সারাদেশ

নগরকান্দায় সরকারি পেঁয়াজ বীজ বপন করে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা কৃষকদের বিক্ষোভ

শিমুল তালুকদার,
সদরপুর, ফরিদপুর থেকে

ফরিদপুরের নগরকান্দায় সরকারি প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ বপন করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পেঁয়াজ চাষিরা। এ কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে ৪ ডিসেম্বর বুধবার সকালে উপজেলা সদরে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জেলার নগরকান্দা উপজেলার কৃষকেরা। চাষিরা বলছেন চলতি মৌসুমে
উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে পাওয়া এসব বীজে গজায়নি অঙ্কুর। এতে উপজেলার প্রায় এক হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ কারনে চলতি মৌসুমে নগরকান্দায় পেঁয়াজের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। এবং এবছর পেয়াঁজ চাষে উৎপাদন খরজ তুলতেই চিন্তিত তাঁরা।

বিক্ষোভ মিছিল শেষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে শহীদ মিনারে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে। সমাবেশে কৃষকদের অভিযোগ, তাদের নিম্নমানের বীজ দিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এ কারনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সরকারি ভাবে ভর্তুকী দেওয়ার দাবি জানান তারা।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে পেঁয়াজ চাষে খ্যাত নগরকান্দা উপজেলায় রবি প্রণোদনা হিসেবে ১ হাজার জন কৃষকের মাঝে ১ কেজি করে বারি-৪ ও তাহেরপুরী জাতের পেঁয়াজের বীজ বিতরণ করা হয়। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বীজের সঙ্গে ১০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি এমওপি সারও দেয়া হয়। প্রণোদনা পাওয়া সব কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) কাছ থেকে এসব বীজ ক্রয় করেন উপজেলা কৃষি দপ্তর। সেই বীজ বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এ জন্য বিএডিসিকে দায়ী করছেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা।

উপজেলার নাগারদীয়া গ্রামের কৃষক রফিক মাতুব্বর বলেন, নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে এক কেজি পেঁয়াজের বীজ দেওয়া হয় তাকে । কিন্তু বপনের ১৫ দিন পরেও অঙ্কুরোগম হয়নি। শুধু আমি নয়, আমাদের এলাকায় যারা প্রণোদনার পেঁয়াজ বীজ বপন করেছিলেন কারও বীজে চারা গজানি। এতে করে সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এ বছর পেঁয়াজের আবাদ নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় আছি।’

শহীদনগর ইউনিয়নের দেলবাড়িয়া গ্রামের পেঁয়াজ চাষী দেলোয়ার মোল্যা বলেন, সরকারি প্রণোদনার পেঁয়াজের বীজ নিয়ে আমি সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম। এখন উচ্চ মূল্যের পিয়াজের বীজ ক্রয় করে পুনরায় বোপন করেছি। এই বীজ তলা তৈরি করে পেঁয়াজ লাগাতে ২০ থেকে ২৫ দিন পিছিয়ে পড়বো। এতে পেঁয়াজ উৎপাদন কম হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তিলোক কুমার ঘোষ সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘বিএডিসি থেকে সরবরাহ করা পেঁয়াজের বীজ কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল। কিন্তু জমিতে বপনের পর বীজ অঙ্কুরোগম হয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশক্রমে বিএডিসির নিকট থেকে এ বীজ ক্রয় করে কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছিল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাফী বিন কবীর বলেন, এমন সংবাদ শুনে ইতিমধ্যে আমি সরজমিনের পরিদর্শন করেছি। তাতে দেখেছি বীজ তলায় বীজ গজায়নি। পরে জেলা প্রশাসক সহ মন্ত্রণালয়ে অবহিত করেছি। এই বীজের মূল্য বিএডিসিকে এখনো পরিশোধ করা হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may also like

সারাদেশ

বদলে যাচ্ছে র‌্যাব: পরিবর্তন হচ্ছে নাম, লোগো ও পোশাক

নতুন রূপে আসছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। এ বাহিনীর নাম, লোগো ও পোশাক পরিবর্তনের পরিকল্পনা করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়,
সারাদেশ

Do You Like Your Playing Style? Try New Kill La Kill

There are many variations of passages of Lorem Ipsum available but the majority have suffered alteration in that some injected