ধর্ম অবমাননার অভিযোগে ইবির সনাতনী শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

মিজানুর রহমান, ইবি প্রতিনিধি:
সনাতনী ধর্মগ্রন্থ সম্পর্কে ফেসবুক পোস্টে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের মাধ্যমে ধর্ম অবমাননার অভিযোগ তুলে প্রতিবাদী মানববন্ধন করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুর ১ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আল-হাদিস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম। তবে বিষয়টি ‘তুলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা’ বলে দাবি করেন অভিযুক্ত শিক্ষার্থী।
মানববন্ধন শেষে এ বিষয়ে সনাতনী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি অভিযোগ পত্র জমা দেয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘গত ৫ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টার দিকে আব্দুল মুহাইমিন ইসলাম সনাতনী ধর্মালম্বীদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ শ্রীমদ্ভাগবত গীতা ও আরাধ্য ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সম্পর্কে অত্যন্ত কুরুচিপূর্ণ পোস্ট করা হয়েছে যেটা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়সহ সমগ্র হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত এবং শান্তিপূর্ণ সম্প্রীতি বিনষ্ট ও সহনশীল পরিবেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। ধর্মীয় সহাবস্থান ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বজায় রাখা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি। এই ধরনের অশোভন আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে।’
পত্রে আরও লিখেন, ‘অতএব উক্ত ঘটনার দায়ী ব্যক্তি। ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালার আলোকে প্রয়োজনীয় শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণের এবং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কারের দাবি জানাচ্ছি।’
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতনী শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা প্রতিনিয়ত ধর্ম অবমাননার শিকার হই।আমাদেরও অনুভূতি আছে। আমরা এ ঘটনার যোগ্য বিচার চাইতে মানববন্ধনে হাজির হয়েছি। আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে ব্যবস্থা নেয়া হোক এবং যে এই কাজ করেছে আমরা তার বহিষ্কার চাই। যেন দ্বিতীয়বার কেউ এমনটি করতে সাহস না করে।’
এদিকে অভিযুক্ত শিক্ষার্থী মুহাইমিন বলেন, ‘ এটা ছিল তূলনামূলক বিশ্লেষণধর্মী লেখা। সেখানে রেফারেন্স দিয়ে লেখায় ইনটেনশনালি কোনো ধর্মের অবমাননা করা হয়নি। পোস্ট দেওয়ার পর কারো দৃষ্টিকটু মনে হলে আমাকে বলতে পারতো। আক্রমণাত্মক কমেন্ট দেখে অনিরাপত্তায় ভুগছি। নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করেছি। পরে ডিলিট দিয়েছি। এর পরেও কেউ কষ্ট পেলে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করছি।’
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘আমরা অভিযোগ পত্র হতে পেয়েছি। উভয়ের পত্র নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে। কমিটি সার্বিক বিষয় দেখে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’