Uncategorized

ফরিদগঞ্জে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে পিতা লাঞ্চিত ॥ এক অসহায় পিতার আর্তনাদ

মো: সোহেল রানা, চাঁদপুর প্রতিনিধি :
যে সন্তান পিতাকে হত্যা করতে আসে সে মানুষ হওয়ার যোগ্যতা হারিয়েছে। যে সমাজে পিতা সন্তানদ্বারা লাঞ্চিত হন, সে ভূমি সামাজ হতে পারেনি। সন্তানের হাতে লাঞ্চিত হয়ে পিতার কান্না দেখেও যে প্রশাসন নিরব থাকে সেটা কখনোই মানবিক প্রশাসন হতে পারেনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসে কুস্তানের গল্প শোনালেন হতবাগা এক পিতা।
মনিরুল ইসলাম (৬৬) অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস অফিসার। ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১৬নং রূপসা দক্ষিন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের উত্তর সাহেবগঞ্জ গ্রামের ছাড়া বাড়ির মরহুম ইয়াকুব আলী গাজীর ছেলে। চাকরির সুবাদে মনিরুল ইসলামের জীবনের অধিকাংশ সময় কাটাতে হয়েছে জন্মস্থানের বাহিরে। চাকরি থেকে অবসর নিয়ে চলে আসেন নিজের বাড়িতে। বাড়িতে এসে তিনি হতবাক হন। স্বপ্ন ছিলো ছেলে এবং নাতিদের নিয়ে বাকী জীবনটা কাটিয়ে দিবেন। কিন্তু তার সে স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হলো। জীবনের অর্জিত সমস্ত টাকা যে সন্তানদের পিছনের খরচ করেছেন সে সন্তানরাই তাকে অপমান অপদস্ত করছে। সন্তানদের অন্যায় কাজের প্রতিবাদ করতে গিয়ে মনিরুল ইসলাম এখন নিজ ঘরে পরবাসী। ৫ পুত্র সন্তানের তিনজনই চুরি, ডাকাতি, মাদক এমনকী সন্ত্রাসী কার্মকান্ডের সাথে জড়িত হয়ে পড়ে। তাদের এসব অনৈতিক কর্মকান্ড থেকে বিরত রাখতে বৃদ্ধ মনিরুল ইসলাম অনেক চেষ্টা করেছেন। কিন্তু সন্তানদের অমানবিক নির্যাতন আর হত্যার হুমকীর ভয়ে তিনি আজ নিজ বাড়িতেই থাকতে পারছেন না।
বৃদ্ধ মনিরুল ইসলাম (৬৬) বলেন, ‘আমার তিন ছেলে মাদকের সাথে জড়িয়ে পড়ে। তারা হলো- ইলিয়াস হোসেন রুবেল (৩৫), সোহেল (৩২), ও মোস্তাফিজ। ইলিয়াস উদ্দিস রুবেল প্রবাসে থাকতো। তাকে ৬ লাখ টাকা খরচ করে বিদেশ পাঠিয়েছি। কিন্তু সে বিদেশ গিয়ে পুরো নষ্ট হয়ে যায়। সেখানে গিয়ে সে খুনের আসামি হয়। সে আত্মস্বীকৃত খুনি। যেভাবেই হোক সে বিদেশ থেকে ফিরে আসে। বাড়িতে এসে সে মাদকের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে পড়ে। আমার কোনো খোঁজ খবর নেয়না। উল্টো আমাকে মানসিক নির্যাতন করে। একাধিকবার আমাকে মারতে আসছে। মেরে ফেলার হুমকী দিচ্ছে। আমি তাকে মাদক থেকে দূরে থাকার জন্য বলি এবং তার এসব কর্মকান্ডের বিরোধীতা করার কারণে আমাকে জবাই করে হত্যার হুমকী দেয়। বিষয়টি আমি আত্মীয়-স্বজনসহ প্রতিবেশীকে জানিয়েছি। বড় ছেলে বাড়িতে একটি ঘর করেছে কিন্তু সে ঘরটি ভেঙ্গে দিয়েছে। বড় ছেলের ঘরের সমস্ত মালামাল সে বিক্রি করে দেয়। সে শালিস মানে না, কাউকে মানে না। সোহেল আর মোস্তাফিজ মিলে তারা বাড়িতে গাঁজা, মদ আর ইয়াবা খায় এবং বিক্রি করে। আমার বাড়িতে সারা রাত মাদক সেবীদের যাতায়াত। সন্ত্রাসী, চোর-ডাকাতের আড্ডাখানায় পরিনত হয়ে গেছে আমার বাড়িটি। আমার ছেলেদের এসব কর্মকান্ডে আমি অতিষ্ট হয়ে এবং তাদের হুমকীর ভয়ে আমি এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এলাকাটিকে তারা নষ্ট করে দিচ্ছে। আমি প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করে আবেদন নিবেদন করার পরও প্রশাসন কোনো কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে না।’
নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এলাকার একাধিক লোক অভিযোগ করে বলেন, ওরা তিন ভাই এলাকাকে মাদকের নরক রাজ্যে পরিণত করেছে। তারা এখানে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। ভয়ে কেউ তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলছে না। তারা তাদের নিজ বাড়িতে বসে ইয়াবা, গাজা বিক্রি করছে। দৈনিক লাখ টাকার মাদক বিক্রি করছে। যেই প্রতিবাদ করে তাকে মেরে ফেলার হুমকী দেয়। তারা তাদের নিজ বাবাকেও ছাড় দেয়নি। নিজের পিতাকে মেরে তারা বাড়ি থেকে বিতাড়িত করে। তারা এলাকায় এতোই রামরাজত্ব কায়েম করেছে যে জনপ্রতিনিধিরা পর্যন্ত ভয়ে কিছু বলছে না। অনেকে অভিযোগ করে বলছেন- ‘প্রশাসনকে বিষয়টি জানানোর পরও তারা রহস্যজনক কারণে কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।’
১৬নং রূপসা উত্তর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) হুমায়ুন জানান, ‘বিষয়টি মৌখিকভাবে আমি জেনেছি। তাদেরই আত্মীয় এসে আমাকে অভিযোগ দিয়েছে কিন্তু ওরা এলাকায় এতোই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী করেছে যে, ভয়েই কেউ মুখ খুলছেনা। আমিও এ বিষয়ে কাজ করতে পারছিনা।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, আমি ইউএনও অথবা ওসি সাহেবকে বিষয়টি জানাইনি।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. শাহ আলম বলেন, বিষয়টি মাত্র জানলাম; আমি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছি।

You may also like

Uncategorized সম্পাদকিয়

সম্পাদকের কথা

There are many variations of passages of Lorem Ipsum available but the majority have suffered alteration in that some injected
Uncategorized

Hello world!

Welcome to WordPress. This is your first post. Edit or delete it, then start writing! Print 🖨