মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী চার নেতা

সাব্বির আহমেদ ,স্টাফ রিপোর্টার পাবনা
পাবনা-৩ (চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী চার নেতা মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। তারা সবাই মাঠ পর্যায়ে বিএনপির ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট বিতরণেল পাশাপাশি মতবিনিময় সভা ও গণসংযোগ চালিয়ে যাচ্ছেন। যোগ দিচ্ছেন সামাজিক নানা অনুষ্ঠানে। মনোনয়ন পেলে এবং এমপি নির্বাচিত হলে বিভিন্ন কাজ করারও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। একইসাথে যোগাযোগ রাখছেন বিএনপির হাইকমান্ডের সাথে। এই চার নেতা হলেন পাবনা-৩ আসনের দুইবারের সাবেক এমপি,বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য,চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি কে এম আনায়ারুল ইসলাম,জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন,চাটমোহর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসাদুল ইসলাম হীরা ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য হাসানুল ইসলাম রাজা। এরমধ্যে কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের বাড়ি পাবনার সুজানগরে। তাকে নাকি দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তারেক রহমান পাবনা-৩ এ কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁকে প্রাথমিক মনোনয়নও দেওয়া হয়েছে বলে প্রচার চলছে। সম্প্রতি পত্রিকার সংবাদে বলা হয়েছে,দল হাসান জাফির তুহিনকে সবুজ সংকেতও দিয়েছে। গত প্রায় ৩ মাস তিনি চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর উপজেলায় চষে বেড়াচ্ছেন। টাঙিয়েছেন বিশাল বিশাল বিলবোর্ড। করছেন সভা-সমাবেশ। চালাচ্ছেন গণসংযোগ। তিন উপজেলা বিএনপির কতিপয় নেতা রয়েছেন তাঁর সাথে। কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ইতোমধ্যে স্বপরিবারে চাটমোহর উপজেলা বিলচলন ইউনিয়নের ভোটার হয়েছেন।
তুহিন ছাড়া বাকি তিনজন মনোনয়নপ্রত্যাশী স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে সোচ্চার। এই তিন প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা হাসান জাফির তুহিনকে বহিরাগত হিসেবে উল্লেখ করে স্থানীয় প্রার্থীর দাবি তুলেছেন। বলছেন এলাকায় জনপ্রিয় ব্যক্তিকে প্রার্থী করার কথা।
সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম দিন-রাত গণসংযোগ করার পাশাপাশি সভা সমাবেশ করছেন। এমপি থাকাকালীন তার উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরছেন। কর্মীদের নিয়ে চষে বেড়াচ্ছেন তিন উপজেলা। কে এম আনেঅয়ারুল ইসলাম বলেন,এলাকার কার জনপ্রিয়তা বেশি,জনসমর্থন কার পক্ষে এটা কেন্দ্র জানে। এলাকার মানুষ ও বিএনপির কর্মী-সমর্থকরা কাকে প্রার্থী চান,তাকে দল মনোনয়ন দিবে বলে তাঁর বিশ্বাস।
সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা প্রতিদিনই গণসংযোগ করছেন,বিতরণ করছেন ৩১ দফা সম্বলিত লিফলেট। তিনি বলছেন,দলের জন্য তিনি জেল খেটেছেন,দুর্দিনে কর্মীদের পাশে থেকেছেন। দলের সকল কর্মসূচি পালন করেছেন। দলকে সংগঠিত করে রেখেছেন। দল তাকেই মনোনয়ন দেবে বলে বিশ্বাস। তাঁর কর্মী-সমর্থকরাও সেই আশায় অপেক্ষা করছেন।
আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য হাসানুল ইসলাম রাজাও স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। দূর্নীতি,দখলবাজ,চাঁদাবাজসহ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি প্রচারণা চালাচ্ছেন।
এদিকে পাবনা-৩ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অধ্যাপক আলী আজগরকে একক প্রার্থী ঘোষনা করেছেন। অধ্যাপক আলী আজগর তিন উপজেলায় গণসংযোগসহ সভা সমাবেশ করছেন। এছাড়া ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে মোঃ আব্দুল খালেন ও খেলাফত মজলিসের প্রার্থী হিসেবে মুফতি মফিজ উদ্দিনের নাম ঘোষনা করেছে দল দুইটি।
পাবনা-৩ আসনে যে দল থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন,সেই দলই ক্ষমতায় যায়-এমন বিশ্বাস রয়েছে এলাকাবাসীর মধ্যে। আসনটি বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। তবে এবার কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন এই আসনে প্রার্থীতা ঘোষনা করায় দলের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মী আর সমর্থকরা এখন ৪ ভাগে বিভক্ত। এই আসনের বৃহৎ উপজেলা চাটমোহরে বিএনপির কোন কমিটি নেই। ফলে অনেকটা নেতৃত্বশুন্য। এ সুযোগে জামায়াতে ইসলামী সাধারণ মানুষের কাছে গিয়ে তাদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টা করছে। এ আসনে এনসিপি,জাতীয় পার্টি কিংবা অন্য কোন দলের প্রার্থীর নাম এখনো শোনা যায়নি। মূলতঃ মাঠ গরম রাখছেন বিএনপির চার নেতাই।