খুলনা সাতক্ষীরা মহাসড়কে টিকছে না কার্পেটিং, ঢালাইয়ের উদ্যোগ
মোঃ খলিলুর রহমান,সাতক্ষীরা ::
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অন্যতম ব্যস্ততম খুলনা-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কটি ঢালাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক বিভাগ। ঢাকা থেকে আসা জরিপ দলের পর্যবেক্ষণের পর এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে চায় সংস্থাটি। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সড়কটির অধিকাংশ স্থানে নরম মাটি, সড়ক-পানির স্তর সমান হওয়ায় খোয়া, বালি, পাথর ও পিচের কার্পেটিং টিকবে না বলে মনে হয়েছে।
খুলনা সড়ক বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, খুলনা-চুকনগর-সাতক্ষীরা আঞ্চলিক মহাসড়কের দৈর্ঘ্য ৬৪ কিলোমিটার।
এরমধ্যে নগরীর জিরোপয়েন্ট থেকে ডুমুরিয়ার চুকনগর-আঠারোমাইল পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কিলোমিটার খুলনা জেলার মধ্যে। বাকি অংশ সাতক্ষীরা জেলার। ২০১৮ সালে ওই সড়কের প্রশস্তকরণ ও পুনর্র্নিমাণ কাজ শুরু হয়। খুলনা অংশের ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটিতে সড়কটির প্রশস্ততা ১৮ ফুট থেকে বাড়িয়ে ৩৬ ফুট করা হয়।
তৎকালীন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ‘মোজাহার এন্টারপ্রাইজ’ প্রকল্পটি ২০২০ সালের জুনে শেষ করে। কিন্তু বছর না ঘুরতেই বেহাল হতে শুরু করে দেড়শ’ কোটি টাকা ব্যয়ের সড়কটি। ধীরে ধীরে সড়কটির অবস্থা ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। এ অবস্থায় খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ গেল অর্থবছরে ঢালাই রাস্তার জন্য ২৭ কোটি টাকা বরাদ্দ পেয়েছে।
যা দিয়ে ২ দশমিক ৩৪ কিলোমিটার সড়কে ঢালাই কাজ শুরু হয়েছে। এছাড়া এ মহাসড়কের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৮ কিলোমিটার ঢালাই রাস্তা নির্মাণের জন্য আরো ১০০ কোটি টাকার চাহিদা দিয়ে অধিদপ্তরে চলতি বছর প্রস্তাব পাঠিয়েছে।
খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ সংশিস্নষ্টরা জানান, একসময়ে এ সড়কে প্রতিদিন গড়ে ১০ হাজার যানবাহন চলাচল করলেও সেটি দ্বিগুণ হয়েছে। আবার এ সড়কে সর্বোচ্চ সাড়ে ২২ মেট্রিক টন পণ্য নিয়ে যানবাহন চলার অনুমতি থাকলেও সেখানে ৫০ মেট্রিক টনের ট্রাক চলছে। সর্বশেষ প্রকল্পের কাজও মানসম্মত হয়নি।যার কারণে সড়কের মাঝখানে বেশি ক্ষতি হয়েছে।
সম্প্রতি সড়কটি করণীয় নির্ধারণে ঢাকা থেকে সওজ’র সেফটি সার্কেলের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও রোড ডিজাইন মো. তানভীর সিদ্দিক নেতৃত্বে দু’সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল খুলনায় আসেন। তারা সড়কটির চুকনগর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার পর্যবেক্ষণ করে। তাদের পরীক্ষা-নিরীক্ষায় সড়কটির অধিকাংশ স্থানে নরম (জোব) মাটি, সড়ক-পানির স্তর সমান হওয়ায় খোয়া, বালি, পাথর ও পিচের কার্পেটিং টিকবে না মনে হয়েছে। এছাড়া ওভারলোডিংয়ে সড়কটি নষ্ট হচ্ছে। তাই কার্পেটিংয়ের পরিবর্তে সড়কটি ঢালাই করার পরিকল্পনা করছে সওজ। ইতিমধ্যে ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে খুলনার দপ্তর।
সড়ক বিভাগ খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী তানিমুল হক সাংবাদিকদের জানান, কার্পেটিংয়ের সড়ক নষ্ট হওয়ায় কংক্রিটের ঢালাইয়ের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ২৭ কোটি টাকায় একটি কাজ চলছে। আরো ১০০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে।
এ দিকে বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির কাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন এ সড়কটিতে যাতায়াত করা যাত্রী ও চালকরা। দ্রুত কাজটি শেষ করার দাবিও জানিয়েছেন তারা।





