খোজ খবর নেওয়া সহ তাদের কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে কিছুদিন সময় লাগে। অনেকক্ষেত্রে শহীদ পরিবারের সদস্যদের মাঝে ওয়ারিশান এবং টাকা উত্তোলনে পরিবারের বৈধ মালিকানা নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। এই সকল শহীদ এবং পরিবারগুলোর অনেকেই ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন কর্মব্যস্ততার জন্য অবস্থান করেন। জুলাই আগষ্ট গণঅভ্যুত্থানে তারা বিভিন্ন এলাকায় গণআন্দোলনে অংশ নিয়ে তারা ঐ এলাকায় শহীদ হয়েছেন। তাদের তথ্য এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে যোগাযোগ করতেও সময় লেগেছে।
এ জন্য একটু সময় বেশি লেগেছে। শহীদ পরিবারের সদস্যদের দাবি পারিবারিক সকল জটিলতা নিরসনশেষে অনুদান প্রাপ্তির লক্ষে প্রায় এক মাস আগে ৪১ শহীদ পরিবারের সদস্যরা আবেদন করেছেন। মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত, অনুমোদন এবং নির্দেশনার পরও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসক ও অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার জিয়া আহমেদ সুমনের দায়িত্বহীনতায় আমরা অনুদানের আর্থিক সহায়তা পাচ্ছি না। এই দায়িত্বহীন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও ময়মনসিংহ জেলা পরিষদের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসকের অপসারণ দাবি করছি।
জেলা পরিষদের একটি সুত্র মতে, দীর্ঘ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জেলা পরিষদের দায়িত্ব প্রাপ্ত প্রশাসকের টেবিলে প্রায় শতাধিক ফাইল পরে আছে। এ সকল ফাইলের ঠিকাদারী বিল, প্রকল্পের বরাদ্দের ফাইল পর্যন্ত রয়েছে। যাদের অনেকেই দীর্ঘ দিন নিজেদের অর্থায়নে কাজ শেষ করেও বিল না পেয়ে হন্যে হয়ে ঘুরছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।