রৌমারীতে মাদক দিয়ে দিনমজুরকে ফাঁসানোর প্রতিবাদে মানববন্ধন
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের রৌমারীতে লাল মিয়ার নামের এক নিরিহ দিনমজুরকে ষড়যন্ত্র করে মাদক ব্যবসীয় বানিয়ে পুলিশের সোর্স সেকেন্দার আলীর মাধ্যমে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর প্রতিবাদে পুলিশের বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। গত বুধবার ৯ জানুয়ারী দিবাগত ভোর রাতে রৌমারী থানা পুলিশ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বড়াইবাড়ি গ্রামের লাল মিয়াকে মাদকসহ আটক করে কুড়িগ্রাম জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে রৌমারীর সদর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড বড়াইবাড়ি গ্রামে।
জানা গেছে, বিপুল সংখ্যক পুলিশ সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডের কাছে ভারত -বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া দিনমজুর লাল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালান। এব্যাপারে লাল মিয়ার ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, হটাৎ রাত আনুমানিক ভোর ৩টা ৩০ মিনিটের সময় আমার শয়ন কক্ষের বাহিরে দরজায় কড়া নেড়ে আমাকে দরজা খুলতে বলে । আমি হতচকিত হয়ে দরজা খুলে দেই। দরজা খুলে দেখি প্রায় ১৫/২০ জন পুলিশ বাহিরে দাড়িয়ে আছে বস্তা হাতে। আমি বাহির হইলে পুলিশ আমাকে আমার বড় ভাই লাল মিয়াকে ডাকতে বলে। আমি ভাবীকে ডেকে দরজা খুলতে বললে ভাবী দরজা খুলে দেয়। দরজা খোলার সংঙ্গে সংঙ্গে পুলিশ মাদকের বস্তাটি ভাইয়ের ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে ঘরে মাদক পাওয়া গেছে বলে আমার ভাই লাল মিয়াকে ধরে রৌমারী থানায় নিয়ে যায়। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গ্রামের নারী পুরুষ সম্মিলিত দিমজুর লাল মিয়ার পক্ষে পুলিশ ও ষড়যন্তকারীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
মানববন্ধনে এলাকাবাসী দাবী করেন, লাল মিয়া একজন অসহায় দিনমজুর। সে কখনো মাদক কান্ডে জরিত নয়। এনিয়ে লাল মিয়ার স্ত্রী’র সাথে কথা বললে তিনি জানান, বিগত কয়েক বছর আগে লাল মিয়ার কন্যা লাভলী খাতুন একই গ্রামের তমছের পুত্র সেকেন্দার আমার মেয়ের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করলে মেয়ে সইতে না পেরে তো আত্মহত্যা করে। যে কারণে সেকেন্দারের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করা হয়েছে। তারই জের ধরে সেকেন্দার প্রতিশোধের নেশায় লাল মিয়াকে ফাসিয়েছে বলে অভিযোগ করেন।
লাল মিয়ার স্ত্রী রোজিনা বেগম আরও বলেন, পুলিশ জোড় করে মদের বস্তা আমার ঘরে ঢুকাতে ধরলে আমি বাধাঁ দেই এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে আমার পায়ে বুট জুতো দিয়ে পাড়া দেয়। পরে ট্রাšক ভেঙ্গে ৫ লাখ টাকা নিয়ে যায়।
এব্যাপারে বড়াই বাড়ি গ্রামের মৃত্যু সোরহাব এর পুত্র আনার আলী বলেন, লাল মিয়া একজন দিনমজুর মানুষ। সে মাদকের সাথে জড়িত নয়। তবে একই গ্রামের তমছেরের পুত্র সেকেন্দার আলী দীর্ঘদিন ধরে কখনো পুলিশ কখনো বিএনপির প্রভাব খাটিয়ে এলাকায় চাদাবাজি করে , মাদকের লিষ্ট থেকে নাম কেটে দেওয়া মাদক দিয়ে ফাসিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছেন তিনি। এলাকাবাসী সেকেন্দরের হাত থেকে মুক্তি চায়।
সাবেক ইউপি সদস্য আসাদ হোসেন হেলাল বলেন, লাল মিয়া একজন অতিশয় গরীব দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষ। তার কখনো মাদকের সাথে সম্পৃক্ততা দেখিনি। এ ঘটনাটি সেকেন্দার কতৃক ষড়যন্ত্র মুলকভাবে ঘটানো হয়েছে।
এব্যাপারে সেকেন্দার আলীর সাথে একাধীকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ লুৎফর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে লাল মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৪১ বতল ভারতীয় মদ পাওয়া গেছে। মাদক দ্রব আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আর সেকেন্দার আলী নামের আমাদের কোনো সোস নেই।