গোবিন্দবাড়ী সামছুন্নাহার মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রসায় ২১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১৪ জন শিক্ষক
ফারিয়াজ ফাহিম
জামালপুর
জামালপুরের গোবিন্দবাড়ী সামছুন্নাহার মোহাম্মদিয়া মহিলা দাখিল মাদ্রসায় নানা সমস্যা ও সংকটে ঘুরপাক খাচ্ছে। এখানে কর্মরত শিক্ষক রয়েছেন ১৪ জন ও গড় শিক্ষার্থী উপস্থিতি মাত্র ২১ জন। ১৪ জন শিক্ষকের বেতন খাতে ব্যয় মাসে দেড় লক্ষাধিক টাকা। অথচ শিক্ষার্থী সংখ্যা বৃদ্ধির কোন উদ্যোগ নেই কারো। কাগজে কলমে ভর্তিকৃত শিক্ষাথী আছে ২০৬ জন।
বিদ্যালয়ের তিন কিলোমিটারের মধ্যে আরো দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ২১ জন। খাতা কলমে ২০৬ জন ভর্তি শিক্ষার্থী।
স্কুল চালু হওয়ার সময়ে মাত্র ৯ জন শিক্ষিকা উপস্থিত রয়েছেন। পরে স্কুল শুরুর পর অপর শিক্ষক স্কুলে আসলেন। এ বছর শিক্ষা অফিস থেকে ১৪০ সেট বই উত্তোলন করা হয়েছে। অতিরিক্ত উত্তোলিত ১১৯ সেট বই সম্পর্কে শিক্ষকরা কিছুই জানেন না। উত্তোলিত বই শিক্ষা অফিসে ফেরত যায়নি বলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার নিশ্চিত করেন।
বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী এক অভিভাবক জানান, গ্রাম্য কোন্দল থাকায় ও জন্মহার কমে যাওয়ায় শিক্ষার্থী পাওয়া যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের কোন উন্নয়ন নেই ৫ বছর ধরে। সরকারি কোন গ্রান্ড নেই।
আধা কিলোমিটারের মধ্যে নান্দিনা ও খরখরিয়া গ্রামে আরো ২ টি স্কুল রয়েছে। ফলে অভিভাবকরা ঔ দুটো ভাল মানের স্কুলে ছেলেমেয়ে ভর্তি করে।
শিক্ষা অফিসের নজরদারীও কমে গেছে। বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলে ১ জন ছাত্র উপস্থিত আছে। অন্যরা তেমন একটা স্কুলে আসেনা।
মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান বলেন, ১৯ বছর এই মাদ্রাসায় হিসাবে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি। পাশের মাদ্রাসায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী চলে গেছে। আরো একটি ক্লাসে ছাত্র শূন্য হতে চলেছে। বর্তমানে খাতাপত্রে ১ম শ্রেণিতে ১ জন, ২য় শ্রেণিতে ৩ জন, ৫ম শ্রেণিতে ৫ জন, ৩য় শ্রেণিতে আছে ৪ জন, ৯ম সহ মোট ২১ শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। ২১ জনের মধ্যে এক শিক্ষিকার ১ জন সন্তান ভর্তি রয়েছে।
উক্ত বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. ফারুক আদহাম বলেন, শিক্ষার্থী যেমন নেই, তেমনই উন্নয়ন খাতে সরকারি বরাদ্দও নেই। বর্ষা মৌসুমে স্কুলের মাঠ কাদা ও পানিতে নিমজ্জিত থাকে। বিদ্যালয়ের খেলার সরঞ্জাম মেরামত দরকার, কোন অর্থ নেই।
উপজেলা ম্যাধমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন জানান, অপ্রয়োজনীয় শিক্ষক অন্যত্র বদলী করা হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি নীতিমালা অনুসরণ করা হবে। তবে এক বছরের মধ্যে স্কুল উন্নয়নে কোন বরাদ্দ দেয়া হয়নি।
এ ব্যাপারে জামালপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিন্নাত শহীদ পিংকী বলেন, আমি এ ব্যাপার টা আপনাদের তথ্যের মাধ্যমে জানতে পারলাম, খুব দ্রুত তাড়াতাড়ি পরিদর্শনে পাঠাবো আমরা। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।।